E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের জবাবে চাচাতো বোন তিশাকে খুন করে নিশান

২০২১ মে ০৮ ১৮:৪৭:৪৬
তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের জবাবে চাচাতো বোন তিশাকে খুন করে নিশান

নূরুল আমিন খোকন, ফেনী : তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ব্যবহার করায় চাচাতো বোন তানিশা ইসলাম তিশাকে খুন করা হয় বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে কওমী মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আক্তার হোসেন নিশান ।

শুক্রবার (৭ মে) রাতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় ওই কওমী মাদ্রাসাছাত্র ।

জবানবন্দিতে নিশান বলেন, ছোট বেলায় মারা যায় বাবা, চাচা-জেঠা আর ফুফুসহ আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় চলছিল নিশানের সংসার । প্রতিনিয়ত তাদের প্রতি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ব্যবহার থেকে ক্ষোভ জন্মাতে থাকে তার মধ্যে, এর শোধ নিতেই চাচাতো বোন তিশাকে খুন করা হয় ।

শনিবার (৮ মে) দুপুরে ফেনী জেলা পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী পিপিএম জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, খুব অল্পসময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট দেওয়া হবে ।

আদালতের জবানবন্দিতে নিশান বলেন, তার বাবা জীবিত না থাকায় ও তারা দরিদ্র হওয়ায় চাচার পরিবার তার বাবার সব সম্পদ গ্রাস করে নিয়েছে। নিয়মিত তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতো, একটু সুযোগ পেলেই কটু কথা বা গালমন্দ করা হতো ।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে তার মনে ক্ষোভ জমেছিল। তিশার ভাই মসজিদে ‘ইতেকাফে’ থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মসজিদে ভাত পৌঁছে দিতে বলে, সে ভাত নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে পথে অন্য একজনকে ওই ভাত পৌঁছে দিতে বলে, আবার বাড়ি ফিরে যায়। তখন ঘরে ছিল তিশা ও তার দাদী ।

এ সুযোগে তাদের ঘরে ঢুকে তিশার হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে, টানা-হেঁচড়া করে তাকে ছাদের সিঁড়ি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে একপর্যায়ে তিশার হাত খুলে যায়। আবার হাত-মুখ বেঁধে তাদের রান্না ঘর থেকে ছুরি নিয়ে গলায় কোপানো হয়, পরে ছাদের এক পাশে একটি গাছ বেয়ে নিচে নেমে নিজের ঘরে চলে যায়। কিন্তু সিঁড়িতে তার স্যান্ডেল ফেলে যাওয়ার কথা তখন সে ভুলে যায় ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ইমরান হোসেন জানান, নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও রশি প্যাঁচানো ছিলো। সিঁড়িঘরে মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল নিশানের স্যান্ডেল। বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়, হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ছোরাও উদ্ধার করা হয় ।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করে নিশান, সেসব যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ।

জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিহত তিশার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় ।

ধর্ষণ হযেছে কিনা সেটি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা নিশ্চিত না হলেও ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে ।

এর আগে নিহত তিশার ভাই আশরাফুল ইসলাম ফেনী থানায় মোঃ আক্তার হোসেন নিশান (১৫) সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন ।

(এনকে/এসপি/মে ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test