E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় জেল গেট থেকে জামিন পাওয়া আসামি নিখোঁজ

২০১৪ আগস্ট ৩১ ১৮:২১:৪০
সাতক্ষীরায় জেল গেট থেকে জামিন পাওয়া আসামি নিখোঁজ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : মহাজোট সরকারের আমলে ঝাউডাঙা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন ও জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের রোষানলে পড়ে একটি ডাকাতি মামলায় মামলায় আটক দেখিয়ে জেলে থাকা অবস্থায় আরও ১৬ টি মামলা চাপিয়ে দেওয়া সাতক্ষীরার মহিতোষ হাজরা ছয় বছর পর জেল থেকে বেরিয়েও নিস্তার পায়নি । গত ২৬ আগষ্ট গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে চার ব্যক্তি জেল গেট থেকে মাইক্রোবাসে তাকে  ফের চোখ বেঁধে  তুলে নিয়ে গেছে। 

তবে সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করলেও বিভিন্ন গোপন সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে মহিতোষ হাজরা তাদের হেফাজতেই রয়েছেন। তাকে খুঁজে পেতে তার মা বৃদ্ধা স্বর্ণলতা হাজরা (৬৮) ও বোন ছন্দা এদিক ও দিক ছুটে বেড়াচ্ছেন । গত ২৬ আগষ্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে সকলের সামনেই জেল গেট থেকে তুলে নিয়ে যায় তাকে । পরদিন স্থানীয় কালের চিত্র পত্রিকায় এ ব্যাপারে একটি খবরও প্রকাশিত হয়।

তার পারিবারিক সূত্র জানায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের মৃত ধীরেন্দ্র হাজরার ছেলে মহিতোষকে ২০০৯ সালের ২০ মে পুলিশ কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে । পরে তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় একটির পর একটি মামলা । এসব মামলায় তাকে একে একে গ্রেফতার দেখানো হয় । এর মধ্যে রয়েছে ডাকাতি , চাঁদাবজি, ধানদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান চঞ্চল হত্যা , ফেনসিডিল ও চাঁদাবাজির মামলা।

দ্রুত বিচার আইনের মামলাও ছিল । এ ধরনের ১৭ টি মামলায় চার্জশীট দেওয়া হলেও সব ক’টিতে তিনি জামিন পেয়েছেন । অপরদিকে পাঁচটি মামলায় বেকসুর খালাসও পেয়েছেন তিনি । তার প্রতিবেশি জামায়াত সমর্থক রবিউল , রফিকুল ও শফিকুলের সাথে তাদের পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল । তারা মহিতোষদের ১০ শতক জমি এখনও দখল করে রেখেছে বলে জানান তার মা স্বর্নলতা হাজরা । এই জমি নিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষও হয়েছে তাদের সাথে । এই বিরোধের জেরে এতোসব মামলার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা ।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনায় জামিন পাবার পর গত ২৬ আগষ্ট মহিতোষ হাজরা সাতক্ষীরা কারাগার থেকে বের হতেই আগে থেকে সেখানে অপেক্ষমান গোয়েন্দা পুলিশের চার সদস্যের একটি দল তাকে আটক করে । মুহুর্তেই তাকে একটি সাদা মাইক্রোতে তুলে নিতেই মহিতোষ মা বলে চিৎকার করে ওঠে । এর পরেই তার মুখ চেপে ধরে চোখ বেধে দেওয়া হয় কালো কাপড় দিয়ে । তারপর থেকে গত ছয় দিন যাবত মহিতোষকে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানতে দেওয়া হয়নি । এমনকি তার অবস্থান কোথায় তা জানতে চাওয়া হলেও অস্বীকার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ । সন্ধ্যা ছয়টার দিকে । জেল গেট থেকে তুলে নেওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়দাতাদের একজনের পরনে সাদা শার্ট , একজনের সবুজ রংয়ের শার্ট এবং অন্যজনের লাল নীল গেঞ্জি পরনে ছিল ।

এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক একেএম আজমল হুদা জানান, তিনি ১৫ দিন প্রশিক্ষণে থাকার পর রবিবার দুপুরে যোগদান করেছেন । এ ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই । এ সময় গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শকের চলতি দায়িত্বে থাকা পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন বলেন তারা মহিতোষকে তুলে আনেননি ।

এদিকে একটি অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর থেকে তার পরিবারকে বলা হয়েছে ‘ রাত ৮ টায় সাহেব আসবেন । মহিতোষকে উঠিয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তাও জানিনা । চাইলে তার আগেই আসুন হাজার টাকা নিয়ে । তাহলে আগামিকাল সোমবার বিকালে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে মহিতোষ ’ । টেলিফোনের ও প্রান্ত থেকে টাকার অংক কতো তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ।

(আরকে/এএস/আগস্ট ৩১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test