E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় যানজট নিরসনে বাস ষ্ট্যান্ড ও ট্রাক টার্মিনাল স্থানান্তরের দাবি

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০১ ১৭:০৬:০৫
নওগাঁয় যানজট নিরসনে বাস ষ্ট্যান্ড ও ট্রাক টার্মিনাল স্থানান্তরের দাবি

নওগাঁ প্রতিনিধি : উত্তরের আবাদ উদ্বৃত্ত নওগাঁ জেলা শহরে যানজট সমস্যা ক্রমশ. প্রকট হয়ে  দেখা দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত শহরের চিহিৃত ৩ টি পয়েন্টে লেগে থাকা যানজট সম্পূর্ন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে । এই যানজট নিরসন করতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে নাকাল হতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে জনদুর্ভোগ ক্রমশ. বাড়ছেই।

তদানীন্তন ব্রিটিশ আমলে গড়ে তোলা নওগাঁ মহকুমা শহরটি জেলা শহরে উন্নীত হবার পর শহরের রাস্তার কংক্রিট ঢালাই তুলে পিচ-খোয়ার কার্পেটিং করা হয়েছে। এই কার্পেটিং মাঝে মাঝেই সংস্কার করা হয়। কিন্তু জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নানা ধরনের যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও বাড়ানো হয়নি রাস্তার প্রশস্ততা। এই সরু রাস্তা হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে পুরো রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। একেই সরু রাস্তা, তার ওপর পার-নওগাঁয় ঢাকাগামী বাস ষ্ট্যান্ড, রজাকপুর ট্রাক টার্মিনাল এবং ব্রিজের পশ্চিম মুখে স্বাধীনতা ভাষ্কর্যের সামনে ঢালু এবং সরু রাস্তার ওপর সিএনজি ও চার্জারের অঘোষিত ষ্ট্যান্ড যানজটের অন্যতম প্রধান কারন হিসেবে সকল মহলে চিহিৃত। রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক শক্তির কাছে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ প্রানান্ত চেষ্টা চালিয়ে শুধু গলদঘর্মই হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের কষ্টের লাঘব হয়না।


শহরের পার-নওগাঁ ট্রাফিক বক্সের সামনে থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড় করে রাখা হয় ঢাকাগামী কোচগুলো। নওগাঁ রেষ্ট হাউসের সামনে থেকে ষ্টেডিয়ামের সামনে পর্যন্ত ঢাকাগামী ও বগুড়াগামী বাস ষ্ট্যান্ড। ঢাকাগামী বিশাল বিশাল কোচ ও বগুড়াগামী মিনি বাস গুলো সরু রাস্তার দু’পাশে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড় করে রাখা হয়। যাত্রীও ওঠা-নামা করানো হয় রাস্তার ওপর দাঁড়িয়েই। সব চেয়ে বড় সমস্যা হয়, ঢাকাগামী বিশাল আকৃতির বাস যখন সরু এবং ব্যস্ত সড়কের ওপর ঘুরাতে থাকে। এসময় পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তখন রাস্তার দু’পাশে সৃষ্টি হয় বিশাল যানজটের। শুধু একটি গাড়ি নয়, প্রায় সবসময় একাধিক গাড়ি রাস্তার ওপর ঘুরানোর ফলে যানজটের আর নিরসন হয়না।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে তুলশীগঙ্গা পর্যন্ত ওই সরু রাস্তার দু’পাশে বৃহদাকার ট্রাক সাড়িবদ্ধভাবে দাঁড় করে রাখা হয়। রজাকপুর ট্রাক বন্দোবস্তকারী সমিতির কারণে এসব ট্রাক দিন-রাত পর্যায়ক্রমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। অপরদিকে শহরের ব্রিজের মুখে সরু এবং সম্পূর্ণ ঢালু রাস্তার পাশে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত চার্জারগুলো স্থায়ী ষ্ট্যান্ডের মত দাঁড় করে রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়। এতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। সাধারন পথচারীসহ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকেনা। এখানে কেজি স্কুলের শিশুদের চলাচল বা রাস্তা পারাপার চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় ট্রাফিক পুলিশ মামলা দেয়া ছাড়াও যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়েও রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক অসহযোগীতার কারনে কুলে উঠতে পারছেনা।

জেলার সচেতন মহলের মতে, শহরের যানজট নিরসন করতে হলে সর্ব প্রথম পার-নওগাঁ থেকে ঢাকাগামী ও বগুড়াগামী বাস ষ্ট্যান্ড সরিয়ে বালুডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডে নিতে হবে। সেই সঙ্গে রজাকপুর থেকে ট্রাক টার্মিনাল অন্যত্র সরিয়ে দিতে হবে। আর ব্রিজের পশ্চিম মুখে কোন সিএনজি দাঁড়াতে দেয়া যাবেনা। একই সঙ্গে শহরের রাস্তাঘাট জরুরী ভিত্তিতে চওড়া (ডবলওয়ে) করতে হবে। তা না হলে শহরের রাস্তায় ১ ফুট পর পর পুলিশ দিলেও শুধু যানজটই বাড়বে, যানজট নিরসন হবেনা। শহরের ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, শহরের রাস্তা প্রশস্থ করতে গেলে অনেক স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এমন উদ্যোগ কোন রাজনৈতিক নেতা শুধু তাদের ভোটের ভয়ে নিতে চাননা। শহরের যানজট নিরসন কল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে নওগাঁ শহরকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন নওগাঁবাসী।

(বিএম/এএস/সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test