E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

সাতক্ষীরায় লকডাউন সফল করতে প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি

২০২১ জুন ০৮ ১৬:০১:৪৮
সাতক্ষীরায় লকডাউন সফল করতে প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : লকডাউনের মধ্যে বাড়ছে সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণ। সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৮ জনের মধ্যে ১০৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর গত ২৪ ঘন্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫ জন। 

মৃতরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের মনিরা খাতুন, দেবহাটা উপজেলার বদরতলা গ্রামের শশাংক কুমার সরকার, শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালী দু’সহোদর তোহা কামাল ও সোয়েব খান এবং সদর উপজেলার হাওয়াখালী গ্রামের আবুল হোসেন।

এ নিয়ে জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৩৪ জন। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮ জন। মেডিকেল কলেজ, সদর হাসপাতাল ও হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন চিকিৎসাধীন আছেন ৪৬৫ জন।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, সাতক্ষীরায় করোনা রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই চাঁপ সামলাতে আমরা ব্যবস্থাও নিচ্ছি। ১০৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। তার মধ্যে ২৮ জন করোনা পজিটিভ। ২৮ জনের মধ্যে ২ জন রয়েছেন আইসিইউতে।

সিভিল সার্জন আরও জানান,সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ৩৫টি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জন রয়েছেন করোনা পজিটিভ রোগী। তার মধ্যে একজন রয়েছেন আইসিইউতে ভর্তি। গত ২৪ ঘন্টায় ৫ জন রোগী করোনা সন্দেহে মারা গেছেন। তবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। আর এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯৮৯ জন।

করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়াতে বেড সংকটের কথা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন জানান, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২০ টি বেড রয়েছে। আর সদর হাসপাতালে রয়েছে ৩৫টি বেড। প্রয়োজনে সদর হাসপাতালের ১০০ বেড পুরোটাই করোনা ইউনিটে পরিণত করা হবে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সদর হাসপাতালেও সেন্ট্রাল অক্সিজের ব্যবস্থা অচিরেই চালু করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানকার ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রচুর মানুষ সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে র‌্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট করা হবে। ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয় আইইডিসিআরে। ভারত থেকে সাতক্ষীরায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৩৩৭ জনের মধ্যে ১৭ জন করোনা পজিটিভ ছিল। তাদের জেনেটিক স্যাম্পল পাঠানো হয়েছিল আইইডিসিআরে। তবে সেখান থেকে সরাসরি কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। সুতরাং ধরে নেওয়া যেতে পারে ভারত ফেরত ১৭ জনের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছিলনা। তবে সীমান্ত এলাকাগুলোতে র‌্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্যাম্পল জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হবে।

এদিকে প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যে চলছে সাতক্ষীরায় লকডাউনের চতুর্থ দিন। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের কড়াকড়ি ছিল লক্ষ্য করার মত। বিভিন্ন সড়কের প্রবেশদ্বারে বাশ দিয়ে আটকানো হয়েছে পুরো রাস্তা।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান,সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। সে জন্য লকডাউন সফল করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের বেপরোয়া আচরণ রুখে দিচ্ছে পুলিশ। অপ্রয়োজনে যাতে কেউ ঘরের বাইরে না আসতে পারে, সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বাইরে থেকে যেন কেউ জেলার মধ্যে অবাঁধে না আসতে পারে, তার জন্য জেলার দক্ষিণে দুই প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া জেলার তৃণমুল পর্যায়ে লকডাউন সফল করতে থানা ও ফাড়ির পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত তিনদিনে ৪১ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১৭ট অভিযানে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরায় উদ্বেগজনকভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৪টা জুন মধ্যরাত থেকে ১১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দোকান ও কাচাবাজার ছাড়া সবধরণের মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লকডাউন আরও ১ সপ্তাহ বাড়তে পারে বলে প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

(আরকে/এসপি/জুন ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test