E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরণখোলায় গ্রাম্য ধাত্রির হাতে স্কুল শিক্ষিকা প্রসূতির মৃত্যু

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৮:৫৩:৪৩
শরণখোলায় গ্রাম্য ধাত্রির হাতে স্কুল শিক্ষিকা প্রসূতির মৃত্যু

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খাদা গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রাম্য ধাত্রির হাতে রাশিদা সুলতানা (২৮) নামের এক স্কুল শিক্ষিকা প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জোরজবরদস্তি বাচ্চা প্রসব করাতে গিয়ে রাহিমা বেগম (৪৫) নামের ওই দাই প্রসূতির জরায়ু ছিড়ে ফেলেন। এর ফলে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হলে দুপুর ১২টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হয় বলে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। তবে নবজাতক পুত্র সন্তানটি সুস্থ রয়েছে।

নিহত রাশিদা সুলতানা উপজেলা ২০ নম্বর পূর্ব খাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামীর নাম নাছির উদ্দিন হাওলাদার। রাশিদার প্রথম সন্তান হৃদয় (৯) রায়েন্দা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবছর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার মৃত্যু খবর শুনে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের সহকর্মীকে এক নজ দেখার জন্য ছুঁটে আসেন হাসপাতালে। এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাশিদা সুলতানার প্রসব বেদনা উঠলে প্রবিশী হোসেন তালুকদারের স্ত্রী গ্রাম্য দাই রাহিমা বেগম পরিবারের লোকজনকে জানান, বাচ্চা স্বাভাবিক ভাবে প্রসব হবে, হাসপাতালে নেয়ার দরকার হবেনা। তার পরামর্শে স্বজনরা প্রসূতিকে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরত্বের হাসপাতালে না এনে ওই দাইকে দিয়ে

বাচ্চা প্রসব করান। দাই টানাহেচড়া করে বাচ্চা প্রসব করাতে গিয়ে জরায়ু ছিড়ে ফেললে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। ওই দাই গত বছর রুমা নামের এক প্রসূতির বাচ্চা প্রসব করাতে গিয়ে বাচ্চাটি মেরে ফেলেন বলে জানা গেছে।

জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বাস্থ্যসহকারী বিশ্বজিত জানান, হাসপাতালে আনার পর দ্রুত অক্সিজেন ও স্যালাইন দেয়া হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে প্রসূতি মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার সাহা জানান, হাসপাতাল কাছে থাকতেও শিক্ষিত সচেতনরা কেনো যে হাতুড়ে দাই দিয়ে ডেলিভারী করায় এটা মাথায় খেলেনা। সময় মতো হাসপাতালে আনলে এ দুর্ঘটনা ঘটতো না। দাইকে আটকানোর জন্য থানায় ফোন করা হলে দাই হাসপাতাল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।

নিহতের স্বামী নাছির হাওলাদার ও ভগ্নিপতি সেনা সদস্য সেলিম হাওলাদার দাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। থানার ওসি কাজী আব্দুস ছােেলক জানান, মামলা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(একে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test