E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে ঘর দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাত, রেহাই পাচ্ছেন প্রতারক চক্র!

২০২১ জুলাই ০৫ ১৭:০৪:০৫
টাঙ্গাইলে ঘর দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাত, রেহাই পাচ্ছেন প্রতারক চক্র!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় নারান্দিয়া ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের নাম ভাঙ্গিয়ে ঘর পাইয়ে দেয়ার প্রলোভনে প্রতারণা করে দুস্থ ও অসহায়দের কাছ থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ভূঞাপুর উপজেলার আমূলা গ্রামের ফয়সাল আহমেদ ও কালিহাতী উপজেলার নগরবাড়ী গ্রামের শ্যামল চন্দ্র দাসসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কালিহাতী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেহাব উদ্দিন কালিহাতী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নং-১৪২,তাং-৪ জুলাই ২০২১) করেছেন।

জানা যায়, ফয়সাল ও শ্যামল দরিদ্র অসহায়দের টার্গেট করে স্থানীয় নিমাই চন্দ্র দাস ও পরেশ চন্দ্র দাসের মাধ্যমে দরিদ্রদের আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার প্রলোভনে শতাধিক লোকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সিংগুরিয়া বাজারে সুন্দর-পরিপাটি অফিস বানিয়ে পরেশ ও নিমাই চন্দ্র দাসের মাধ্যমে দরিদ্র অসহায়দের অফিসে ডেকে এনে ঘর পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেয়। পাকা ঘর পাওয়া ও আগে ঘর পাওয়ার লোভে দরিদ্র অসহায়রা অফিসে এসে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করেন। ভূক্তভোগীদের কাছে টানতে তারা একটি পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর প্রতারক চক্র গাঁ ঢাকা দিলেও গোপনে স্থানীয়দের কৌশলে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ এক মাসেও প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের ধারণা রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন প্রতারকরা।

ঘর পাওয়ার আশায় টাকা প্রদানকারী বিলকাচিনার মিন্টু মিয়ার ছেলে হুমায়ুন, আব্দুর রহিমের ছেলে চাঁন মিয়া, আ: কাদেরের ছেলে কামাল হোসেন, শমসের আলী ছেলে আমিনুর, যদুরপাড়ার হাছেন আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ, শামসুল হকের ছেলে হাবিব, তালতলার শরবেশ আলীর ছেলে আলম, সিংগুরিয়ার মতিলালের ছেলে ফোরেন ও সুজন জানান, তারা দরিদ্র অসহায় বিধায় পাকা ঘর তৈরি করার মত প্রয়োজনীয় টাকা তাদের নেই। ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে পাকা ঘর পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফয়সাল, শ্যামল ও নিমাই তাদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। এখন ঘর নির্মাণের জন্য তাগিদ দিলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপন করছে।

সিংগুরিয়া বাজার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল লতিফ সরকার জানান, শ্যামল এ বাজারের একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমি তাকে চিনি। সে অসহায়-গরীবদের সরকারী পাকাঘর পেতে স্থানীয় কতিপয় লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কয়েকদিন আগে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বাজারে আসায় স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। পরে বাজার বণিক সমিতির মাধ্যমে তাদের অফিস ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। বণিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুসারে যাদের নিকট থেকে প্রতারণা করে টাকা নেয়া হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে তাদের টাকা ফেরত দিলে তালা খুলে দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা তানজিল অন্তরা জানান, আমি সিংগুরিয়া বাজার পরিদর্শণে গেলে অনেকেই ফয়সাল ও শ্যামল স্থানীয় কিছু লোকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এমন কথা বলেছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগকারী না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কালিহাতী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

(আরকেপি/এসপি/জুলাই ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test