E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাগরপুরে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার, হুমকিতে দেশীয় মাছ

২০২১ জুলাই ০৮ ১৭:৪২:৪০
নাগরপুরে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার, হুমকিতে দেশীয় মাছ

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : যমুনা- ধলেশ্বরী নদী বেষ্টিত টাঙ্গাইলের নাগরপুরের নিম্নাঞ্চলে ইতিমধ্যে নদ-নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে মাছের প্রজনন মৌসুম। আর মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ কারেন্ট ও বাধাই জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না ম্যাজিক জালের ফাঁদে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় খাল-বিলের জলে, নদ-নদীজুড়ে জেলেরা ব্যবহার করতে শুরু করেছে এই জাল। করোনার কারনে নাগরপুর উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে চায়না ম্যাজিক জালের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা না করায় অবৈধ এ জালের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিলের জলে ও নদ-নদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরনের দেশীয় প্রজাতির মাছ সুক্ষ্ম এই জালে ধরা পড়ছে। 

বিশেষ করে পানি বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বড় বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই সর্বশেষ প্রযুক্তির চায়না জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী, খাল-বিল ও ছোট নদীগুলো।

জানা গেছে, চায়না জাল সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ৬০ থেকে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ক্ষুদ্র ফাঁশ বিশিষ্ট ঢলুক আকৃতির হয়ে থাকে। লোহার ৪টি রড ও রডের রিং দিয়ে খোঁপ খোঁপ আকারে বাক্স তৈরি করে চারপাশ সুক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেড়াও করে তৈরি করা হয়। এই জালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বিলের জলের ও নদীর তলদেশে লম্বালম্বি ভাবে লেগে থাকে। ফলে কোন প্রকার খাদ্য দ্রব্য ছাড়াই দুদিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত মাছের আশায় ঘ্রাণ জাতীয় খাবার দিয়ে থাকে। একটি চায়না জালের দাম মান ভেদে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। উপজেলার সদর বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ধুমছে বিক্রি হচ্ছে এই চায়না ম্যাজিক জাল।

স্থানীয় পেশাদার জেলেরা জানান, চায়না জালে সব ধরণের মাছ ছেঁকে উঠে, সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায়, অহরহ স্থানীয় মৌসুমী মৎস্য শিকারীরা মাছ ধরতে নেমেছে। ফলে আমরা যারা চিরাচরিত কৌশল দিয়ে মাছ ধরতাম তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না জাল কিনেছে, কেউ কেউ আবার কিনতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।

উপজেলার কোণাবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে এই জাল পাতছে। সারারাত পেতে রাখার পর সকালে তুলে আনা হয়। এসময় জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় সব মাছ, বিলে থাকা জলজ প্রানী এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও। এ বিষয়ে ওই এলাকার অনেকেই বলেন এ জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর হয়ত বিলে আর কোনো দেশীয় মাছ পাওয়া যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকারী জেলে জানান, চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা ঠিক না তার পরও জীবিকার তাগিদে মাছ ধরি।

নাগরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাছুম বিল্লাহ বলেন, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। করোনার কারনে আমরা এখনও অভিযান পরিচালনা করতে পারিনি। তবে প্রাথমিকভাবে সকল প্রকার নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে। আমরা সকল প্রকার নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি। এ বছরও আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

(আরএস/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test