E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণের শিকার

২০২১ আগস্ট ০২ ১৪:২৩:৪৮
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণের শিকার

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ফের ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক মাদ্রাসা ছাত্রী। ১ আগস্ট রবিবার ধর্ষিতা বাদী হয়ে ধর্ষক নাজমুল হসানের বিরুদ্ধে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। অভিযুক্ত নাজমুল হাসান (২৪) উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মো. কামাল মিয়ার ছেলে। ধর্ষিতা মাদ্রাসার ছাত্রী (১৯) একই গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে।

ধর্ষণের শিকার ছাত্রী জানান, প্রায় তিন মাস আগে নাজমুল হাসানের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাজমুল হাসান গত ১৭ জুলাই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এরপর থেকে নাজমুল হাসান নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে ওই ছাত্রীকে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী প্রেমিক নাজমুল হাসানকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে নাজমুল হাসান সাড়া না দিলে কোন উপায় না পেয়ে গত ২৯ জুলাই শুক্রবার ওই ছাত্রী বিয়ের আকুতি জানিয়ে প্রেমিক নাজমুল হাসানের বাড়িতে যায়। পরে তার সাথে হওয়া ঘটনা প্রেমিকের পরিবারকে খুলে বললে নাজমুল হাসানের বাবা কামাল মিয়া, মা ফাতেমাসহ দুই বোন চাঁদনী ও তারা ওই ছাত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকে এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠতে থাকে।

ঘটনার পর ওই ছাত্রী কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইদিন চিকিৎসা শেষে গত ১ আগস্ট রোববার কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১। ঘটনার পর থেকে আসামি পলাতক রয়েছে।

এই বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ওসি তদন্ত মো. মিজানুর রহমান বলেন, ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।

এর আগে উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে দরিদ্র এক কৃষক পরিবারের মাদ্রাসা পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী (৮) কে ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসার অভিযোগ উঠেছে শাকিল খাঁন (১৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ধর্ষিতা শিশুর পরিবার র‌্যাবের নিকট অভিযোগ করায় বাড়ি এসে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয় ধর্ষক শাকিলের পরিবারের সদস্যরা।

শিশুর বাবা বলেন, আমার মেয়ে প্রায়ই আমাদের একটি গাভীর দুধ বিক্রি করতে শাকিলের বাড়িতে যেতো। এ সুযোগে শাকিল ভয়ভীতি ও টাকার লোভ দেখিয়ে আমার ৮ বছরের শিশু মেয়েকে ধর্ষণ করতো। বিষয়টি আমরা জানতাম না, হঠাৎ মেয়ের যৌনাঙ্গে সমস্যা দেখা দিলে, আমরা গেঁজ জাতীয় সমস্যা মনে করে ১৯ জুলাই সোমবার বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান, তার ধর্ষণের মতো এমন কিছু হয়ে থাকতে পারে। তখন আমরা মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মেয়ে জানায়, দুধ নিয়ে শাকিলের বাড়িতে গেলে শাকিল তার সাথে প্রায়ই এমন কাজ করে আসছে এবং কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলবে বলে ভয় দেখাতো।

এই ঘটনার পর শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৪ এর একটি টিম গত ২৪ জুলাই শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষক শাকিলকে ধরতে ব্যর্থ হয়। র‌্যাবের অভিযানের কারণে ধর্ষক শাকিলের বাবা হারিছ মিয়া ও বড় চাচা কুদ্দুস মিয়া ধর্ষিতা শিশুর বাড়িতে এসে বিভিন্ন প্রকার হুমকিসহ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ির ফল ভালো হবে না বলে হুশিয়ারি দেয়।

এর আগে গত ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কুলিয়ারচর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পালটিয়া পশ্চিমপাড়া মহল্লার সৈয়দ শাহিন মিয়ার পুকুর থেকে গহনা সজ্জিত অবস্থায় পালটিয়া পূর্বপাড়া মহল্লার মো. লাল চাঁন মিয়ার মেয়ে রাসনা আক্তার (১৩) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, রাসনা আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

এছাড়া গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পূর্ব বড়চারা গ্রামের টেলু মিয়ার ছেলে ফার্নিচার কর্মচারী শামীম (২৫) একই গ্রামের ধনু মিয়ার কন্যা এসএসসি পরীক্ষার্থী মুক্তা আক্তারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এতে গত রমজান মাসে মুক্তা আক্তার অন্তঃসত্ত্বা হলে প্রেমিক শামীম কোরবানির ঈদের পর বিয়ে করবে বলে বাচ্চা নষ্ট না করার জন্য চাপ দেয়। কোরবানির ঈদের পর গত ২৫ জুলাই শনিবার প্রেমিক শামীমের বাড়িতে বিয়ের আকুতি নিয়ে গেলে শামীমের মা সুফিয়া আক্তার ও তার বড় ভাই শাহ আলম মুক্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করে। এই ঘটনা সইতে না পেরে মুক্তা আক্তার লজ্জায় ও ক্ষোভে বাড়িতে গিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। ঘটনার পর যুবতীর বাবা ধনু মিয়া বাদী হয়ে গত ২৭ জুলাই রাতে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

(এস/এসপি/আগস্ট ০২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test