E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আমতলীতে বিশেষ ওএমএস বিতরণে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ

২০২১ আগস্ট ০২ ১৮:১৪:৩৩
আমতলীতে বিশেষ ওএমএস বিতরণে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী পৌরসভার বিশেষ ওএমএস খাদ্য বিতরনে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওজনে কম দেয়ায় এসিল্যান্ড মোঃ নাজমুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এক ডিলারকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়াও খাদ্য বিতরনে নেই সামাজিক দূরত্ব ও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়াই নিচ্ছেন খাদ্য। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় খাদ্য বিতরন  কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে গরীবরা চাল ও আটার সাথে টাকা দিয়ে করোনা কিনছেন। এছাড়াও ওজনে কম দেয়া এবং কালো বাজারে বেশী দামে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। দশ কেজির পরিবর্তে ৯ কেজি ৮’শ গ্রাম দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সুবিধাভোগীরা। দ্রুত এর বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা। 

জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে হতদরিদ্র মানুষের খাদ্যে সঙ্কট লাঘবে সরকার আমতলী পৌরসভায় গত ২৫ জুলাই বিশেষ ওএমএস খাদ্য বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ খাদ্য বিতরনে পৌরসভায় চারজন ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন। প্রত্যেক পরিবার প্রতিদিন ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি আটা নিতে পারবেন। ডিলারদের নির্দেশ রয়েছে প্রতিদিন তিন’শ পরিবারকে এ খাদ্য প্রদান করতে হবে। ওই হিসেবে পৌর শহরে প্রতিদিন এক হাজার ২’শ পরিবার কম মুল্যে খাদ্য পাচ্ছেন। গত ৯ দিনে ১০ হাজার ৮’শ পরিবার কম মুল্যে এ খাদ্য নিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ডিলাররা ওজনে কম দিচ্ছেন। পাঁচ কেজি চালের বিপরীতে দিচ্ছেন ৪ কেজি ৮’শ গ্রাম চাল এবং একই পরিমান আটা দিচ্ছেন।

এতে টাকা দিয়ে কিনতে আসা হত দরিদ্ররা চার’শ গ্রাম খাদ্য কম নিচ্ছেন। খাদ্য ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে খাদ্য গুদাম এলাকার ডিলার আনিসুর রহমানকে এসিল্যান্ড মোঃ নাজমুল ইসলাম ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অভিযোগ রয়েছে ডিলাররা উপকারভোগীদের খাদ্য না দিয়ে বেশী দামে কালো বাজারে বিক্রি করছেন। এদিকে ওএমএস চাল বিতরন কার্যক্রমে সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়া ঠাসাঠাসি করে লাইনে দাড়িয়ে উপকারভোগীরা খাদ্য নিচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় ওএমএস বিতরন কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। এতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামণ দ্রুত ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা করেছে সচেতন নাগরিকরা।

সোমবার দুপুরে পৌর শহরের খাদ্য গুদাম, আখড়া বাড়ী, একে স্কুল চৌরাস্তা ও ছুরিকাটা এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে মাস্ক ছাড়া লাইনে দাড়িয়ে খাদ্য নিতে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় ওএমএস খাদ্য বিতরন কর্তপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। আখড়া বাড়ীর সামনে ডিলার শাহজাহান মিয়া ওজনে কম দিচ্ছেন। ৫ কেজির চালের পরিবর্তে দিচ্ছেন ৪ কেজি ৮’শ গ্রাম। একই পরিমানে আটা দিচ্ছেন।

উপকারভোগী শাহিনা বেগম, আলেয়া, রুমা ও কল্পনা বলেন, বেইন্নাহালে চাউলের লইগ্যা বইয়্যা রইছি এহোন পোর্যন্ত পাইনাই। কোন সোমায় পাই কইতে পারি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপকারভোগী বলেন, খাদ্য ওজনে কম দিচ্ছে। ১০ কেজি খাদ্যে চাল আটা মিলে ৪’শ গ্রাম কম দিচ্ছেন। ডিলাররা প্রভাবশালী হওয়ায় এর প্রতিবাদ করা যাচ্ছে না।

ডিলার শাহজাহান মিয়া চাল ওজনে কম দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, নিয়মমাফিক খাদ্য বিতরন করা হচ্ছে।

ডিলার আনিসুর রহমান ও বশির উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনেই খাদ্য বিতরন করছি। কিন্তু মানুষ নিয়ন্ত্রন করা খুবই কষ্টসাধ্য। খাদ্য নিয়ন্ত্রন অফিস ও প্রশাসনের লোকজন তদারকি করলে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা যেত।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা সমির কুমার রায় খাদ্য ওজনে চাল কম দেয়ার ও কালো বাজারে বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় চেষ্টা করেও পারছি না। মানুষ প্রচন্ড ভীড় করে দাড়িয়ে থাকেন।

আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, বিশেষ ্ওএমএস চাল সঠিকভাবে বিতরন কার্যক্রমে কঠোর নজরদারী রয়েছে। খাদ্য ওজনে কম দেয়ায় এক ডিলারকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চাল বিতরনে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, মাস্ক পরিহিত ছাড়া কাউকে চাল দেয়া যাবে না।

(এন/এসপি/আগস্ট ০২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test