E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আদালতে পাঠানো ১৬১ ধারার জবানবন্দি অস্বীকার করলেন দুই সাক্ষী

২০২১ আগস্ট ০৭ ১৮:৫৬:০৯
আদালতে পাঠানো ১৬১ ধারার জবানবন্দি অস্বীকার করলেন দুই সাক্ষী

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জবানবন্দি বহির্ভুত দুই জনের বক্তব্য ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করে নিরপেক্ষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার সহকারি উপপরিদর্শক তরুন অধিকারীর বিরুদ্ধে। একইসাথে মানিত সাক্ষীর চার আত্মীয়কেও এ মামলায় নিরপেক্ষ সাক্ষী করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বাদিপক্ষের কাছ থেকে প্রভাবিত হওয়ার।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, চলতি বছরের ১৬ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের কুমারখালি সার্বজনীন কালীমন্দিরে দুর্গাপুজা ও নামযঞ্জ অনুষ্ঠানের খরচের হিসাব নিকাশ নিয়ে এক আলোচনা সভা হয়। ওই সভা চলাকালে মিলন তরফদারের দায়েরকৃত একটি নারী শিশু মামলা নিয়ে কথা ওঠে। একপর্যায়ে একই গ্রামের আনন্দ মিস্ত্রী ও মিলন তরফদারসহ কয়েকজন রণজিৎ মল্লিক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডলসহ কয়েকজনকে মারিপট করে। তাৎক্ষণিক রণজিৎ মল্লিক কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরদিন রণজিৎ মল্লিক থানায় এজাহার দেওয়ায় মিলন তরফদারও রণজিৎ মল্লিকসহ কয়েকজনের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন মর্মে ১৭ মে একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।

থানা মামলা না নেওয়ায় রণজিৎ মল্লিক আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর কয়েকদিন পর মিলন তরফদার ওই মামলার বাদি রণজিৎ মল্লিক ও অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডলের বিরুদ্ধে আদালতে পাল্টা মামলা(সিআর-২১৫/২১) করেন। মিলন তরফদারের দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সহকারি উপপরিদর্শক তরুণ অধিকারীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডল নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানান। রণজিৎ মল্লিকের মামলায় ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন উপপরিদর্শক হাসানুজ্জামান। অপরদিকে মিলন তরফদারের দায়েরকৃত মামলার (সিআর-২১৫/২১) তদন্ত প্রতিবেদন ৩২৩, ৫০৬(২) ধারায় গত ৩১ জুলাই আদালতে পাঠান সহকারি উপপরিদর্শক তরুন অধিকারী।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিলন তরফদারের মামলায় চারজনকে সাক্ষী করা হলেও তদন্তকারি কর্মকর্তা মানিত সাক্ষী রামকৃষ্ণ তরফদারের সহোদর দীনবন্ধু তরফদার, আনন্দ মিস্ত্রীর কাকা তারক মিস্ত্রী, বিমল মিস্ত্রী, আনন্দ মিস্ত্রীর কাকাত ভাই টুটুল মিস্ত্রী ছাড়াও প্রহ্লাদ বর ও নিতাই বরকে নিরপেক্ষ সাক্ষী উল্লেখ করে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি আদালতে পাঠিয়েছেন।

সম্প্রতি আদালতে পৃথক হলফনামা ও এফিডেফিডে প্রহ্লাদ বর ও নিতাই বর উল্লেখ করেছেন যে, তদন্তকারি কর্মকর্তা তাদের পক্ষে মনগড়া বক্তব্য লিখে আদালতে পাঠিয়েছেন। জবানবন্দি পড়ে তারা সাক্ষর করতে চাইলে তিনি সাক্ষর নেননি।

তবে সাধারণ ডায়েরী ছাড়া এ ধরণের সিআর মামলার তদন্তভার একজন সহকারি উপপরিদর্শকের উপর ন্যস্ত করা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত একজন সহকারি পুলিশ সুপার।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার সহকারি উপপরিদর্শক তরুণ অধিকারী বলেন, অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডলের চিঠি পাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে কয়েকবার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। সর্বপরি ঘটনার তদন্ত চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদে যেয়ে সাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়েছেন। তবে ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে প্রহ্লাদ ও নিতাই যে জবানবন্দি দিয়েছে তাই তিনি লিখে পাঠিয়েছেন। নিরপেক্ষ সাক্ষী চারজন মানিত সাক্ষীদের আত্মীয় হলেও তারা ঘটনাস্থলে থাকায় তাদেরকে সাক্ষী করা হয়েছে। কারো কাছ থেকে কোন টাকা চাওয়া বা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test