E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

টাঙ্গাইলে মোবাইল ফোনের বাক্সের সূত্রে ধর্ষণ ও হত্যা রহস্য উদঘাটন

২০২১ আগস্ট ০৮ ১৬:৫৮:২০
টাঙ্গাইলে মোবাইল ফোনের বাক্সের সূত্রে ধর্ষণ ও হত্যা রহস্য উদঘাটন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলে মোবাইল ফোনের পরিত্যক্ত একটি বাক্সের সূত্র ধরে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রবিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল পিবিআই কার্যালয়ে জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন ভূঞাপুরে অজ্ঞাত যুবতীর পরিচয় উদ্ধার ও মামলায় জড়িত চার ব্যক্তির গ্রেপ্তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে বীরভরুয়া নামকস্থান থেকে গত ৩ আগস্ট এক অজ্ঞাত যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় না পেয়ে মরদেহটি বেওয়ারিশ হিসেবে স্থানীয় ছাব্বিশা গোরস্থানে দাফন করা হয়। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে টাঙ্গাইলের পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে গত ৫ আগস্ট মামলাটির দায়িত্ব নেয়। ওইদিনই পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীর নেতৃত্ব পিবিআইয়ের একটি চৌকশ টিম গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। বিভিন্ন সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের ইসপিনজারপুর গ্রামে মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মো. মিজানুর রহমানের ভাড়া বাড়িতে যোগাযোগ করেন। তদন্ত টিম মো. মিজানুরকে কৌশলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে তার ঘরে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনের পরিত্যক্ত একটি বাক্স কুড়িয়ে পায়। বাক্সটিতে দুটি মোবাইল ফোনের ভাঙা অংশ ছিল। পরে ওই বাক্সের গায়ে লেখা আইএমই নম্বরের সূত্র ধরে অজ্ঞাত যুবতীর বাবা গোপালপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের মো. খোকন মন্ডলের সন্ধান পান। ছবি ও পড়নের কাপড় দেখে মো. খোকন মন্ডল অজ্ঞাত ওই যুবতী তার মেয়ে খোদেজা খাতুন বলে শনাক্ত করেন। মো. খোন মন্ডল পুলিশকে জানান, তার মেয়ে খোদেজা খাতুন গত ২ আগস্ট তার নানিবাড়ি একই উপজেলার মনতলা থেকে বাড়ি আসার পথে নিখোঁজ হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন জানান, অজ্ঞাত যুবতীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তদন্ত কাজ দ্রুত এগুতে থাকে। পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীর তদন্ত টিম তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে সোর্সের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষার্থী খোদেজা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক প্রেমিক সহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, গোপালপুর উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের স্বর্গীয় নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে ঘাতক প্রেমিক কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ওরফে সানি আহাম্মেদ (২৮), ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিনজারপুর গ্রামের মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে সৌরভ আহাম্মেদ হৃদয় (২৩), একই উপজেলার কেরামজানী গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. মেহেদী হাসান টিটু (২৮) এবং একই উপজেলার ইসপিনজারপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মো. মিজানুর রহমান(৩৭)। গ্রেপ্তারকৃতদের রোববার দুপুরে ৩ দিনের করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ওরফে সানি আহাম্মেদ পুলিশকে জানায়, পেশায় তিনি একজন নরসুন্দর(নাপিত)। মোবাইল ফোনে মিস কলের মাধ্যমে খোদেজা খাতুনের সাথে তার পরিচয় হয়। তিনি মুসলিম নাম সানি আহাম্মেদ ধারণ করে খোদেজার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরে দেখা করার কথা বলে ডেকে এনে তার বন্ধু সৌরভের মোটরসাইকেলে ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিনজারপুর গ্রামে অপর বন্ধু মো. মিজানুর রহমানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে খোদেজা খাতুনকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কৃষ্ণ চন্দ্র দাস একাধিকবার ধর্ষণ করেন। চিৎকার-চেঁচামেচিঁ করায় ঘরে থাকা গামছা গলায় পেঁচিয়ে তারা চার বন্ধু মিলে খোদেজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশটি বস্তাবন্দি করে একটি ভাড়াকৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে বীরভরুয়া নামকস্থানে ফেলে রাখে। এরআগে তারা খোদেজার ওড়না ও ভ্যানিটিব্যাগ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test