E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে মরা গাছ, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

২০২১ আগস্ট ১১ ১৭:৩৫:৪৫
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে মরা গাছ, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘিতে রাস্তার দুইপাশের অর্ধ শতাধিক মরা গাছ এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। সামান্য ঝড়বৃষ্টি বা দমকা বাতাসে গাছের ডাল এমনকি গাছও ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে রাস্তার পাশে এসব মরা গাছগুলো দাঁড়িয়ে থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে চলছে পথচারী ও যানবাহন। যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো ঘটনাও। তাই বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ মরা গাছগুলো জরুরিভাবে অপসারণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, ২০০৪ সালে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের তিনমাথা মোড় হতে সাইলো পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের প্রায় দেড় কিলেমিটার রাস্তায় বনবিভাগের শিশু, কড়ই এবং আকাশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৫ শতাধিক গাছের চারা লাগানো হয়েছিল। তখন থেকে স্থানীয় লোকদের দেখভালের মাধ্যমে আস্তে আস্তে গাছগুলো বড় হতে লাগে। ১৭ বছরে এই গাছগুলো অনেক বড় হয়। গত কয়েক বছর ধরে শতাধিক গাছের বিভিন্ন রোগে পাতা ঝড়ে মরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। আবার সুযোগ মতো কোন এক চক্র রাতের আঁধারে আস্তে আস্তে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এখন কমতে কমতে অর্ধ শতাধিকে পরিণত হয়েছে। এছাড়া ঘুণ পোকা বাসা বেঁধেছে এসব মরা গাছগুলোতে। অতিমাত্রায় গাছের গোড়ায় পচন ধরে কিছু কিছু অংশ খসে পড়ছে। ফলে ঝড়-বাতাস বৃষ্টি শুরু হলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে এলাকাতে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই রাস্তা দিয়ে দমদমা, প্রসাদখালী, কদমা-করজবাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। কয়েকটি গ্রামের লোকজন যাতায়াত করায় ব্যস্ততম হয়ে পড়েছে এই রাস্তাটি। তাছাড়া কয়েকটি গ্রামের মানুষের শহরে যাওয়ার প্রধান রাস্তায় হলো এই দমদমার রাস্তা। মরা গাছের কারণে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয় এই রাস্তায় চলাচল করা লোকজনদের। শুধু তাই নয় মাঝে মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি হলে মরা গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে থাকে রাস্তার উপরে। রাস্তার দুইপাশে মরা গাছগুলোর ডাল ও পাতা নেই। মরে শুকিয়ে আছে। কোন গাছ আবার রাস্তার উপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে হেলে গেছে। কেউ আবার জীবিত বা মরা গাছের ডাল কেটে নিয়ে জ্বালানি কাঠ হিসাবে বিক্রি করছে। আবার রাস্তার পাশে মরা গাছ পড়ে থাকতে দেখা গেলেও কয়েকদিন পর সেটাও উধাও হয়ে যায়। যেন দেখার কেউ নেই। গাছগুলোর এমন পরিস্থিতি হওয়া সত্বেও নজরদারী নেই কর্তৃপক্ষের। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।

দমদমা গ্রামের হারুনুর রশীদ জানান, গত ১ বছর আগে ঝড়-বৃষ্টির সময় চার্জার ভ্যান চালিয়ে সান্তাহার থেকে দমদমা আসতেছিলাম। রাস্তার উপর মরা গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে ছিল বুঝতে পারিনি। সেই ডালের সঙ্গে লেগে আমার ১টি পা ভেঙ্গে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে ভাঙা পায়ে এখন রড নিয়ে কষ্ট করে জীবন যাপন করছি। আমার মতো আর কেউ যেন ওই সকল মরা গাছের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

দমদমা গ্রামের মেম্বার মারুফ-উল হাসান খান শিপলু জানান, প্রতিনিয়ত এ রাস্তা দিয়ে শতশত লোক চলাচল করে। রাস্তার দুইপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে। যেকোন সময় পথচারীদের উপর গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পথচারীদের সুবিধার্থে জরুরিভাবে এসব গাছগুলো কাঁটার প্রয়োজন বলে মনে করি।

বগুড়া সামাজিক বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, বন বিভাগের যদি মরা গাছ থাকে অবশ্যই এগুলো টেন্ডার দিয়ে অপসারণ করা হবে। ওই এলাকার দায়িত্বে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডঃ আব্দুল আওয়াল আছেন। আমি উনাকে বলবো একটা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

(এস/এসপি/আগস্ট ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test