E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কালিয়াকৈরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জনজীবন

২০২১ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৩:০০:১০
কালিয়াকৈরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জনজীবন

ইন্দ্রজিৎ কুমার সাহা, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রচন্ড তাপমাত্রা, অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘনঘন আসা যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় জনজীবন। সরকারের হিসাব মতে দেশে কোনো বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের অব্যাহত যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে কালিয়াকৈর বাসীর জনজীবন। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সময়-অসময়ে দেখা দিচ্ছে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাজানো ও কথিত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লাইনে ক্রুটি। বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে সাধারণ মানুষকে দুঃসহ গরমে দিন-রাতই পোহাতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের তীব্র যন্ত্রনা।

ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা অনেকটায় স্বাভাবিক। সামান্য বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ থাকেনা। সেটিও অনেকের কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু বর্তমানে বিনা অজুহাতে বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। না ঝড় না বৃষ্টি। তবু ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।

এ অবস্থা শুরু হয়েছে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কালিয়াকৈর জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন অফিসের আওতাধীন এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে কালিয়াকৈর জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসিনতার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

শিল্পাঞ্চল খ্যাত কালিয়াকৈর উপজেলায় বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে নানান নাটকীয়তা। যখন সামান্য বৃষ্টি নামে তখন থাকে না বিদ্যুৎ। কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয় বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে লাইন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তবে ভালো দিনেও বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা আরো বেশি ভাবিয়ে তুলেছে এলাকাবাসীকে। এখন নিয়মিত লুকোচুরি খেলছে এ অঞ্চলের পল্লীবিদ্যুৎ। বারবার আসা-যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হচ্ছে কালিয়াকৈরবাসী। একদিকে যখন বিদ্যুৎ থাকে না এমন সময় বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসিয়াল নাম্বারে ফোন করেও ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায় অথবা অটো ম্যাসেজ অপসন থেকে ব্যস্ত আছি লেখা ম্যাসেজ আসে।

কালিয়াকৈরের রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘সারাদিন কাজ করে এসে যখন রাতে একটু ঘুমাতে যাই,তখনই হঠাৎ করে রাতের বেলা রুটিন করে বিদ্যুৎ চলে যায় আর কোন খবর থাকেনা।বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে তারা বলে সমস্যাটি সাময়িক পরবর্তীতে এরকম সমস্যা আর হবেনা।’

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইমাম হোসেন বলেন, ৫ বছর যাবৎ কালিয়াকৈর পৌরশহরে এ সমস্যার সম্মুক্ষিন হচ্ছি জানিনা কবে মিলবে মুক্তি।

এরকম আরো অনেকের অভিযোগ রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে।সকলেই অতি দ্রুততম সময়ে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উপজেলার হরিণহাটি এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শুভ করিম ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, কালিয়াকৈর উপজেলায় এখন চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে শুনেছি। তারপরও প্রতিদিন বার বার লোডশেডিং হয়, নিস্তার মিলে না রাতের বেলায়ও। বৃষ্টি, ঝড় কিংবা ভালোদিনেও সমানতালে চলে লোডশেডিং। আর এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০ মেগাওয়াট। কালিয়াকৈরে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের সময় কালিয়াকৈরে বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়ায় ১৫০ মেগাওয়াটের ওপরে। আর এই চাহিদা পুরণ করতে পারছে না পল্লীবিদ্যুতের জোনাল অফিসগুলো। পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা দাবি করছেন কালিয়াকৈরে সেভাবে কোনো লোডশেডিং নেই।

এবিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন জানান, লাইনে সমস্যা হলে এবং গ্রীডে সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এছাড়া বর্তমানে কালিয়াকৈরে কোনো ধরনের লোডশেডিং নাই।

কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী কামাল হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকায় লাইন মেরামতের কাজ করা হলে তখন ওই এলাকার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখা হয়। এটাকে লোডশেডিং বলা যায় না।

(আই/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test