E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দরে নিয়োগ নিয়ে প্রতারণা !

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১০ ১৮:১৯:০২
কলাপাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দরে নিয়োগ নিয়ে প্রতারণা !

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় চাকুরী দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এ প্রতারণা করলেও বুধবার সকালে প্রতারণার শিকার ১৬ জন যুবক পায়রা বন্দরে চাকুরীতে যোগদান করতে এসে জানতে পারেন গোটা নিয়োগ পক্রিয়াটিই ভূয়া। চাকুরী দেয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে নেয়া একটি চক্র  ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এ ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বের হয়ে আসে বেকার যুবকদের কাছ থেকে এ প্রতারক চক্রের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল। প্রতারণার শিকার চাকুরী প্রার্থীরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের ধারনা শতশত মানুষের কাছ থেকে এ চক্রটি এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাত্র এক সপ্তাহের মিশনে এ লাখলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। বিজ্ঞপ্তিতে (সি: ২৫৫১০/১৪) উল্লেখ করা হয়, পায়রা বন্দরে ইনচার্জ পদে পাঁচজন, অফিস সহকারী পদে ১০ জর এবং লেবার পদে ৩০ জনকে নিয়োগ করা হবে। আগ্রহীদের যোগাযোগ করার জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে মোবাইল নম্বর এবং এই ই-মেইল ঠিকানা দেয়া হয়।

প্রতারনার শিকার যুবক রাহুল চন্দ্র দাস খোকন জানান, সে ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে তাকে এই ০১৭৯ ৫০৮ ১২৯৪ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়। এই নম্বরে কল করলে জনৈক খন্দকার সালাউদ্দিন ফোন রিসিভ করে। এবং তার চাকুরীর নিশ্চয়তা দিয়ে ১৪ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে। এবং এ টাকার কথা কাউকে না জানানোর কথা বলে। সে তাদের চাহিদা মতো টাকা বিকাশ করার পর তাকে একটি নিয়োগপত্র দেয়া হয। একইভাবে অন্যদের কাছ থেকে ১ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয়। প্রথম দফায় ১৬ জন বুধবার পায়রা বন্দরে কাজে যোগদান করতে এসে জানতে পারে তারা প্রতারনার শিকার হয়েছেন।

এরা হলেন নিহার রঞ্জন, সমীরন রায়, অমিত কুমার তালুকদার, সোহেল মিয়া, জুরান দেউরী, শুভ মিস্ত্রি, প্রিন্স সরদার, রেজাউল করিম, বিপুল চন্দ্র সরদার, সুমন বালা, সঞ্জয় কুমার মিস্ত্রি, সঞ্জয় মৃধা, নুপুর তালুকদার, আবুল বাসার, বিপুল চন্দ্র সরদার, রাহুল চন্দ্র দাস খোকন ও মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার।

এদিকে পায়রা বন্দরে চাকুরীর নামে প্রতারনার কথা ছড়িয়ে পড়লে একাধিক যুবক অভিযোগ করেন তাদের কাছ থেকেও এভাবে টাকা নেয়া হয়েছে এবং নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এভাবে সারাদেশের শতশত বেকার যুবকদের কাছ থেকে চাকুরী নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি। আমতলীর আনিস রহমান জানান, তার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা নিয়েছে। একই কথা বলেন বরগুনার আনিসুর রহমান।

প্রতারণার শিকার বিপ্লব চন্দ্র সরদার পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্টে অনার্স পাস করে ইনচার্জ পদে আবেদন করেছিলেন। এটাই তার প্রথম চাকুরীর আবেদন। এজন্য তার কাছ থেকে নেয়া হয় ১৪ হাজার টাকা। আজ কাজে যোগদান করতে এসে জানতে পারেন গোটা প্রক্রিয়াটি একটি প্রতারক চক্রের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফাঁদ। তাদের কে দেয়া নিয়োগপত্রটিও ভূয়া। সে জানান এভাবে অনেকের কাছ থেকে ওই চক্রটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে পায়রা সমুদ্র বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান সাংবাদিককের জানান, এটি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের কাজ। পায়রা বন্দরে নিয়োগ দেয়া হলে প্রতিষ্ঠানের লোগো সমবলিত বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় দেয়া ৩ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তিটি তারা পরের দিন দেখেছেন।

৫ সেপ্টেম্বর একই পত্রিকায় বিজ্ঞাপনটি ভূয়া চিহ্নিত করে প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হয়েছে। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ আমাদের নিশ্চিত করেছে বিজ্ঞপ্তি টি ঢাকার উত্তারার বিজ্ঞাপন বুথ থেকে দেয়া হয়েছে। প্রতারনার সাথে জড়িতদের ফোন নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা র‌্যাব ও গোয়েন্দা বিভাগে দেয়া হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় পায়রা বন্দরের ভুয়া নিয়োগ বানিজ্যে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্তকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/এএস/সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test