E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু

২০২১ সেপ্টেম্বর ১২ ১৬:১৩:২২
টাঙ্গাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমায় দেড় বছর পর রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সরকারি নির্দেশনায় সারাদেশের মতো শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে স্বশরীরে পাঠদান শুরু করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শরীরের তাপমাত্রা মাপার পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে স্যানিটাইজার ব্যবহার করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করানো হয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর আগে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় বেশ কিছু স্কুলে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছেনা। সেসব স্কুলের আশপাশের বাড়ির উঠান ও বসত ঘরে কোন রকমে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম এখনও প্রায় তিন ফুট পানির নিচে। তাই পাশের বাড়ির উঠান ও বসত ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুসনেআরা আক্তার পপি জানান, তার স্কুলে ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলটি পানির নিচে থাকায় এবং চলাচলের রাস্তায় পানি থাকায় সব শিক্ষার্থী স্কুলে আসেনি। তবে ৭০-৭২ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হয়।

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. তাহমিনা বেগম জানান, শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

সহকারী সিনিয়র শিক্ষক খ. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি শতকরা ৯৫ ভাগ। সরকারি নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন ভাগে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সবার পরিবারের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তাদের বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পরিবার করোনামুক্ত বলেও জানান তিনি।

জেলা শিক্ষা অফিস জানায়, রোববার টাঙ্গাইলে দুই হাজার ৪২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফুলসহ নানা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাস্কসহ করোনা প্রতিরোধক সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মাস্ক পড়াসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন কঠোরভাবে নজরদারীতে রেখেছেন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা। সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করছেন।

এদিকে, বন্যা কবলিত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বিরত রাখা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করা হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, টাঙ্গাইলের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষে সশরীরে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। বাসাইলের রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন একতলা। তাই বন্যার কারণে মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় পাশের বাড়ির উঠানে ক্লাস নেওয়া হয়। বন্যার পানি প্রবেশ করা অন্য সব স্কুল ভবন বহুতল হওয়ায় বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষেই ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম জানান, সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও রোববার শ্রেণি কক্ষে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। তবে পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করায় পাঠদানযোগ্য নয়। বিকল্প ব্যবস্থায় সেসব স্কুলে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর স্কুলে ক্লাস করার সুযোগ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

(আরকেপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test