E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মধুমতির ভাঙনের মুখে লোহাগড়ার ৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 

২০২১ সেপ্টেম্বর ১৯ ১৫:০২:০০
মধুমতির ভাঙনের মুখে লোহাগড়ার ৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 

রূপকমুখার্জি, লোহগড়া (নড়াইল) : নড়াইলের লোহাগড়ার মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৪৫ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ে দুটি একতলা ভবন ও একটি টিনশেড ঘর রয়েছে। পূর্ব দিকে একতলা ভবনের একটি কক্ষ নদীর সঙ্গে মিশে আছে। সেখানে নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ছে। বিশাল খেলার মাঠ নদীগর্ভে চলে গেছে অনেক আগেই। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি যেকোনো মুহূর্তে মধুমতি নদী গর্ভে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে।

মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ফজলু মৃধা বলেন, বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হলে এই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিনি ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

শুধু মাকড়াইল বিদ্যালয়ই নয়, শালনগর ইউনিয়নে অবস্থিত আরও সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মধুমতি নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে। এগুলো হলো চাকশি, কাশিপুর, শিয়রবর, নওয়া খোলা ও মন্ডলবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিয়রবর আজিজ-আশরাফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নওয়াখোলা আল হেরা দাখিল মাদরাসা।

শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম বলেন, নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। এতে ওই বিদ্যালয়গুলো চলতি বর্ষায় নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। চলতি বর্ষায় শালনগর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের অন্তত ১০০টি বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। হুমকির মুখে আছে ১৫০টি বসতবাড়ি। এই ইউনিয়নের চারটি গ্রামের অস্তিত্ব ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে।

এলাকাবাসী বলেন, এই ইউনিয়নের কাতলাসুর, চরখোড়কদিয়া, চর গোপালপুর ও চাকশি গ্রাম পুরোপুরি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নদীর অপর পাড় আলফাডাঙ্গায় বসতবাড়ি করে মানবেতর ভাবে জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। রামকান্তপুর, শিয়রবর, আজমপুর, নওয়াখোলা, কাশিপুর, মাকড়াইল ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম নদীতে বিলীন হচ্ছে।

এসব গ্রামের লোকজনের ভাষ্য, তারা সাহায্য চাননা, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা চান। মাকড়াইল গ্রামের জব্বার মোল্লার (৭২) বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে তিনবার। তিনি এখন মাকড়াইল সরকারি আশ্রয়নকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ফসলি সব জমি আগেই নদীতে গেছে। সর্বশেষ আশ্রয় বসত বাড়িটুকুও নদী কেড়ে নিল। এখন তিনি পথের ফকির।

এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাইফুজ্জামান খাঁন বলেন, ভাঙন কবলিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা সম্পর্কে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জয়পুর ইউনিয়নের আস্তাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নতুনভাবে নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কর্তৃক দরপত্র (টেন্ডার) আহবান করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, ওই ইউনিয়নের শিয়রবর বাজার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। সেখানে স্থায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। মাকড়াইল এলাকায় বালুর বস্তা ফেলা হবে। এসব গ্রামে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ জন্য ধাপে ধাপে প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।

(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test