E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নালিতাবাড়ীতে ভুয়া কার্ড বানিয়ে উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা !

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১১ ১৭:৩৯:০৪
নালিতাবাড়ীতে ভুয়া কার্ড বানিয়ে উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা !

শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া কার্ড তৈরি করে উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। ইতোমধ্যে উপবৃত্তির টাকা বিতরন করতে গিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৩৮ টি ভুয়া কার্ড জব্দ করেছে। ঘটনাটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার উত্তর কাওয়াকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী জেলা শিক্ষা অফিসার সহ বিভিন্ন দফতরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ভুয়া উপবৃত্তির কার্ড বানিয়ে টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা সহ নানা অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ আগস্ট সোনালী ব্যাংক নালিতাবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক দিলিপ পাল সশরীরে উপস্থিত থেকে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করতে ওই বিদ্যালয়ে যান। এসময় উপবৃত্তির ৩৮টি ভুয়া কার্ড ধরা পড়লে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সে টাকা ফেরত নিয়ে আসেন। ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নালিতাবাড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

উপবৃত্তির টাকা ফেরতের ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক লি. নালিতাবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক দিলিপ পাল জানান, অভিযোগ পেয়ে আমি নিজে উপবৃত্তির টাকা দিতে যাই। পরে ৩৮টি কার্ড আমার কাছে ‘ফলছ’ (ভুয়া) বলে মনে হয়েছে। ওইসবের কোন অস্তিত্ব পাইনি। তাই ২৩ হাজার ২০০ টাকা ফেরত নিয়ে আসি।

স্থানীয় এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক রহুল আমিন ২০১১ সালেও ভুয়া উপবৃত্তির তালিকা তৈরি করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করেন। কিন্তু তৎকালীন এসএমসি’র (স্কুল ম্যানেজিং কমিটি) সভাপতি আব্দুল মান্নানের বাধায় ওই বছরের ১৩ অক্টোবর প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যাংকে ফেরত যায়। তাছাড়া, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (স্লিপ) দুই দফায় ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু কাগজে-কলমে (অফিসিয়াল ভাউচারে) ‘মা’ সমাবেশসহ বেশকিছু খাতে ব্যয় খোনো হলেও পুরনো একটি স্টিলের আলমিরা ও একটি শোকেশ কিনে নামেমাত্র খরচ করে অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাত করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বই বিক্রির টাকা আত্মসাত, গাছ কর্তন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের অর্থায়নে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে নির্মিত আরসিসি পানির ট্যাংক ভেঙে রড বিক্রির অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকাবাসী ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তারা আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে নানা মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে। উপবৃত্তির ৩৮ টি কার্ডের টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের নামে কার্ড টাকা বিতরনের দিন তারা উপস্থিত ছিলোনা। তাই টাকা ফেরত নিয়ে গেছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন জানান, উত্তর কাওয়াকুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে উপবৃত্তি আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগের বিষয়টির তদন্ত চলছে। এখনও তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

(এইচবি/এএস/সেপ্টেস্বর ১১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test