E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলের সুগন্ধি আগরগাছ এখন বাগান মালিকদের গলার কাঁটা!

২০২১ অক্টোবর ০৫ ১৮:৩৫:৫২
টাঙ্গাইলের সুগন্ধি আগরগাছ এখন বাগান মালিকদের গলার কাঁটা!

মোঃ সিরাজ আাল মাসুদ, টাঙ্গাইল : আগর মূলত একটি গাছের নাম। আগর শব্দের আভিধানিক অর্থ উৎকৃষ্ট বা সুগন্ধবিশিষ্ট কাঠ। আগর মূলত পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ করা হয়। চারা লাগানোর পর ১০ বছরে বড় হয়ে পরিপক্ক হয়ে প্রসেসিং এর মাধ্যমে  সুগন্ধি কষ বের করা হয় যা থেকে দামি সুগন্ধি আতর, ওষুধ, সাবান, শ্যাম্পু, পারফিউম এবং অবশিষ্ট অংশ আগরবাতি বানানোর কাজে ব্যবহৃত করা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বনবিভাগ আগর বনায়নের প্রকল্প হাতে নেয়। পরে টাঙ্গাইলের পাহাড়ি অঞ্চল মধুপুর ও ঘাটাইলের বাগান মালিকরা স্বপ্নের আগরগাছের বাগান শুরু করে। চারা লাগানোর ১০ বছরে বড় হয়ে পরিপক্ক হয়ে সুগন্ধি কষ বেড়োনোর কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ায় পরও তার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা।বন বিভাগ জানিয়েছে, গাছগুলো পরিপক্ক হতেই আরও ৫-৬ বছর সময় লাগবে। ফলে স্বপ্নের আগর বাগান তাদের কাছে এক দুঃস্বপ্নের গাছে পরিণত হয়েছে।

ওই সময় বন বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, আগর চাষ দারুণ লাভজনক। আগর চাষে বাগান মালিকদের ভাগ্য বদল হবে। সে সময় ভাগ্য বদলের স্বপ্নে অনেকেই আগর চাষ করেছিল। বর্তমানে গাছের বয়স ১৩-১৪ বছর হলেও আগরগাছগুলো এখনও পরিপক্ক বা কষ বেড় হওয়ার উপযুক্ত হয়নি। বনবিভাগ বাগানের আগরগাছ থেকে কষ বের করার জন্য পেরেক মারার কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।

আগর গাছের কোন নাম্বারিংও করেনি। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলায় আগরগাছ প্রসেসিংয়ের কোনো কারখানা নেই। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় কারখানা থাকলেও ফরেস্ট ট্রানজিট রুলসের কারণে সেখানে গাছ সরবরাহ করা কষ্টসাধ্য।

সরেজমিনে জানা যায়, মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সারি সারি আগরগাছ দাঁড়িয়ে আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টা করছে। তবে গাছগুলো এখনও পরিপক্ক বা প্রসেসিং করার উপযোগী হয়নি। রোপণের সময় বন বিভাগ জানিয়েছিল, আগর চারা লাগানোর ১০ বছরের মধ্যে তা প্রসেসিংয়ের পর কষ থেকে সুগন্ধি তৈরি করা হবে- যার দাম লাখ লাখ টাকা, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

স্থানীয় বাগান মালিকরা বলেন, বনকর্মীদের আশ্বাসে এক যুগ আগে দেড় বিঘায় আগরগাছ লাগিয়েছিলাম। সে গাছ এখন গলার কাটা। সোনার দামে তো দূরের কথা, সস্তা জ্বালানি কাঠ হিসেবেও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা জানালেন, মধুপুর ও ঘাটাইল অঞ্চলে সরকারি আগর প্রকল্পের গাছ এখনও পরিপক্ক হয়নি। তাদের আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে। এখনও আগর প্রডাশনের অবস্থায় আসেনি। যখন আগর প্রডাকশন হবে তখন তারা বলতে পারবে, তারা লাভবান হয়েছে। আগামী ৫-৬ বছরের আগে গাছ পরিপক্ক হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

(এসএএম/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test