E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানলেন নাতি, নানীর অবস্থা আশঙ্কাজনক  

২০২১ অক্টোবর ০৬ ১৭:২৫:৩৮
ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানলেন নাতি, নানীর অবস্থা আশঙ্কাজনক  

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : তালাক দেওয়া স্ত্রীকে শিক্ষা দিতে ঘরের মধ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় মুমর্ষ নাতি তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। যদিও পাশের শয্যায় তার নানী ফতেমা খাতুন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাজলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার সরদার জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হওয়ার পর এক মাত্র ছেলে নাজমুলকে তার বাড়িতে রেখে ভাই শরিফুলের সঙ্গে এক বছর আগে ভারতের তামিলনাড়ুতে কাজ করতে যায় মেয়ে নাজমা। সেখান থেকে বাড়িতে আসার পর খালাত ভাই কালীগঞ্জের ভাঙানমারির ৮০ বিঘার বাসিন্দা সবুজ গাতিদারের সঙ্গে বিয়ে হয় নাজমার। নাজমুল তাদের (নানা) বাড়িতে থেকে ইছাপুর সরকারি প্রাতমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশুনা করতো। বিয়ের এক সপ্তাহ পর নাজমাকে নিয়ে রাজবাড়িতে একটি কারখানায় কাজে লাগিয়ে দেয় সবুজ। সেখানে নাজমাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাড়ি আসে নাজমা। আগষ্ট মাসের শেষের দিকে নাজমা সবুজকে তালাক দেয়। নলতার এক ব্যাক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌদি আরবে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে ভাষা শিক্ষার জন্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় যায় নাজমা।

আব্দুস সাত্তার সরদার আরো বলেন, তিনি অন্যের ঘেরের বাসায় নৈশ প্রহরীর কাজ করায় সবুজ ও তার পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দু’টোর দিকে তাদের বাড়ির দরজায় ছিকল তুলে দিয়ে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে ঘরে আগুণ লাগিয়ে দেয়। আগুনে স্ত্রী ফাতেমা ৭৫ শতাংশ ও নাতি ৯৫ শতাংশ নাজমুল পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে নাজমুল মারা যায়। তবে তার স্ত্রী ফতেমা খাতুনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের কর্তর‌্যরত চিকিৎসক ডাঃ তৌফিক আহম্মেদ বলেন, নাজমুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও ফাতেমার ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে পেট্রোলের আগুণে। নাজমুল মারা গেলেও তার নানীকে বাঁচানো যাবে কিনা তা বলা যাবে না।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নাজমুলের লাশ বাড়িতে আনা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত সবুজ গাতিদারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার ধারা সংযোজনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test