E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

করোনায় ভূঞাপুরে বাল্য বিয়ের শিকার ৬১৭ স্কুলছাত্রী

২০২১ অক্টোবর ০৬ ১৮:১৩:৩৩
করোনায় ভূঞাপুরে বাল্য বিয়ের শিকার ৬১৭ স্কুলছাত্রী

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে ৬১৭ ছাত্রী। মহামারী করোনার বন্ধে ওই বিয়ে গুলো সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪২৪ জন ও মাদরাসা’র রয়েছে ১৯৩ জন ছাত্রী। 

উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোর মধ্যে গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ জন বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ জন ছাত্রী আর ৪ জন ছাত্র রয়েছে। এছাড়াও মাদরাসা পর্যায়ে সিরাজকান্দি দাখিল মাদরাসা’র ২৪ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

জানা যায়, ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে ভূঞাপুর উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৯টি দাখিল মাদরাসা। বর্তমানে এ উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রী রয়েছে ৭ হাজার ৭৪৪ জন আর মাদরাসার ছাত্রী সংখ্যা ৩ হাজার ৭২৬ জন।

শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন করোনার কারণে স্কুল ও মাদরাসা বন্ধ থাকায় ভূঞাপুর উপজেলার ৬১৭জন বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন ছাত্র রয়েছে। বিয়ের পর কয়েকজন ছাত্রী মা হতে চলেছে।

অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৮২জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯০৩জন আর ছাত্রী ৬৭৯জন। এ বিদ্যালয়ের ৩৯ শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫জন ছাত্রী আর ৪জন ছাত্র রয়েছে। রুহুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৯৯জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৪৫ জন আর ছাত্রী ১৫৪ জন। এ বিদ্যালয়ের ৩৫ জন ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৪০জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৭১জন আর ছাত্রী ১৬৯জন। এ বিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১০৯জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৫৩ জন আর ছাত্রী ৩৫৬জন। এ বিদ্যালয়ের ১০জন ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১৮৪জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫২০জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৬১জন আর ছাত্রী ২৫৯জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৩৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৩১ জন আর ছাত্রী ২০৬ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। নিকরাইল বেগম মমতাজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রী সংখ্যা ৮০৬জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। মমতাজ ফকির উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭৯২জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪৬২জন আর ছাত্রী ৩৩০জন। এ বিদ্যালয়ের ২০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ভারই দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৬৬জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩৬৮ জন আর ছাত্রী ১৯৮ জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। কোনাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫৫জন। এর মধ্যে ছাত্র ১১৫ জন আর ছাত্রী ১৪০ জন। এ বিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭২৯জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪০২ জন আর ছাত্রী ৩২৭ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

চর নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৬০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৭১জন আর ছাত্রী ১৮৯ জন। এ বিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। অলোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২১৮জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮৮ আর ছাত্রী ১৩০জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। শুশুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৮৭জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৪৫ জন আর ছাত্র ১৪২জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৬৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১১৯ জন আর ছাত্রী ১৪৮জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ফকির মাঈন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫৩জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯০জন আর ছাত্রী ১৬৩জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। মোবারক মাহমুদ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৮৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৫৮জন আর ছাত্রী ২২৬ জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। গাবসারা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৫২ জন আর ছাত্রী ২৪৫ জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। টেপিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৬২০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩৭৫ জন আর ছাত্রী ২৪৫ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

জুংগীপুর রুলীপাড়া উচ্চ বিদ্যলয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৮৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২২৪ জন আর ছাত্রী ১৬০ জন। এ বিদ্যালয়ের ২০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। তালুকদার সিরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৫১ জন আর ছাত্রী ১৫৪ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৬ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ফলদা শরীফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রীর সংখ্যা ৪৩৮জন। এ বিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৬২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮৩ আর ছাত্রী ১৭৯ জন। এ বিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

খন্দকার কুলসুম জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১২৮ জন আর ছাত্রী ১৪৭ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৮ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ভদ্রশিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৭৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১১৯ জন আর ছাত্রী ১৫৭ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৩৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৯৭ জন আর ছাত্রী ১৪১ জন। এ বিদ্যালয়ের ৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ঘাটান্দী খন্দকার হায়দার আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৭১ জন আর ছাত্রী ৭২ জন। এ বিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। পলশিয়া রাণী দিনমনি উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র সংখ্যা ৭৮৫জন। ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রের সংখ্যা ৪৩২ জন।

এছাড়াও ১৯টি দাখিল মাদরাসার মধ্যে সিরাজকান্দি দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৫ আর ছাত্রী ২২৭ জন। এ মাদরাসার ২৪ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। চর গাবসারা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩১২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০৭ আর ছাত্রী ২০৫ জন। এ মাদরাসার ১৯ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। জিগাতলা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৫ আর ছাত্রী ৮২ জন। এ মাদরাসার ৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। কোনাবাড়ী দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০০ আর ছাত্রী ১০৬ জন। এ মাদরাসার ৬ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

রুহুলী দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৬২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯৩ আর ছাত্রী ৬৯ জন। এ মাদরাসার ৮ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। রাউৎবাড়ী দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮৪ আর ছাত্রী ১২০ জন। এ মাদরাসার ৯ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। নিকলা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৯৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪৫ আর ছাত্রী ৫৩ জন। এ মাদরাসার ৪ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। আমুলা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪৯ আর ছাত্রী ১০৬ জন। এ মাদরাসার ৯ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। আগতেরিল্যা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০২ আর ছাত্রী ১২৪ জন। এ মাদরাসার ১২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। চর চন্দনী দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮১ আর ছাত্রী ১৪৬ জন। এ মাদরাসার ১৮ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

খাশবিয়ারা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৮১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১১১ আর ছাত্রী ২৭০ জন। এ মাদরাসার ২১ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বিলচাপড়া সবুজ সংঘ দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭২ আর ছাত্রী ১৩০ জন। এ মাদরাসার ৯ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। চর অলোয়া দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৩৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪২ আর ছাত্রী ৯৫ জন। এ মাদরাসার ৬ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। অর্জুনা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৮০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯১ আর ছাত্রী ৮৯ জন। এ মাদরাসার ১২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

পলশিয়া দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬২ আর ছাত্রী ১৪৬ জন। এ মাদরাসার ৯ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। আকালু চর কয়েড়া দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫০ আর ছাত্রী ১০৪ জন। এ মাদরাসার ৭ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বি এম দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৮০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৭ আর ছাত্রী ১০৩ জন। এ মাদরাসার ৬ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। আছাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩৪ আর ছাত্রী ১১৬ জন। এ মাদরাসার ৫ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বেতুয়া পলিশা দাখিল মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৮৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩৯ আর ছাত্রী ৪৬ জন। এ মাদরাসার ৪ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

বিয়ে হয়ে যাওয়া গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী ছাত্রী মিতা নূরের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা গ্রামের মানুষ, অল্প বয়সেই আমাগো মাইয়া আর পুলাগো বিয়া দিতে হয়। এরপরও মাইয়ারে গোবিন্দাসী স্কুলে পড়াইতে ছিলাম। করোনায় ভরাদিন স্কুল বন্ধ থাকায় আর ভালো ছেলে পাইয়া মাইয়াডার বিয়া দিছি। বিয়া হইলেও জামাই মাইয়ারে পড়াইবো বইলা কথা দিছে। বাকিটা মাইয়ার কপাল। করোনার বন্ধে এই স্কুলের অনেকগুলা মাইয়ার বিয়া হইছে বলেও জানান তিনি।

গোবিন্দাসী স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদীর বাবা আব্দুল লতিফ জানান, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। এ কারণে বাধ্য হয়ে তাকে ব্যবসায় বসিয়ে দিই। পরবর্তীতে ছেলেকে বিয়ে করাই।

গোবিন্দাসী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজী বদিউজ্জামান জানান, করোনার বন্ধে বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্রী বিয়ে দেয়ার সংবাদ তিনি পেয়েছেন। ওই বিয়ে গুলোর রেজিস্ট্রি তিনি করেননি। বিয়ে গুলো স্থানীয় মুন্সীরা পড়িয়েছেন বলে জানতেও পেরেছেন। তবে বাল্য বিয়ে আইন সম্মত নয় বলেও জানান তিনি।

সিরাজকান্দি দাখিল মাদরাসা সুপার মো. আব্দুল কুদ্দুস জানান, করোনার বন্ধে অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে সর্বমোট কতজনের বিয়ে হয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

রুহুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন জানান, আমার স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা ১৫৪ জন। যতটুকু জেনেছি এর মধ্যে ৩৫ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।

গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলী জানান, আমার স্কুলের বাল্য বিয়ের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে এ স্কুলের ২৬ জন ছাত্র আর ছাত্রী বিয়ের হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার তাহমিনা আক্তার জানান, এ উপজেলায় মাত্র দুটি বিদ্যালয়ে ১৪ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছি। এর মধ্যে ফলদা শরীফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭জন ছাত্রী আর গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এছাড়া বাকি বিদ্যালয় ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের ছাত্রী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এরপরও তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।

(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test