E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় ৫৮১টি মন্দিরে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি

তুলির টানে প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

২০২১ অক্টোবর ০৭ ১৯:৩৩:৩৬
তুলির টানে প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সদরে ১০৫ সহ জেলায় সর্বমোট ৫৮১ টি  সার্বজনীন ও পারিবারিক মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আগামী ১১ই অক্টোবর সোমবার ষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শারদীয় দূর্গাৎসব শুরু হবে। সাতক্ষীরা সদর সহ জেলার অধিকাংশ মন্দিরে চলছে তারই প্রস্তুতি। কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধনে। দূর্গা পূজার বাকি মাত্র ৩ দিন। তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিমা কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছে।  মন্দির প্রতিমা পরিপূর্ণভাবে সাজাতে মন্দিরগুলোতে দিনরাত মিলিয়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সদরের মন্দির গুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরীর ধূম। 

সরজমিনে সদরের রসুলপুর,আলিপুর,ভোমরা, কাথণ্ডা,ছয়ঘোরিয়া, সোনাবাড়িয়া, ঝিটকি, ধুলিহর, নলতা, কুমারখালি দোবহাটা, বাকা, বুধহাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ মন্দিরগুলোতে মায়ের আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। চলছে রং তুলির আঁচড় লাগানোর কাজ।

এদিকে পলাশপোল সার্বজনিন পূজা মণ্ডপের সভাপতি শম্ভু কুমার দে বলেন আমাদের পূজা মণ্ডপে এবার প্রতীমা তৈরির কাজ করছে সদরের ব্যাংদাহ থেকে আসা কারিগর (মৃৎশিল্পি) মধু দাস ও মৃত্যুজ্ঞয় দাস। তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িত আছে তারা। বাপ দাদাদের কাছেই শেখেন কাদা মাটি আর খড় দিয়ে কিভাবে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে হয়। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে বলেও জানান তিনি। আন্যদিকে ঝিটকি এলাকার কারিগর অজয় পাল বলেন, বছরের সব সময় কাজ থাকে না তাই অধিকাংশ সময় বেকার থাকতে হয়। কিন্তু এখন দুর্গাপূজা উপলক্ষে কাজের চাপ বেশি তাই রাত দিন পরিশ্রম করে মনের মাধুরী মিশিয়ে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছি। বুধবার থেকে প্রতিমা রং করা হচ্ছে। কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট তৈরি করতে সময় লাগে ৮-১০ দিন।

কালীগঞ্জের চম্পাফুল ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডল জানান, তার বাড়িতে পারিবারিক দুর্গাপুজা হলেও প্রতিবেশিরাই একটি বড় খরচ বহন করে থাকেন। এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। গতবার করোনার কারণে পুজা নামে মাত্রই হয়েছে। ছিলনা কোন বাজনা বা শোভাযাত্রা। এবার করোনা পরিস্থিতি বজায় থাকলেও বৃষ্টি বাদলের মধ্যেও মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মণ্ডপে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

নলতা চৌমুহুনী এলাকার অগ্রদূত সার্বজনীন দুর্গা পুজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডাঃ শঙ্কর কুমার পাল বলেন, নির্ধারিত সময়ের একটু আগে থেকেই তারা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। সাবেক সভাপতিসহ একটি মহল এবার পুজা বন্ধ করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র করেছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও সাংসদ সাবেক পরিবার ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর ইচ্ছায় সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। বৃষ্টি না হলে পুজা ভালভাবেই কাটবে।

সাতক্ষীর জেলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে তাদের প্রস্তুতি শেষের দিকে। গত ৫ অক্টোবর জেলাপ্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা হয়েছে। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে যে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে তারা আন্তরিক ভাবে কাজ করলে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। জেলায় ৫৮১টি বারোয়ারি ও পারিবারিক পুজা অনুষ্ঠিত হবে।

শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। একসময় জামায়াতের তাণ্ডবে সাতক্ষীরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে সে পরিস্থিতি নেই। যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘেœ পুজা পালন করতে পারে সেজন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test