E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে সব যানবাহন উদ্ধার

২০২১ অক্টোবর ৩১ ১৮:০৮:১৪
পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে সব যানবাহন উদ্ধার

এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : দেশের অন্যতম নৌরুট দৌলতদিয়া -পাটুরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২৮ জেলার প্রবেশদ্বার বলে চিহ্নিত।এই নৌ-পথ দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক সহ ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রী পারাপার হয়। এই নৌ-পথে প্রতি নিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী ও চালকদের। 

গত ২৭ অক্টোবর সকাল ১০ টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে রো রো ফেরি শাহ আমানত ১৭ টি পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ৪ টি মোটরসাইকেল নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

তবে ঘাটে ভেড়ার আগেই ফেরি চালক বুঝতে পারে ফেরির পেছনের একটা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তিনি ফেরির এনাউন্সমেন্ট মাইক দিয়ে সবাইকে বিপদ সংকেত পৌছে দেন।

ফেরি চালক বিচক্ষণতার সাথে পাটুরিয়া ৫ নং ফেরি ঘাটে পন্টন করার চেষ্টা করে, এমনকি ওই দ্রুত সময়ে মধ্যে ৩ টি ট্রাক নেমে যায়। তবে ফেরি ডানদিকে কাত হতে থাকলে চতুর্থ কাভার্ডভ্যান নামতে গেলে ফেরির সাথে সাথে পানিতে পরে যায়।

দ্রত সময়ে মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দুর্ঘটনা স্থলে পৌছায় এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে।

প্রথম দিন বুধবার সকাল ১৪টি যানবাহনসহ ডুবে যায় ফেরি। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। দীর্ঘ সাড়ে ১০ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত ফেরি আমানত শাহ থেকে চারটি পণ্যবাহী ট্রাক উদ্ধার করতে সক্ষম হয় হাজমা। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে দ্বিতীয় দিনের মতে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা অভিযান শুরু করে। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে পাঁচটি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে। পরে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

তৃতীয় দিনে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ফেরির ভেতর থেকে তিনটি যান উদ্ধার করতে সক্ষম হয় হামজা। এ নিয়ে মোট বারোটি যানবাহন উদ্ধার করে।

চতুর্থ দিন শনিবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয় সকাল ৮টায়। এদিন তিনটি মোটরসাইকেল, একটি কাভার্ডভ্যান এবং শেষ একটি পণ্যবাহী ট্রাক উদ্ধার করার পরপরই ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

বিআইডব্লিউটিসির তথ্য মতে আমানত শাহ রো রো ফেরিটি ১৯৮০ সালে তৈরি, যার বর্তমান বয়স ৪১ বছর।অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী ফেরিটির নিবন্ধনের মেয়াদ ছিল ৩০ বছর। তবে কর্তৃপক্ষ জানান- বিশেষ জরিপের মাধ্যমে ৫ বছর করে মোট দুইবার নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যায়। কিন্তু ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহর এই বিশেষ জরিপে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল কিনা তা বলতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।

ফেরিটির সক্ষমতা ছিল এক সাথে ৩৩৫ জন যাত্রী ও ২৫টি যানবাহন বহন করার ক্ষমতা রয়েছে। এই ফেরিটি ৮০৬.৬০ টন ওজনের। এটি সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারবে।

অন্যদিকে শনিবার দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া যানবাহনের চালক ও মালিকরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে যৌথভাবে ডুবে যাওয়া ফেরির যানবাহন উদ্ধার কাজ শুরু করে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিসি’র সদস্যরা। আর এ কাজে উদ্ধারকারী জাহাজ হিসাবে একমাত্র সহযোগিতা করে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। চতুর্থদিন যোগ দেয় ‘রস্তম’। এঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসন আলাদা দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

(একে/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test