E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আদালতের রায় সরকারের বিপক্ষে

অস্তিত্ব সংকটে কালীগঞ্জের চিংড়িখালির ১৪৯ ভূমিহীন পরিবার

২০২১ নভেম্বর ০৮ ২২:৫৮:১৯
অস্তিত্ব সংকটে কালীগঞ্জের চিংড়িখালির ১৪৯ ভূমিহীন পরিবার

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বরেয়া মৌজার ৪৭ বিঘা সরকারি খাস জমি আম্বিয়া খাতুনসহ সাতজনের পক্ষে দোতরফা সূত্রে ডিক্রীর আদেশ দেওয়া হয়েছে।সোমবার সাতক্ষীরা ল্যাণ্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জাহিদুল আজাদ এ রায় ঘোষণা করেন। ফলে চিংড়িখালিতে বসবাসরত ১৪৯টি পরিবার অস্তিত্ব সংকটে।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের সাতক্ষীরার সরকারি কৌশুলী অ্যাড. শম্ভুনাথ সিং অভিযোগ করে বলেন, আম্বিয়া খাতুনসহ সাতজন যে রেজিষ্ট্রি বন্টননামা দলিলমূলে ওই জমি দাবি করেন বাস্তবে সেই দলিলটির দাতা , গ্রহীতা, মৌজা, খতিয়ান ও জমির পরিমান সম্পূর্ণ ভিন্ন। যাহা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

সাতক্ষীরা জেলার রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌশুলী(জিপি) অ্যাড. শম্ভুনাথ সিং জানান,কালীগঞ্জের বরেয়া গ্রামের ষষ্ঠীবর চন্দ্র, হরেন্দ্রনাথ চন্দ্র, ব্রজদুলাল চন্দ্র ও তাদের শরীকরা বরেয়া মৌজার এসএ ৬৭৩ ও ৬৭৪ খতিয়ানের ১১টি দাগে ৯৯ একর জমি ফেলে রেখে ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে স্থায়ীভাবে ভারতে চলে যান। ওই জমি পরবর্তীতে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ‘খ’ তপশীলে অন্তুর্ভুক্ত হয়। এর আগে ওই জমি কালীগঞ্জ সহকারি কমিশনারের(ভূমি) আদালতে মিস ০২/২০১৪ ওমিস ০১/২০১৮ (ধারা ৯২-ক) নং মামলা দায়ের করা হয়। আরএস গেজেটে ওই জমি ১/১ খতিয়ানভুক্ত হয়ে চুড়ান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

তবে আরএস রেকর্ডে আম্বিয়া খাতুনের স্বামী ইউনুছ আলীসহ কয়েকজনের নামে কাল্পনিক দখল নোট দেখানো হয়। ফলে প্রজাসত্ব বিধিমালা অনুযায়ি মিস ২১/২০১৮ নং মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে লা -ওয়ারিশ সম্পত্তি হিসেবে নতুন একটি মিস কেস করে এসএ ও বিএস ১/১ খতিয়ানের দাগ সমন্বয় করে ১১টি দাগে ৯৯ একর বাংলাদেশ সরকারের নামে ও অবশিষ্ঠ ২৪.৯২ একর জমি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে রেকর্ড হয়। ওই জমিতে কোনদিনও ইউনুছ আলী ও তার সহযোগীরা ভোগদখল করেননি। ফলে ১৪৯টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করায় ২০২০ ও ২০২১ সালে তাদেরকে একসনা ইজারা দেওয়া হয়।

এদিকে ওই জমি ১৯৬২ সালের ৩ ফেব্র“য়ারি ৩১২/৬২ নং কোবালা দানপত্র দলিল মূলে দাবি করে বরেয়া গ্রামের ইউনুছ আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুনসহ সাত জন ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা ল্যাণ্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে সরকারকে বিবাদীকে মামলা (দেঃ ৯৩৪/১৮) মামলা দায়ের করেন। ওই দানপত্র দলিলের সত্যায়িত কপি তুলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই দলিলের গ্রহীতা শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের এন্তাজ আলী ত কাগুচী , দাতা -আফিলউদ্দিন গাজী। এ ছাড়া মৌজা , জেএল, খতিয়ান ও দাগ সবই ভিন্ন উপজেলা শ্যামনগরের। ওই দলিলে জমির পরিমানও ৫৫ শতক মাত্র। বন্টননামা দলিল মুলে ওই জমি ক্রয় বিক্রয় হলেও ইউনুছ আলীগন ওই বন্টননামা দলিল ইতিপূর্বে সহকারি কমিশনারের (ভূমি) অফিসে হাজির করাতে ব্যর্থ হয়। তবে সেখানে তারা ২৬৭/৬৭ নং একটি ভিত্তিহীন দলিল উপস্থাপন করে ওই জমি দাবি করে। শুনানী শেষে সোমবার দেঃ ৯৩৪/১৮ নং মামলার আদেশে ল্যাণ্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জাহিদুল আজাদ আম্বিয়া খাতুনসহ সাতজন বাদির পক্ষে দোতরফা সূত্রে ডিক্রী জারির নির্দেশ দেন।

অ্যাড. শম্ভুনাথ সিংহ জানান, এ রায় এ ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে তিনি মনে করেন। তাই পূর্ণাঙ্গ আদেশের সত্যায়িত কপি পাওয়ার পর সরকার পক্ষ উচ্চ আদালতে যাবেন।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test