E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝাউডাঙা ইউনিয়নে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ বৃহস্পতিবার

২০২১ নভেম্বর ০৯ ১৬:৪৫:২৪
ঝাউডাঙা ইউনিয়নে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ বৃহস্পতিবার

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আগামী ১১ নভেম্বর সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙাসহ ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। 

২১টি গ্রাম নিয়ে গঠিত নয়টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার। নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করার লক্ষে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আজমল উদ্দিন। তবে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নিজের পকেট ভোট ঠিক রাখার পাশাপাশি নৌকার ভোট কাটতে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের অবস্থান মজবুত করা বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি জয়দেব ঘোষ আনারস প্রতীক নিয়ে নিজের সম্প্রদায়ের ভোট টানার পাশাপাশি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করার সুবাদে আজমল উদ্দিন ও রফিকুল ইসলামের ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা বঞ্চিতদের ভোট নিজের অনুকুলে টানার জন্য কর্মী সমর্থকদের নিয়ে দিবা-রাত্র কাজ করে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে ঝাউডাঙা ইউনিয়নের ঝাউডাঙা, ওয়ারিয়া, পাথরঘাটা, হাজীপুর, হাচিমপুর, রাজবাড়ি, বিহারীনগর, মোহনপুর, তুজুলপুর, আখড়াখোলা, বয়ারখোলা, দেবনগর, ছাতিয়ানতলা, ছয়ঘরিয়া, দত্তবাগ, বলাডাঙা , মাধবকাটি, গোব্দিকাটি, যোগরাজপুর, অমরাবর্তী ও দিগেরডাঙা ঘুরে নতুন ভোটার ও পুরাতন ভোটরদের সঙ্গে কথা বলে জানান গেছে, চেয়ারম্যান হিসেবে আজমল হোসেন সরকারি উন্নয়নের কাজে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাটের অভিযোগ খুবই কম। লুটপাট করলে তার মনোনীত কাছের ইউপি সদস্যরা করেছেন।

তবে চেয়ারম্যান বাড়িতে থাকলেও তিনি বাসায় নেই বলে মানুষকে হয়রানি করা হয়। তাছাড়া, নাগরিক সনদ, জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, চারিত্রিক সনদসহ বিভিন্ন সনদ সংগ্রহ করতে তার সাক্ষর পাওয়ার জন্য দিনে পর দিন ঘুরতে হয়। নিহের পকেটের লোক হওয়ায় দূর্ণীতির ভুরি ভুরি অভিযোগ থাকার পরও আজমল উদ্দিন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেন নি।

এ ছাড়া বিপদে পড়লে জনগনের পাশে দাঁড়াতে তিনি বড়ই কৃপণ। এ ছাড়া তার মুখে জয় বাংলঅ ও জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান শুনেছেন এমন খুব কম লোকই আছে। এরপরও আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকে ম্যানেজ করে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বৈতরনী পার হতে চান। তবে দেবনগর, ছাতিয়ানতলা, দত্তবাগ, আখড়াখোলা, ঘোষপাড়া, মাধবকাটিসহ বিভিন্ন গ্রামের হিন্দু ভোট জয়দেব ঘোষের পক্ষে গেলে তা নৌকার ভোট ব্যাংককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সেক্ষেত্রে ফাঁক দিয়ে লাফিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মোটর সাইকেলের। তবে ভোটে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে ভালবেসে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ভোটের বাক্স ভারী করতে না পারলে নৌকা জয়ের আশার আলো নিভে যেতে পারে।

অপরদিকে বিএনপি কর্মী হিসেবে পরিচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের পকেট ভোট একাবেরই কম নয়। তবে ফোন পাওয়া বা ডাকা মাত্রই বিপদে কাছে পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন অনেক প্রবীন ভোটার। কোন প্রকার প্রভাব ছাড়া ভোট হলে রফিকুল আবারো জয়ের মালা পরতে পারেন বলে অনেকেই আশাবাদি।
এদিকে আওয়ামী লীগের কোন বড় পদ না থাকলেও সক্রিয় কর্মী হিসেবে জয়দেব ঘোষের একটা অবস্থান রয়েছে পাথরঘাটা, ওয়ারিয়া, হাজীপুর ছাড়া বাকী গ্রামগুলোতে। কয়েক বছর যাবৎ তিনি নির্যাতিত, বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন।

এ ছাড়া বিগত দুর্গাপুজা উপলক্ষে কুমিল্লা, নোয়াখালি, সিলেট, ফেনী, বগুড়া, রংপুরের পীরগঞ্জসহ ২১টি জেলায় কুরআন শরীফ অবমাননার দায়ে যেভাবে হিন্দু মন্দির, প্রতিমা, মণ্ডপ, হিন্দু বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ১০ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন নিজেদের লোককে সামনে রেখে ভরসার স্থল খুঁজতে চেষ্টা করছে। সেখানে জয়দেব ঘোষ একটি প্লাস পয়েন্ট হিসেবে রফিকুল ও আজমল উদ্দিনের হিন্দু ভোটসহ অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানষের ভোট ব্যাংকে হানা দিয়ে জয়ের তরী তীরে ভেড়াতে পারেন। এ ছাড়া নতুন ভোটাররা জয়দেব ঘোষকে একটি বিকল্প অবস্থান হিসেবে মনে করে তাকে আঁকড়ে ধরে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এরপরও ভোট একটি বিচিত্র কর্মকাণ্ড। ১১ নভেম্বর রাতে ভোট গণনার পর পাল্টে যেতে পারে এসব প্রার্থীদের সকল হিসাব নিকাশ।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test