E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অনার্স শাখা

শিক্ষকদের তথ্য জালিয়াতি করে ডিগ্রী স্তরের তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির চেষ্টার তথ্য প্রকাশ

২০২১ নভেম্বর ১৩ ১৮:৩৭:৩১
শিক্ষকদের তথ্য জালিয়াতি করে ডিগ্রী স্তরের তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির চেষ্টার তথ্য প্রকাশ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের  জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ৯(২),২০১৮ সালের ২৮ আগষ্ট এবং ২০১৯ সালের ৩ মার্চ পরিপত্র এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরীবিধি উপেক্ষা করো অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে বিভিন্ন সময়ে অনার্স শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত জালিয়াতি ও কাম্য সংখ্যক ভুয়া শিক্ষার্থীর তালিকা গোপন করে ডিগ্রী স্তরের তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির জন্য  অধ্যক্ষ আবু সাঈদের পাঠানো তালিকা গত ৭ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক কলেজ (৩) ফারহানা আক্তার ও উপপরিচালক কলেজ (২) মোহাম্মদ এনামুল হক হাওলাদার স্বাক্ষরিত  তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে আবু সাঈদের আরো একদফা জালিয়াতির চিত্র ধরা পড়েছে।

যেসমস্ত শিক্ষকদের তথ্য জাালিয়াতি করে এমপিও করার অনুমোদন পাওয়া ২০১১ সালের ৬ নভেম্বর নিয়োগবোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা বিভাগের চম্পা রানী হাজরাকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

একই তারিখে নিয়োগবোর্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত লিলিফা পারভিনকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

ইসলামের ইতিহাসে ২০১১ সালের ৬ নভেম্বর নিয়োগবোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক কামরুন্নাহারকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে।

২০১১ সালের ৬ নভেম্বর নিয়োগবোর্ডের মাধ্যমে ইসলামের হতিহাসে নিয়োগপ্রাপ্ত সাহাবুদ্দিন আহম্মেদকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

২০১১ সালের ৬ নভেম্বর নিয়োগবোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক সেলিনা পারভিনকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষখ গৌর চন্দ্র মণ্ডলকে বঞ্চিত করে।

২০১৫ সালের ১৫ জুলাই নিয়োগ বোর্ডের মাধমে অর্থনীতি বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক জিএম ফিরোজ কবীরকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর নিয়োগাবোর্ডের মাধ্যমে মনোবিজ্ঞানে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিমল কুমার মণ্ডলকে২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে । এখানে একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাহারা বানুকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর নিয়োগাবোর্ডের মাধ্যমে সমাজ বিজ্ঞানে নিয়োগপ্রাপ্ত মোঃ ইমরুল হোসেনকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে । এখানে একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তাপস কুমার সরকারকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর নিয়োগাবোর্ডের মাধ্যমে ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত মুকুন্দ কুমার ঘোষকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর নিয়োগাবোর্ডের মাধ্যমে মার্কেটিং বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক পবিত্র কুমার মণ্ডলকে মুকুন্দ ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

২০০৪ সালে কৃষি ডিপ্লোমা শাখায় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগকৃত শিক্ষকব মোঃ আব্দুল জলিলকে২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

২০০৪ সালে কৃষি ডিপ্লোমা শাখায় গনিত বিভাগে নিয়োগকৃত শিক্ষকব মোঃ শামসুর রহমানকে ২০১৫ সালের ৩ আগষ্টের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর যোগদান দেখানো হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা সিটি কলেজে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডিগ্রী স্তরের তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ২০১৮ সালের ২৮ আগষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত পরিপত্র এবং ২০১৯ সালের ১২ মার্চ মাউশির পরিচালক ড. মোঃ আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত পরিপত্র জারি হওয়ার পর অধ্যক্ষ আবু সাঈদ ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষদের তথ্য জালিয়াতি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠান। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসের প্রজ্ঞাপন অনুসারে ২২ অক্টোবর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ঘোষণার পর কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতির সঙ্গে যোগসাজসে অধ্যক্ষ আবু সাঈদ এই বিশাল জালিয়াতির আশ্রয় নেন বলে সংম্লিষ্ট কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারি সাংবাদিকদের জানান।

যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ওই ১২জন শিক্ষককে নিয়োগ দেখানো হয়েছে সেটি ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্টে স্থগিত হয়ে যায়। যার রিট পিটিশন নং -৯০৮১।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদের সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test