E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নামে মিথ্যা ব্যানার, জড়িতদের শাস্তি দাবি

২০২১ নভেম্বর ২৪ ১৫:৫২:৫৫
আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নামে মিথ্যা ব্যানার, জড়িতদের শাস্তি দাবি

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির অপসারণ চেয়ে একটি মহল বিশেষ সুবিধা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নাম ব্যবহার করে একটি ব্যানার টানিয়েছে। এই ব্যানার সম্পর্কে কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা কিছুই জানেন না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এই ব্যানারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ব্যানার ছিড়ে ফেলেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ।

জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে বকুলনেছা মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ভালোই চলছিল কলেজের পাঠদান ও কার্যক্রম। ২০১০ সালে কলেজর অধ্যক্ষ হিসেবে ফোরকান মিয়া বিএ পাশের জাল সার্টিফিকেট দিয়ে গোপনে নিয়োগ নেন। তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ নেয়ার পর থেকেই নারী কেলেংকারী, জাল সার্টিফিকেট ব্যবসা ও অর্থ আত্মসাৎসহ নানাবিধ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৩ সালে তার বিএ পাশের জাল সার্টিফিকের ধরা পড়ে। জাল সার্টিফিকের তথ্য বেরিয়ে আসলে তিনি স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। গত ১২ জুলাই ফোরকান মিয়া তথ্য গোপন করে মোসাঃ মাকসুদা আক্তার জোসনাকে সভাপতি পদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জোসনাকে সভাপতি করে চিঠি দেন। মাকসুদা কজেলের সভাপতি হয়েই জাল সার্টিফিকেটধারী মোঃ ফোরকান মিয়াকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদে পুনঃবহাল করেন।

এদিকে কমিটি গঠনের পরপরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মোঃ ফোরকান মিয়ার বিএ পাশের জাল সার্টিফিকেট এবং পদত্যাগের বিষয়টি জেনে যান। পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ গোলাম সরোয়ার টুকুকে সভাপতি করে এডহক কমিটি ঘোষনা করেন। ওই কমিটির কার্যক্রমে বাঁধা হয়ে দাড়ান জাল সার্টিফেকেটধারী অধ্যক্ষ ফোরকান। ফোরকানের অপতৎপরতায় কলেজের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে। মঙ্গলবার গভীর রাতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের নাম ব্যবহার করে সভাপতির অপসারণ চেয়ে একটি ব্যানার টানানো হয়। বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে ব্যানার দেখে হতবাক হয়ে যান। পরে তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষনিক ব্যানার ছিড়ে ফেলেন।

তারা বলেন, আমরা সভাপতির অপসারণ চাইবো কেন? একটি কুচক্রীমহল কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নাম ব্যবহার করে এ ব্যানার টানিয়েছে। এই ব্যানার টানানোর সাথে জড়িতদের খুজে বের হবে শাস্তি দাবী করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, কলেজের ভিতরে জামায়াত শিবিরের একটি চক্র সভাপতির মান ক্ষুন্ন করতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা তালুকদার এ্যানি, মুন্নি, তন্নি, ইমা ও কেয়া বলেন, আমরা সকালে কলেজে এসে শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে সভাপতির অপসারণ দাবী করে একটি ব্যানার দেখতে পাই। আমাদের নাম ব্যবহার করে ব্যানার টানানো দেখে আমরা হতবাক হয়ে যাই। সাথে সাথে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। তারা আরো বলেন, আমাদের নাম ব্যবহার করে যারা মিথ্যা এ ব্যানার টানিয়েছেন তাদের শাস্তি দাবী করছি।

কলেজের শিক্ষার্থী তামান্না, লিমা, ফারজানা, জুলিয়া, কুলসুম, মিতু ও টুম্পা বলেন, আমাদের নাম ব্যবহার করে যারা এমন মিথ্যা ও বানোয়াট ব্যানার টানিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দাবী করছি।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মোঃ রশিদ হাওলাদার, রাহাত তালুকদার, ফারুক মিয়া, শহীন হাওলাদার ও জসিম মাষ্টার বলেন, আমাদের নাম ব্যবহার করে যারা ব্যানার টানিয়েছে তার নেহায়েত অন্যায় করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেন তারা।

কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফোরকান মিয়া ব্যানারটি কলেজের বাহিরে টানানোর কথা স্কীকার করে বলেন, ব্যানার কে বা কাহারা টানিয়েছে তা আমার জানা নেই।

বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক কলেজের সভাপতি গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ব্যানার টানানোর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। তবে অন্যায়, দুর্নীতি ও জাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বাঁধা বিপত্তি আসতেই পারেন। বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই আমার কাজ।

(এন/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test