E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বানিয়াচংয়ে শ্মশানের জায়গা উদ্ধারে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ 

২০২১ ডিসেম্বর ০৯ ১৬:৩৩:১৭
বানিয়াচংয়ে শ্মশানের জায়গা উদ্ধারে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ 

তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সেকান্দরপুরে শ্মশানের জায়গায় বন্দোবস্থ বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের পর এবার বন্দোবস্থ বাতিলের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামবাসী। গত ৫ ডিসেম্বর প্রায় ২’শ গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের কাছে এ অভিযোগ দায়ের করেন রবীন্দ্র চন্দ্র দাস নামে এক মুক্তিযোদ্ধা। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্ম সিংহ জানান, যেহেতু শ্মশানের জায়গায় বন্দোবস্থ প্রদানের বিষয়টি উঠেছে, বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফফাত আরা জামান উর্মি জানান, বিষয়টি তার জানা আছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের থেকে তথ্য গোপন করে ভুমিহীন পরিচয়ে ৭৩ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত নেয় স্থানীয় একটি চক্র। এভাবে পরিচয় গোপন করে একই পরিবারের পরপর ৫জনের নামে মোট ১৬৭শতক জায়গা বন্দোবস্থ নেয়ার তথ্য পাওয়া যায়। তবে বন্দোবস্থ বাতিলের দাবীতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন স্থানীয়রা। এর আগে বন্দোবস্থ বাতিল ও তার প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় অক্কুর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভুমিহীন পরিচয়ে ২০০৩ সালে পরিত্যাক্ত ৭৩ শতাংশ জায়গা বন্দোবস্থ গ্রহন করেন ওই গ্রামের আকল দাশ নামে এক ব্যক্তি। তবে একই পরিবারের ভিন্ন লোকের নাম ব্যবহার করে পর পর ৩টি জায়গা বন্দোবস্থ গ্রহন করায় বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় গ্রামবাসীদের। অভিযোগ আছে, আকল দাশের আপন ভাতিজা প্রত্যুস দাশ এর আগে গত ৩ বছর আগে ৫০ শতক জায়গা বন্দোবস্থ নিয়ে স্থানীয় হলিমপুর গ্রামের জিন্দাপীর মিয়ার পুত্র মানিক মিয়া নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। যদিও বন্দোবস্থ শর্তে জায়গা হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের কোন নিয়ম নেই। আকল দাশের অন্য আরেক আপন ভাই রাসমোহন দাশের নামে ৪২ শতক জায়গা বন্দোবস্থ নিয়ে সেখানে মাছ চাষ করেন তারা। একই জায়গার পাশে আবারও তথ্য গোপন করে ৭৫ শতাংশ জায়গা বন্দোবস্থ গ্রহন করেন আকশ দাশ নামে এক ব্যক্তি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সেকান্দরপুর মৌজার ১/২ খতিয়ানের ৭৬০, ৭৫১ আরএস ১৪৬০, ১৪৬৯ দাগের প্রায় ৭৫ শতাংশ জায়গা দীর্ঘদিন যাবৎ পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। জাগায়টির পাশেই গ্রামের একমাত্র শ্মশান, কালীমন্দির এবং দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত আখড়া। আকল দাশ ভুমিহীন হিসেবে স্থায়ী বন্দোবস্থ নিলেও সেখানে মাছ চাষের চেষ্টা করে আসছেন তিনি। তাছাড়া তিনি ভুমিহীন নন, আত্মীয় স্বজন, স্ত্রী-পুত্র ধন-সম্পদ নিয়ে বেশ সুখেই আছেন তিনি।

ওই আরেক মুক্তিযোদ্ধা বুলু দাশ জানান, আকল দাশের পরিবার প্রতারণার মাধ্যমে শ্মশানের জায়গাটি বন্দোবস্থ নিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামবাসী ধর্মীয় কাজে জায়গাটি ব্যবহার করে আসছে।

বিনয় তালুকদার নামে আরেক ব্যক্তি জানান, আকল দাশ প্রতারণার মাধ্যমে তথ্য গোপন করে সরকারী জায়গা বন্দোবস্থ নেন। পরে তিনি ওই জায়গা আবার বিক্রি করে দেন, যা নিয়ম বহিভূর্ত।

কৃপেন্ড দাশ জানান, আকল দাশ সরকার থেকে বন্দোবস্থ নিয়ে জায়গা বিক্রি করে দেন। একই পরিবারের ৩জন লোক পরপর ৩টি জায়গা বন্দোবস্থ নিয়েছেন এবং এগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। এদিকে, জায়গাটি উদ্ধারে গ্রামবাসী ঐক্যবন্ধ হয়ে শীঘ্রই বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে জানা গেছে।

(টিএইচ/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test