E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়ার স্কুলে ভূত তাড়াতে কমিটি গঠন !

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৮:৩২:২৫
কলাপাড়ার স্কুলে ভূত তাড়াতে কমিটি গঠন !

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবার ভূত তাড়াতে কমিটি গঠন করা হয়েছে । আজ বুধবার স্কুলের ক্লাস বন্ধ রেখে ছয় গ্রামের মানুষ, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এ কমিটি গঠন করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিনকে প্রধান করে এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম মুকুল ও একই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইসমাইল।

গত এক মাস ধরে বিদ্যালয়ে একেরপর এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসকরা তাদের অসুস্থতার কারণ খুঁজে না পায়নি। এ কারণে বিদ্যালয়ে জ্বীন, ভূত থাকতে পারে এ আশংকায় ওজা ও ফকির এনে এ ঝাড়ফুঁকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানাযায়, গত মঙ্গলবার হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী সুমি ও ফাতেমা বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এআগেও গত ১৯ আগষ্ট বিদ্যালয়ের লাবনী বৈদ্য, নিশি আক্তার, সোহেল, জান্নাতী ও ষষ্ঠ শ্রেণীর সুমি, রোজিনা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের কলাপাড়া ও বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হলেও এখনও সুস্থ্য কিংবা তারা কি রোগে আক্রান্ত ও রোগের কারণ বের করতে পারেনি চিকিৎসকরা। অধিকাংশ গ্রামবাসীর আশংকা অসুস্থদের জ্বীন ও ভূতে ধরেছে।

ওজা ও ফকির দেখালে ঠিক হয়ে যাকে। ইতিমধ্যে দশম শ্রেণীর ছাত্রী নিশিকে তার পিতা মির্জাগঞ্জ এক পীরের মাজারের পুকুরে গোসল করিয়ে এনেছেন তার পিতা নজরুল শেখ। কিন্তু সে এখনও অসুস্থ। এ ভূত আতংকের কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি কমে গেছে। অভিভাবকরা এ ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। অভিভাবকদের দাবি ঘটনার পরই একজন হুজুর এনে ঝাড়, ফুঁক করালে তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে আতংকে থাকতেন না। আর এখন প্রতিদিনই কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এভাবে অসুস্থ হতে থাকলে কোন বাবা-মা শান্তিতে থাকতে পারে।

হাজীপুর গ্রামের আলমগীর তালুকদার বলেন, তার মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিন বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী। ভূত-প্রেত আতংকে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে ভয় করছেন। একই কথা বলেন অন্য অভিভাবকরা। তাই আজ স্কুলে মিটিংয়ে এসেছেন একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।

অসুস্থ লাবনীর বাবা হৈবাল বৈদ্ধ জানান, তার মেয়ে এখনও সুস্থ্য হয়নি। লেখাপড়াও বন্ধ। এ অবস্থা কতোদিন চলবে। তাই সকল অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী ও ছয় গ্রামের পাঁচ শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে আজকের সভায় একজন ফকির ও হুজুর এনে স্কুলের ভূত তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিন ক্লাস বন্ধ রেখে ভূত তাড়ানোর মিটিংয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, অভিভাবকরা চাইলে আমার কি করার আছে। তাই তাদের কথায় আমি রাজি হয়েছি। তকে ক্লাস বন্ধ রেখে এ মিটিং করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে মিটিংয়ে পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে জানান।

কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রুহুল আমিন জানান, কোন ছুটি ছাড়া কেউ স্কুল বন্ধ রেখে এভাবে মিটিং করতে পারে। বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ নিবেন বলে তিনি জানান। তাছাড়া স্কুলে ভূত তাড়াতে কমিটি গঠন প্রসংগে বলেন, এই যুগে কেউ এগুলো বিশ্বাস করে। এগুলো কুসংস্কার।

(এমকেআর/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৪)







পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test