E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অসুস্থ বাবার সামনে তরুণকে মুখে জুতা মারতে বাধ্য করা সেই ছাত্রলীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

২০২১ ডিসেম্বর ১১ ১৭:৪৩:০৫
অসুস্থ বাবার সামনে তরুণকে মুখে জুতা মারতে বাধ্য করা সেই ছাত্রলীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ দল থেকে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল সাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়। 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় আদর্শ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আরিফুজ্জামান বিপাশকে মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এদিকে নিজের জুতা খুলে নিজ দলেরই এক কর্মীর মুখে জুতা মারা প্ররোচনার খবর ফেসবুকসহ নানা গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

উল্লেখ্য, হোসেন সরকার নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী তার অসুস্থ পিতার পাশে ছিলেন মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। খবর পেয়ে দলবল নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ হাসপাতালে আসেন। এসে তিনি নানা কথাবার্তার মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুর আজম খান চঞ্চলের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণ জানতে চান। হাসান সরকার এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি বিপাশের পায়ে ধরে ক্ষমা চান। এক পর্যায়ে নিজের জুতা খুলে এগিয়ে দেন হোসেন সরকারের সামনে। মারতে বলেন মুখে। মহেশপুর হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অসুস্থ পিতা গিয়াস উদ্দীন সরকার এই দৃশ্য দেখে হতবাক ও আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিজের ছেলে মুখে জুতার বাড়ি মারতে দেখে আরো অসুস্থ হয়ে পড়লে পিতা গিয়াস উদ্দীন সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগ এখন নানা কর্মকান্ডে সমালোচিত। এর আগে সভাপতি বিপাশ মহেশপুর হাসপাতালের ডাক্তার পিটিয়ে আলোচনায় আসেন। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি মিটে যায়। ডাক্তার পেটানোর খবর বাসি হতে না হতেই সাবেক ছাত্রলীগ সম্পাদক হারুন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চিকিৎসকরা আন্দোলনের হুমকী দেন। মহেশপুর থানায় মামলা করা হয়। মহেশপুর ছাত্রলীগের এ সব কর্মকান্ডে স্থানীয় মানুষ এক রকম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জুতা মারার ঘটনা সরাসরি অস্বীকার না করে ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান বিপাশ বলেন, হোসেন সরকারের অসুস্থ পিতাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন। এ সময় হোসেন সরকার দুঃখ প্রকাশ করে তার কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা চয়ে বলেন, ‘এত দিন আপনাদের সঙ্গে বিরোধ করে এসেছি, অথচ আপনারা আমার বাবাকে দেখতে এসেছেন। ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেন, ওই কর্মী নিজেই তাঁকে জুতা দিয়ে মারতে বলেন। তখন তিনি নিজে না মেরে পা থেকে জুতা খুলে এগিয়ে দেন।

হোসেন সরকারের ভগ্নিপতি মোমিনুর রহমান বলেন, তার শ্যালক ছাত্রলীগ করেন ও প্রতিপক্ষ নবী নেওয়াজ গ্রুপের সঙ্গে ছিলেন। ফলে ফেসবুকে দলের গ্রুপিং লবিং নিয়ে লেখালেখি করে। এই লেখালেখি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ ক্ষুব্ধ হন।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test