E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁ সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট তৎপর

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১৮ ১৬:৫৪:৫৬
নওগাঁ সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট তৎপর

নওগাঁ প্রতিনিধি : আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজা ও পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলার সাপাহার, পত্নীতলা, ধামইরহাট ও পোরশা উপজেলার সীমান্ত এলাকাগুলিতে ব্যাপক চোরাচালান শুরু হয়েছে। সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া, কলমুডাঙ্গা, আদাতলা, পাতাড়ী, বামনপাড়া, সোনাডাঙ্গা, পত্নীতলা উপজেলার হাটশাওলী, রাধানগর, শীতলমাঠ, ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন, শিমুলতলী এবং পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টগুলি এখন চোরাকারবারীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এ সব সীমান্ত এলাকা দিয়ে বানের পানির মত ভারত থেকে আসছে গরু, মহিষ, শাড়ি, থ্রিপিস, মরণনেশা হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের মাদক দ্রব্য।

চোরাচালানীর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হচ্ছে চোলাইমদ। নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতিহাট ঋষিপাড়া চোলাই মদের অবৈধ ডিপো থেকে চোলাই মদ সংগ্রহ করে আনা হয় শহরের নুনিয়াপট্টি ও সংলগ্ন হরিজন পল্লীর আশেপাশে। সেখানে দেদার বিক্রি হচ্ছে এই চোলাই মদ, ফেন্সিডিল, হেরোইনসহ নানা নেশাজাত দ্রব্য। পুলিশ, র‌্যাব মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের মাসোহারা চুক্তিতে এসব মাদকব্যবসায়ীরা বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী এলাকার এক শ্রেণীর মানুষ টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে রাতের অন্ধকারে ছুটছে সম্পুর্ন অবৈধ পন্থায় ভারতের অভ্যন্তরে। চোরাকারবারীর পন্য সামগ্রী গরু-মহিষ আনতে ইতোমধ্যে অনেকেই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা খাটছে ভারতের কারাগারে। অনেককেই প্রাণ পর্যন্ত দিতে হয়েছে বিএসএফের হাতে।

সোমবার ও মঙ্গলবার দু’দিনে উপজেলার কলমুডাঙ্গা এবং হাপানিয়া সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের নির্যাতনে দু’বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তবুও চোরাকারবারীরা চোরাচালান কাজে এতটুকুও নিরুৎসাহিত হয়নি। বরং তারা তাদের চোরাকারবারীর মাত্রা আরও দ্বিগুন হারে বাড়িয়ে দিয়ে পাল্লা দিয়ে চালাচ্ছে তাদের চোরাকারবারী ব্যবসা। অবৈধ পথে আসা ভারতীয় এসব গরু-মহিষ এর সাপাহারে বিট করিডোরে সরকারিভাবে ট্যাক্স দিয়ে এটিকে বৈধ করার একটি পন্থা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছেনা। অসাধু চোরাকারবারী সদস্যরা বিভিন্ন প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, বিজিবি সদস্যদেরকে ম্যানেজ করে একই কাগজে কম পক্ষে ১০/১২টি গরু মহিষ বৈধ করছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব । অবৈধ টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিজিবি সদস্য ও চোরা কারবারীদের সঙ্গে যখনই কোন মতানৈক্য হচ্ছে, তখনই বিজিবি সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন রাস্তা থেকে হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা ভারতীয় ওই সব গরু-মহিষের সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও গরু মহিষগুলি ধরে নিয়ে যাচ্ছে। চোরা কারবারী ও বিজিবির রোষানলে পড়ে সাধারণ মানুষও চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছে।

বর্তমানে এসব সীমান্তে চোরাচালান বৃদ্ধি পাওয়ায় আর এক শ্রেণীর চোরাকারবারী দেশের যুবসমাজ ধ্বংসকারী মরণ নেশা হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ দেদারছে আমদানী করছে। পরে অতি সহজে এসব নেশা পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন যুব সমাজ ও ছাত্র সমাজসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষের হাতে। আসক্ত হয়ে পড়ছে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। মেধা শূন্য হয়ে পড়ছে জাতি। চিন্তা ও বিষন্নতায় ভূগছে অভিভাবক মহল। এলাকাবাসী বলছে রাত হলেই ওই সব সীমান্ত এলাকাগুলি চোরা কারবারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে।

এ বিষয়ে সংলিষ্ট সীমান্ত এলাকার বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডাররা এসব তথ্য অস্বীকার করেছেন। এ সব অপশক্তি বিশেষ করে মরন নেশা থেকে জাতিকে বাঁচাতে এলাকার সচেতন মহল সরকারের সংল্লিষ্ট দপ্তরের কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(বিএম/এএস/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৪)


পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test