E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরবে পাওনা টাকা উদ্ধারে আদালতে মামলা করে উল্টো বাদীই আসামি!

২০২২ জানুয়ারি ০২ ১৮:৪৮:২৯
ভৈরবে পাওনা টাকা উদ্ধারে আদালতে মামলা করে উল্টো বাদীই আসামি!

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করার জের ধরে বাদী ও তার পরিবারের আরো তিন সদস্যের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই বিষয়ে ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুরের কমলার মোড় এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম (দুঃখু মিয়া) দৈনিক পূর্বকণ্ঠ অফিসে তার অভিযোগ উল্লেখ করে বলেন, জগন্নাথপুর কমলার মোড় এলাকার মৃত আঙ্গুর মিয়ার ছেলে বিজয় মিয়াকে কয়েল কারখানার ব্যবসার পার্টনারের জন্য ৪ এপ্রিল ২০২০ সালে ছয় লাখ টাকা দেয় আমি। বিজয় মিয়া ব্যবসার যাবতীয় দেখাশোনাসহ ক্যাশ পরিচালনা করত।

দীর্ঘদিন সে আমাকে কোনো টাকা দিত না। যার কারণে আমি বিজয় মিয়া’কে ব্যবসা হিসাব হালনাগাদ করার জন্য বললে সে আমাকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তালবাহানা করে সময় পার করত। পরবর্তীতে ২০২১ সালের নভেম্বর ৯ তারিখে রাত আনুমানিক ৯টার সময় বিজয় মিয়াকে কমলার মোড় সংলগ্ন কাঞ্চন মিয়ার বাড়ির সামনে দেখা হলে ব্যবসার হিসাব হালনাগাদ করার বিষয় তাকে আবার জিজ্ঞাসা করলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পাওনা টাকার কথা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে অস্বীকার করে এবং পরিকল্পিতভাবে আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে আক্তার, উজ্জ্বল ও সোহরাব কে নিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। এই সময় আমাকে খুন করার উদ্দেশ্য তারা আমার অ-কোষ চাপ দিয়ে ধরে এবং কিল ঘুষিসহ ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে আমার বাম কানে বারি দিয়ে আমার কানের পর্দা ফাটিয়ে গুরুত্ব রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে বাজিতপুর ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ওই হাসপাতাল থেকে ঢাকার জাতীয় নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউটে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে। এই বিষয়ে প্রথমে ভৈরব থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। পরে আমি বিচারের আশায় ২০২১ সালের ডিসেম্বর ১ তারিখে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলাদত নং-২ এ বিজয় মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া, আক্তার হোসেন ও সোহরাব মিয়া’কে আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করি।

তারই প্রেক্ষিতে বিজয় মিয়া আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ৪নং আসামি সোহরাব মিয়াকে বাদী করে উল্টো আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলা করেন। মামলায় আমাকেসহ মো. কপিল উদ্দিন, মো. ফরিদ মিয়া ও তারেক মিয়াসহ ৪ জনকে আসামি করা হয়। যার মধ্যে মো. কপিল উদ্দিন ও মো. ফরিদ মিয়া এই দুইজন আমার মামলার স্বাক্ষী। তারা যেন সত্যটা আদালতে না বলে তাই তাদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় তাদেরও জড়ানো হয়।

এছাড়া মামলার বাদী মো. সোহরাব মামলার এজাহারে লিখেছেন আমরা নাকি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বাণিজ্য উন্নতি দেখে তার নিকট তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করি। এমনকি আমি নাকি তাকে মাটিতে ফেলে তার বুকে ছুড়ি ধরে টাকা দাবি করি। যা সে দিতে অস্বীকার করলে আমরা নাকি তাকে খুন জখমের হুমকিসহ বাড়িঘর আগুন দিয়ে জালিয়ে পুড়িয়ে দেশ ছাড়া করব বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।

মামলার বাদী মো. সোহরাব যে আমার উপর হামলা করেছে তা থেকে সে বাঁচতে এবং আমার টাকা আত্মসাতসহ আমাকে হয়রানি করতে এই মিথ্যা বানোয়াট মামলা করে সে। তাই আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করে আমাদের নামে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা থেকে যেন অব্যাহতি দিয়ে আমার পাওনা টাকা ফিরে পাই এই জন্য আমি প্রশাসনের নিকট সঠিক বিচারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. সোহরাব হোসেন মুঠোফোনে জানান, আমার দাদা ও দুঃখ মিয়ার দাদা আপন ভাই। আমার বড় ভাই বিজয় মিয়ার একটা জায়গা আছে ওই জায়গাটা বিক্রি করতে চাইলে ওই জায়গা থেকে নজরুল ইসলাম (দুঃখু মিয়া) জায়গার মারফত তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে আমরা টাকা দিতে অস্বীকার করি।

এছাড়া ছয় লাখ টাকা ও মারপিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমার বিষয়ে যা অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমনকি স্বাক্ষীগণের সামনে তার ছয় লাখ টাকা আরো আগেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে এখন আর কোনো টাকা পাই না। আমাদের হয়রানি করার উদ্দেশ্য সে কোর্টে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test