E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উপকূলে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, আটক ১৫ 

২০১৪ সেপ্টেম্বর ২০ ১৪:৩৩:০৫
উপকূলে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, আটক ১৫ 

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনসহ উপকুলীয় এলাকার খাল-বিলে নির্বিচারে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের মহোৎসব চলছে। একই সাথে অপরিকল্পিত ভাবে চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ি পোনা আহরণ। বিষ দিয়ে মাছ ধরে শিকারিরা ধবংস করছে বিভিন্ন মাছের পোনা । আর সুন্দরবনের অভ্যন্তরে খালের বিষাক্ত পানি পান করে মরে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী।

গত ১০ দিনে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে থেকে বন অভ্যন্তরের খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে ১৫ জনকে আটক করেছে বনরক্ষিরা। ভাবে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও চিংড়ি রেনু আহরণের ফলে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়ছে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীসহ মৎস্য ভান্ডার। রাজনেতিক প্রভাবশালীরা সুন্দরবন বিভাগের এক শ্রেণী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে এভাবে বিষ দিয়ে করছে মাছ শিকার। এমনই অভিযোগ উপকূলের সাধারণ মানুষের।


সুন্দরবন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের ১’হাজার ৮’শ বর্গকিলোমিটার জলাভূমির মধ্যে ৮ শ বর্গ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র উপকুল ও বনের অভ্যন্তরে জলাভূমির আয়তন ৯শ”৬০ বর্গ বর্গকিলোমিটার। মাত্র কয়েক বছর আগে এসব জলাভূমিতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাছের উৎপাদন ছিলো ৪ মেট্রিক টনের বেশি। বছর জুড়ে বনের অভ্যন্তরে অপরিকল্পিত ভাবে নেট জাল দিয়ে চিংড়ি পোনা সংগ্রহ ও বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করায় ধবংস হচ্ছে অনান্য মাছের পোনা । সুন্দরবন অভ্যান্তরে খালে বিষ ও নেট জাল দিয়ে রেনু পোনা আহরণের নামে যারা মৎস্য ভান্ডার ধংস করছে তারা দাবী করছে জীবন বাঁচানোর তাগিদে তারা এ কাজ করে চলছে।


সুন্দরবনে বনবিভাগের মাধ্যমে মৎস্য খাত থেকে প্রতিবছর ২ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়। অপরিকল্পিত ভাবে পোনা আহরণ ও মাছ শিকার করায় রাজস্ব আয়ের চেয়ে বহুগুন বেশি ঘাটতি হচ্ছে বন্যপ্রাণী ও মৎস সম্পদের । কয়েক বছর আগেও দেশের বিশাল জনগোষ্ঠির চাহিদা পূরণ করলেও এখন উপকুলীয় অঞ্চলের হাট বাজারে সামুদ্রিক মাছের অকাল দেখা দিয়েছে। খাদ্যের সন্ধানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ অনান্য বন্যপ্রাণী সুন্দরবনের উপকুলীয় এলাকায় এসে বনের অভ্যন্তরের নদী-নালা,খা-বিল ও লেকে এসব বিষাক্ত পানি পান করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে। আর এভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর প্রজনন মারাত্বক হুমকির মুখে পড়ছে।


সুন্দরবন পুর্ব বিভাগীয় (ডিএফও) কর্মকর্তা আমীর হোসেন চৌধুরী জানান, বনের অভ্যন্তরে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও রেনু আহরণ রোদে তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি জন সচেতনতা সৃষ্টির করা প্রয়োজন। এঘটনায় কোন বন কর্মকর্তার সংশ্লিটতা প্রমানিত হলে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানান ডিএফও।


বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র মন্ডল জানান, সুন্দরবনের একটি অংশ বাগেরহাট জেলার হলেও বাগেরহাট মৎস্য বিভাগের সেখানে কোন কর্তৃত্ব নেই। ওই এলাকা দেখভাল করে সুন্দরবন বিভাগ। তিনি জানান,এভাবে নির্বিচারে পোনা আহরণ ও মৎস্য শিকার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যেই ২’শ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। আর তাই শুষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী সুন্দরবনের অভ্যন্তরে মাছ আহরণ করা হলে আমিষ ও বন্যপ্রাণী বাচাঁনোসহ সব ধরণের ঘাটতি মিটিয়ে প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

(একে/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৪ )



পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test