E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রশ্নফাঁসে জড়িত রূপাকে বগুড়া জেলা আ. লীগ থেকে অব্যাহতি

২০২২ জানুয়ারি ২৪ ১৮:৩৬:৫১
প্রশ্নফাঁসে জড়িত রূপাকে বগুড়া জেলা আ. লীগ থেকে অব্যাহতি

এটিএম রাশেদুল ইসলাম, বগুড়া : হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঢাকায় নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার মাহবুবা নাসরীন রূপাকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-রাজী জুয়েল রবিবার (২৩ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে অব্যাহতি এবং সোমবার (২৪ জানুয়ারি) উপজেলা আওয়ামী লীগ হতে বহিষ্কারের কথা নিশ্চিত করেছেন। রূপা গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি বগুড়া শহর ও তার গ্রামের বাড়ি দুপচাঁচিয়া উপজেলায় প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-রাজী জুয়েল জানান, দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রূপা কখন কিভাবে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ পেয়েছেন; সে সম্পর্কে তারা অবগত নন। তার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, প্রশ্নফাঁসে রূপার জড়িত থাকার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তার এই কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সোমবার (২৪ জানুয়ারি, ২০২২) দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ হতে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তি অাকারে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো হবে বলে জানান।

জানা যায়, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রূপা দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভুঁইপুর গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের কন্যা। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। তার প্রয়াত বাবা আতাউর রহমান ঢাকায় একটি বেসরকারি অফিসে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে রূপা ঢাকায় বাবার কাছে থেকে লেখাপড়া করেন। ২০১৯ সালের মার্চে দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর এলাকায় তার পরিচিতি প্রকাশ পায়। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক পরিচয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ণ হন এবং জয়ী হন। তিনি মহিলা ভাই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তার বাবাকে হারান। নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ গ্রহণের পর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের আশীর্বাদে উপজেলা পরিষদের প্রথম সভাতেই তিনি প্যানেল চেয়ারম্যান-০১ নির্বাচিত হন। তিনি ভুঁইপুর গ্রামে বসবাস না করে গোবিন্দপুরের পালিমহেশপুর গ্রামে বড় বাবা (চাচা) দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে থাকতেন। বড় বাবার বাড়িতে অবস্থান করেই তিনি আপন ভাই রকিবুল হাসান রকিকে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি দেখিয়ে তিনি এলাকায় প্রভাব খাটাতেন। তার হস্তক্ষেপে হাইব্রিড নেতাদের নিয়ে দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে রূপার বড় বাবা (চাচা) সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে পড়ার সময় ঢাকার জিরানী বাজার এলাকায় একজনের সঙ্গে রূপার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ হয়। তার বাবা-মা নেই। ছোট বোন শিউলী স্বামীর বাড়িতে এবং ছোট ভাই রকি ঢাকায় লেখাপড়ার কারণে মাঝে মধ্যে রূপার বাসায় অবস্থান করতো। তার বিষয়ে খারাপ কিছু শুনিনি।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুর রহমান জানান, রূপা দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নন। তিনি কীভাবে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য হলেন তা জানা নেই। অপরাধ যেই করুক, দল কোনো দায়িত্ব নেবে না।

(এআর/এসপি/জানুয়ারি ২৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test