E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার’

২০২২ জানুয়ারি ২৯ ১৮:৪১:১২
‘প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার’

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ১৫ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা অর্ধেক। অপরদিকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৯.৭ শতাংশ মানবসন্তান প্রতিবন্ধী। সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ২৭ লাখ প্রতিবন্ধী রয়েছে বাংলাদেশে। সাতক্ষীরার ক্ষেত্রে এই হিসাব ৪৬ হাজারে পৌঁছেছে। 

শনিবার এই তথ্য উপস্থাপন করে বেসরকারি সংস্থা ডব্লিউডিডিএফ (উইমেন্স উইথ ডিজঅ্যাবলড্ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) এর আয়োজকরা বলেন, সমাজ জুড়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নারী প্রতিবন্ধীরাও একই ধরনের সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। তারা পরিবার থেকে অবহেলা এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে সহিংসতার মুখে পড়ছেন। আলোকিত সমাজে তারা আসতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছেন।

সংস্থাটির উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা বলেন, এমন অবস্থা থেকে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে হলে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী নারী শিশু ও পুরুষদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে তারা উপকৃত হবে। এজন্য দেশের গনমাধ্যমগুলি এসব বিষয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করে সমাজকে আরও সচেতন করতে পারে। একইসাথে বিচারপ্রার্থীদের জন্যও বিচার পাওয়া অনেকটাই সহজ হতে পারবে। সংবাদপত্রে প্রতিবন্ধীদের নানা ধরনের সফলতার কথা তুলে ধরে তাদের উৎসাহ যোগানো যেতে পারে।

সাতক্ষীরা শহরের অদূরে তুফান কনভেনশন সেন্টারে ‘প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি সহিংসা দূরীকরনে গনমাধ্যম সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ডব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন্নাহার মিষ্টির সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন সাতক্ষীরা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন নাহার, সমাজসেবক ডা. আবুল কালাম বাবলা ও প্রেসক্লাব সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী।

জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান নিজের বিবেককে অন্যের বিবেকের কাছে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মধ্যে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা থাকাটা জরুরী। তাদের চাহিদার কথা সরাসরি উচ্চারন করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, একজন প্রতিবন্ধী প্রথমেই পারিবারিক বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। এরপর সমাজেও তিনি একই অবস্থায় অবহেলিত থাকেন। ১৯৭২ এর পবিত্র সংবিধানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল নাগরিকের সমান অধিকার এবং আইনের চোখে সবাই সমান এমন কথা উল্লেখ থাকলেও সামাজিক বাস্তবতায় আমরা সেই লক্ষ্যে পৌছাতে পারছি না।

তিনি বলেন, যারা বিচারপ্রার্থী হন তাদের পক্ষে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত থাকতে হয়। একজন বিচারক কেবলমাত্র আইনের চোখ দিয়েই এসব মামলা বিচার করে থাকেন। ফলে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে যথাযথভাবে মামলা না করা গেলে একজন বিচারপ্রার্থী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতেই পারেন। সাতক্ষীরায় সাড়ে ৬২ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে জানিয়ে জেলা ও দায়রা জজ বলেন, এর জন্য এককভাবে বিচারক নন, আমরা সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ী।

জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান আরও বলেন, প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। এজন্য গ্রাম পর্যায়ের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা তালিকা তৈরী করে তাদেরকে সরকারি সহযোগিতা পৌছে দেওয়া একইসাথে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় বরং তাদেরকে কর্মীর হাতে পরিনত করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাদেরকে স্কুলকলেজে শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সব ধরনের সুযোগ করে দিতে হবে। তাদের প্রতি কোনরকম বৈষম্যমূলক আচরন না করে মানবিক দৃষ্টিতে তাদের লালন করতে হবে। কর্মশালাটির সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ হুমায়ুন কবির।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test