E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হবিগঞ্জ শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ টমটম দানব

২০২২ ফেব্রুয়ারি ০৪ ১৭:৪৯:১২
হবিগঞ্জ শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ টমটম দানব

তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ব্যাটারী চালিত যানবাহন টমটম। কথিত পরিবেশ বান্ধব অনিবন্ধিত এ যানবাহন শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও নাম্বার প্লেট নামক লাইসেন্সে বাধাহীনভাবে এসব যান চলছে। হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার খোয়াইমূখ, হবিগঞ্জ সদর থানার সামনে, শায়েস্তানগর পয়েন্ট, নতুনবাস স্ট্যান্ড মোতালিব চত্তর, ধুলিয়াখাল পয়েন্টে এবং শহরের ব্যস্ততম এলাকার প্রবেশের দ্বারে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে এই অবৈধ যানবাহন। অভিযোগ আছে, কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই এসব যান হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করছে। শহরের ব্যস্ততম এলাকা থানারহাট মোড়, হবিগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র এটি।

জেলার একমাত্র চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থল ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোনালী ব্যাংক হবিগঞ্জ শাখা, হবিগঞ্জ আদালত পাড়া এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ আশ-পাশে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অফিস থাকায় সব সময়ই লোক সমাগম বেশী থাকে এখানে। পাশাপাশি ছিচকে চোর, পকেটমার, মহিলা ছিনতাইকারী এমনকি সন্ত্রাসী হামলারও শিকার হয়েছেন অনেকেই।

লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে এ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে সব সময়ই ১০/১৫টি টমটম অবৈধ ভাবে দাড়িয়ে থাকে। প্রতিটা টমটমে ৮জন যাত্রী হবার আগে এরা যায় না। যাত্রী হয়রাণি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কোন প্রশ্ন করলেই উত্তর দেয়, ‘‘এমনি-এমনি বসিনি এখানে, কি করবেন আপনি করেন’? সরেজমিনে শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান ডাকঘর এলাকায় সড়কের দুই পাশে মাত্রাতিরিক্ত টমটম চলাচলের কারণে যানজট লেগেই থাকে। এসব যানের চাপে সড়ক দিয়ে পথচারীদের ফাঁকফোকর খুঁজে কায়দা করে চলতে হয়। নতুন ও পুরোনো বাসস্ট্যান্ড, চৌধুরীবাজার, বাইপাস রোড, পুরোনো খোয়াই ব্রিজ, কালীবাড়ি, তিনকোনা পুকুরপাড়, সবুজবাগ, এম এ মোত্তালিব চত্বর, টাউন হল, পুরোনো হাসপাতাল সড়ক, বাণিজ্যিক এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই থাকে।

সব মিলিয়ে ব্যাটারিচালিত টমটম ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে প্রায় ৬ হাজার। এছাড়াও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্যাডেল রিকশা, পিকআপ, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে আরও কয়েক হাজার। এর মধ্যে আবার শহরের অভিজাত বিপণিবিতান (মার্কেট) ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ দোকানগুলোর সামনে নেই কোনো পার্কিং ব্যবস্থা। শহরের সড়কগুলোও অপ্রশস্ত। যেকারণে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাটারিচালিত হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারাদেশে টমটমের চলাচল নিষিদ্ধ হলেও পৌরসভা গত ১ বছর আগে এসব টমটম চলাচলে নিয়মিত নম্বর প্লেট ইস্যু করছে। একেকটি টমটম নিবন্ধনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে আট হাজার টাকা দিয়ে নম্বর প্লেট নিতে হয়েছে।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ আতাউর রহমান সেলিম জানান, হবিগঞ্জ পৌরসভা থেকে শহরে টমটম স্ট্যান্ডের কোন অনুমোতি দেয়া হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় এনে ভাড়া এবং চালকের বয়স নির্ধারণ করা হবে।

হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. মাসুক আলী জানান, দাড়িয়ে থাকা টমটম গুলো পুলিশের চোখে পড়লে তাড়িয়ে দেয়া হয়। পুলিশের চোখের আড়ালে এরা এ ধরনের কার্যক্রম করতে পারে।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (হবিগঞ্জ) মো. হোসেনুজ্জামান জানান, ট্রাফিক পুলিশের চোখে পড়লে এরা থাকে না। শহরে টমটম পাকিংয়ের কোন অনুমোতি নেই।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, 'সুস্থ নগরায়ণের অন্যতম অন্তরায় ব্যাটারিচালিত টমটম। অকেজো হয়ে যাওয়া টমটমের ব্যাটারি যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর এ রকম হাজার হাজার ব্যাটারির কারণে বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এসব ব্যাটারি চার্জ দিতে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে বড় মাপের বিদ্যুৎ।

(টিএইচ/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test