E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিরল স্থলবন্দরের অধিগ্রহণকৃত জমি বেদখল!

২০২২ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১২:৪১:৫৮
বিরল স্থলবন্দরের অধিগ্রহণকৃত জমি বেদখল!

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : সড়ক এবং রেলপথে বাংলাদেশের সাথে ভারত, নেপাল ও ভুটানের একমাত্র পণ্য আমদানী রফতানির বাণিজ্যদ্বার দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে অচিরেই চালু হচ্ছে। ইতোমধ্যে রেলপথ চালু হয়েছে। এখন শুধু ভারতের অভ্যন্তরে দেড়’শ গজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলেই শুরু হবে পুরোদমে আমদানি রফতানি কার্যক্রম। সড়ক পথে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ স্থলবন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে স্থাপনা গড়ে ওঠার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে হাজার হাজার মানুষের। তবে,স্থলবন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার আগেই দলীয় প্রভাবে একটি চক্র সরকারের অধিগ্রহণকৃত ১৭ একর জমি’র অধিকাংশই অবৈধ দখলে নিয়েছে। প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন, অবৈধ স্থাপনা।

২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল ভারত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের রাধিকাপুর থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত সীমান্ত পথে রেল কানেকটিভিটি চালু করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সীমান্ত পথে রেল কানেকটিভিটি ডিজেল বোঝাই ৪২টি ওয়াগান নিয়ে একটি ট্রেন চলাচল উদ্বোধন ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩সালে দিনাজপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিরল স্থলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর প্রতিশ্রুতি দেয়। যারই ফলশ্রুতিতে স্থলবন্দরের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন বিরল ল্যান্ড পোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন।

ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারত এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথে নেপাল, ভারত এবং মিয়ানমায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে মধ্যে সীমিত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চলতো বিরল স্থলবন্দর রেলপথ দিয়ে।কিন্তু ২০০৫ সালে ভারতের অংশের রেলপথ ব্রডগেজে রূপান্তরিত করায় তা বন্ধ হয়ে যায়। এরইমধ্যে বাংলাদেশের অংশে পাবর্তীপুর রেল জংশন থেকে বিরল সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তরিত হয়। ফলে দীর্ঘ ১২ বছর পর আবারো আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিলি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সীমান্ত রেল কানেকটিভিটি চালু করেন,বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন নিয়মিত এই সীমান্ত রেল পথটি চালু রয়েছে।ভারতের সাথে প্রয়োজনীয় পণ্য ও মালামাল আমদানী-রপ্তারি চলছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশ সমSহের সাথে আমদানী ও রপ্তানির কাজ ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণসহ সরকার ২০০২ সালে বিরলসহ ১৩ টি শুল্ক স্টেশনকে স্থল বন্দরে রুপান্তর করে। এই স্থলবন্দর দিয়ে পার্সপোর্টধারী যাত্রী পারাপার ধরে চালুও রয়েছে। করোনাকালীন ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর এ পথে পারাপার হয়েছে। স্থলবন্দর চালু’কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বেশকিছু স্থাপনা গড়ে উঠেছে এলাকায়। এ নিয়ে আশায় বুক বেধেঁছেন স্থানীয় মানুষ।

বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম.মোস্তাফিজুর রহমান বাবু জানান, এখন শুধু ভারতের অভ্যন্তরে দেড়’শ গজের সংযোগ সড়ক নির্মান হলেই শুরু হবে পূরোদমে আমদানি রফতারী কার্যক্রম। সড়ক পথে বানিজ্যিক কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিরল স্থলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে পর্যবেক্ষণে এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপিসহ মন্ত্রণালয় ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এ এলাকায় সরকারের অধিগ্রহনকৃত ১৭ একর জমি রয়েছে। কিন্তু তত্ত্বাবধানের অভাবে তা অধিকাংশ বেদখল হতে চলেছে। প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন,স্থাপনা। স্থল বন্দর পরিচালনার জন্য বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানকে ২৫ বছরের তত্বাবোধানের জন্য নিয়োগ করা হয়। বন্দর এলাকায় ১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করার পর ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর তৎকালীন এমপি সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. মাহবুবুর রহমান স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে শেষ সীমােেন্তর ঠনঠনিয়া এলাকায় বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন করেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দিনাজপুর-২ আসনের (বিরল-বোচাগঞ্জ) এমপি নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সহায়তায় পার্বতীপুর হতে বিরল সীমান্ত পর্যন্ত মিটার গেজ রেল লাইনকে ব্রোড গেজ রেল লাইনে রূপান্তর করা হয়। তারপর থেকেই অবৈধ দখল শুরু হয় সরকারের অধিগ্রহনকৃত ১৭ একর জমি। প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন অবৈধ স্থাপনা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরে নিয়ে অবৈধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল ও এলাকাবাসী।

(এসএএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test