E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

৭ মাসেও আসেনি সিআইডির ফরেনসিক রিপোর্ট 

ঝালকাঠিতে থমকে গেছে সরকারের দুই মন্ত্রীকে কটুক্তি মামলার কার্যক্রম

২০২২ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৮:১৩:২১
ঝালকাঠিতে থমকে গেছে সরকারের দুই মন্ত্রীকে কটুক্তি মামলার কার্যক্রম

এমদাদুল হক স্বপন, ঝালকাঠি : বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্র ও সেতু মন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে কুরুচি মন্তব্যে ঝালকাঠিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। দীর্ঘ সময়ে ঘটনার সিআইডি রিপোর্ট না পাওয়ায় থমকে গেছে মামলার কার্যক্রম। রিপোর্ট পেতে এ পর্যন্ত দু’দুবার তাগিদ পত্র পাঠানো হলেও সুফল পাওয়া যায়নি। মামলার একমাত্র আসামী  আক্কাস সিকদারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে একই ধারায় আরেকটি মামলায় পিবিআই চার্জশীট দাখিল করেছে। মামলাটির পরবর্তি তারিখ চার্জ গঠনের জন্য ধার্য্য আছে। 

এদিকে সরকারের মন্ত্রীদের নিয়ে ফেসবুকে কুরুচি মন্তব্য মামলাটির সাত মাস হয়ে গেছে। কিন্তু সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট না পাওয়ায় বার বার তারিখ পিছিয়ে যাচ্ছে। ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা বাদী হয়ে আক্কাস সিকদারকে আসামী করে মামলটি দায়ের করেন। গত ২৯ জুলাই ২০২১ তারিখ ঝালকাঠি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জসিম ঢাকায় সিআইডি রিপোর্ট চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময হলেও ঝালকাঠিতে রিপোর্ট না আসায় মামলটির কার্যক্রম থমকে যায়। এদিকে আসামী আক্কাস সিকদার উচ্চ আদালতের নির্দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ ঝালকাঠির ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। আদালত তাকে পুলিশ প্রতিবেদন না দেয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছে।

মামলার বিষয়ে ঝালকাঠি থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জসিম জানান, আমি এ পর্যন্ত ২ বার তাগিদপত্র পাঠিয়েছি। কিন্তু ঢাকার সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট না আসায় তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া যাচ্ছেনা।

গত ১৫ জুলাই ২০২১ তারিখ আক্কাস সিকদার ফেসবুকে স্বরাষ্ট্র ও সেতু মন্ত্রীর নাম বিকৃত করে তাদের চাঁদাবাজ বলে মন্তব্য করেন। তার এ মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় বিশেষ করে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তারা আক্কাস সিকদারের বিচার ও গ্রেফতার দাবি করে এ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে গিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আক্কাস সিকদারকে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতির অনুরোধ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সাময়িক ভাবে তাকে ঐ পদ থেকে সরিয়ে প্রবীন সাংবাদিক মানিক রায়কে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়।

ইতিমধ্যেই মামলা হওয়ায় আক্কাস সিকদার গ্রেফতার এড়াতে পলাতক হন। পরবর্তিতে আক্কাস সিকদার জামিন নিয়ে এলে তাকে আবার ঐ পদে পূনর্বহাল করা হয়। তাই এবারের প্রেসক্লাব নির্বাচনে সভাপতি পদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তার নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থী হননি। এমনকি এবারের নির্বাচনে আক্কাস সিকদার সমর্থিত সাবেক সভাপতি চিত্ত রঞ্জন দত্তের কোন পত্রিকা না থাকলেও তাকে ভোটার করা হয়। এ ঘটনায় দৈনিক ঝালকাঠি বার্তা পত্রিকার সম্পাদক প্রেসক্লাব সদস্য মাহাবুব আলম খান ভোটার তালিকায় চিত্ত রঞ্জন ঝালকাঠি বার্তা পত্রিকার নাম উল্লেখ করায় তীব্র প্রতিবাদ জানান। এমনকি নির্বাচন পরিচালককে এ বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন।

কিন্তু নির্বাচন পরিচালক এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে জানান, প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটি তাকে যে ভোটার তালিকা দিয়েছে তিনি তা যাচাই বাছাই করতে অপারগ। সাংবাদিকরা মনে করেন এই নির্বাহি কমিটির নেতৃত্ব দেন আক্কাস সিকদার। তাই তার আজ্ঞাবহ চিত্ত রঞ্জনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ টালবাহানা করে আমলে নেয়া হয়নি। এদিকে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবকে সিন্ডিকেটভুক্ত করে বার বার পদে থাকতে যোগ্য সদস্যদের সুযোগ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আক্কাস সিকদারের বিরুদ্ধে। ক্লাবের সদস্যরাই সম্প্রতি নির্বাচনে এ অভিযোগ সামাজিক মাধ্যমে করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এমনকি প্রেসক্লাবের বাহিরে ঝালকাঠিতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক থাকলেও তাদেরকে সদস্য না করতে টালবাহানার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিকরা বিষয়টি ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি আমির হোসেন আমুকে অবগত করেন। তিনি এ ব্যপারে ভার্চুয়াল বক্তব্যে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সকল সাংবাদিকদের সমন্বয়ে একটি গ্রহনযোগ্য কমিটি করার নির্দেশনা দিলেও তার বক্তব্যের মূল্যায়ন করা হয়নি অদ্যবধি।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test