সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির হায়দার আলী কমিশনের সাত সদস্যের কারণ দর্শাণোর সময় আবেদন আদালতে নামঞ্জুর

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : গঠণতন্ত্র বহির্ভূতভাবে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ঘোষিত নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. এসএম হায়দার আলীসহ সাত সদস্যের আদালতে কারণ দর্শাণোর জন্য সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। সময়ের আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে একইসাথে বৃহষ্পতিবারেই আপত্তি দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে রবিবার দু’ তরফা শুনানি অন্তে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জজ রাখিবুল ইসলাম।

সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার এ্যাড, কুন্ডু তপন কুমার জানান, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরি কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে আটজন পদত্যাগ করায় গঠণতন্ত্র অনুযায়ী ওই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। অথচ সাবেক কমিটির সভাপতি অ্যাড. আবুল হোসেন (২) ও সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান উল্লাহ সবুজ এক সভা ডেকে গঠণতন্ত্র বহির্ভুতভাবে ৩১ জানুয়ারি মনগড়া কমিটি গঠণ করে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রবীন আইনজীবী এসএম হায়দার আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিটি ভেঙে দেওয়ায় জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ তাকে (তপন) মোবাইল ফোনে হুমকি দেন।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অ্যাড. শাহানাজ পারেভিন মিলি, অ্যাড. সেলিনা আক্তার শেলী, অ্যাড. মিজানুর রহমান বাপ্পি, অ্যাড. এবিএম সেলিম, এ্যাড. নুরুল আমিনসহ কয়েকজন তার নির্বাচনী কার্যালয়ের একটি তালা ভেঙে অপরটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. আমিনুর রহমান চঞ্চল বাদি হয়ে অবৈধ নির্বাচন কমিশনারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই অবৈধ কমিটির কার্যত্রমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জজ প্রথম আদালতের বিচারক রাখিবুল ইসলাম বিবাদীদের দু’দিনের মধ্যে কারণ দর্শাণোর নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ি বাদিপক্ষকে মামলার কাগজপত্র দাখিল না করার অভিযোগ তুলে আদালতে সময়ের আবেদন করেন বিবাদীপক্ষ। আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করে বৃহষ্পতিবারেই আপত্তি দাখিল ও রবিবার দু’তরফা শুনানী অন্তে আদেশের জন্য দিন দার্য করেন।

অ্যাড. কুণ্ডু তপন কুমার আরো জানান, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারি আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পর্কিত তপশীল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী ৯ ফেব্রুয়ারী মনোনয়ন জমা দেওয়ার ধার্য দিন ছিলো। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আবুল হোসেন-সবুজ কমিটির গঠিত অবৈধ নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. এসএম হায়দার আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন তার অফিসের তালা ভেঙে নির্বাচনী কার্যালয় দখল করে নেন। বাধ্য হয়ে তিনি পুলিশকে অবহিত করে বিকেল চারটা পর্যন্ত আইনজীবী সমিতির নীচে মনোনয়নপত্র জমা নেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করার লক্ষে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান অ্যাড. কুণ্ডু তপন কুমার। এবার ৪৫৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে জানান তিনি। কার্যকরি কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে বৃহষ্পতিবার সাতজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করেছেন মর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানকে ঘিরে বৃহষ্পতিবারও আদালত চলাকালিন সময়ে আদালত চত্বরে পুলিশের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। তবে ১৩ জন আইনজীবীকে প্রাথমিক ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে প্রকৃত ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. কুণ্ডু তপন কুমারকে গত ৯ ফেব্র“য়ারি ডাকডোগে চিঠি দিয়েছেন অ্যাড. শাহজাহান জাহাঙ্গীর। ওই চিঠি বৃহষ্পতিবার দুপুরে গ্রহণ করেছেন অ্যাড. কুণ্ডু তপন কুমার।

এদিকে গঠণতন্ত্র বিরোধী নির্বাচন কমিশনার অ্যাড.এসএম হায়দার আলীর পক্ষ থেকে আগামি ২৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২)