E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২০ মাস পর নারায়নগঞ্জ থেকে উদ্ধার সাতক্ষীরার গৃহবধূ শারমিন 

২০২২ ফেব্রুয়ারি ১৫ ১৮:১১:৫৭
২০ মাস পর নারায়নগঞ্জ থেকে উদ্ধার সাতক্ষীরার গৃহবধূ শারমিন 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অপহরণের পর গুম বা পাচার হওয়া এক সন্তানের এক জননী শারমিন সুলতানাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন পিবিআই)। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলা সদরের মাসুমা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া গৃহবধু সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের হামিজউদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে ও ইটাগাছার হাবিবুর রহমানের স্ত্রী। উদ্ধার হওয়া শারমিন সুলতানা মঙ্গলবার সাতক্ষীরার জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের আদালতে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি থেকে শারমিন সুলতানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর শারমিন সুলতানার বাবা হামিজউদ্দিন হাওলাদার বাদি হয়ে ২৩ জানুয়ারি জামাতা শহরের ইটাগাছার হাবিবুর রহমান ও কুৃকরালির কবিরাজ ফয়জুর রহমানসহ ছয় জনের নামে মেয়েকে বিদেশে পাচারের অভিযোগে পাচার আইনের ৭, ৮ ও ১০ ধারায় সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান আট মাস পর গত বছরের ৮ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে ভিকটিম উদ্ধার না করা সম্পর্কে বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন। আদালত শারমিন সুলতানার স্বামী হাবিবুর রহমান ও কবিরাজ ফয়জুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়। পরবর্তীতে হামিজউদ্দিন হাওলাদার ওই মামলা প্রত্যাহার করে গত বছরের জুলাই মাসে হাবিবুর রহমান ও ফয়জুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ মামলা করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

কবিরাজ ফয়জুর রহমানকে গ্রেপ্তার করায় ১৬ দিন তাকে জেল হাজতে থাকতে হয়। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে উপপরিদর্শক অর্পণা বিশ্বাস তদন্তভার গ্রহণ করলেও ভিকটিম উদ্ধারের ব্যাপারে বেশিদূর অগ্রসর হতে না পারার বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়াটারকে অবহিত করা হয়। পুলিশ হেড কোয়াটারের নির্দেশে গত বছরের ১৮ অক্টোবর পিবিআই এর উপপরিদর্শক মোরশেদ আলম ওই মামলার তদন্তভার পান। তদন্তভার হাতে পেয়ে তিনি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিকটিম শারমিন সুলতানার অবস্থান নিশ্চিত করেন। এরই অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলা সদরের মাসুমা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে শারমিন সুলতানাকে উদ্ধার করেন।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা পিবিআই কার্যালয়ে শারমিন সুলতানাকে উদ্ধার সম্পর্কে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয়। প্রেস ব্রিফিংকালে শারমিন সুলতানা স্বামীর সঙ্গে বনাবনি না হওয়ায় কাউকে না জানিয়ে এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন বলে জানান। তার ঠিকানা বাবা বা পরিবারের স্বজনরা জানতো না বলে জানান শারমিন সুলতানা।

পিবিআই এর উপপরিদর্শক মোর্শেদ আলম জানান, শারমিনাকে কেউ অপহরণ বা পাচার করেনি এমন কথা স্বীকার করে সে মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের কাছে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test