E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রেফতার আতংকে ৬ গ্রাম, খাবারের কষ্টে ৫০০ পরিবার

২০২২ মার্চ ০২ ১৫:৩৯:০৮
ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রেফতার আতংকে ৬ গ্রাম, খাবারের কষ্টে ৫০০ পরিবার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থীর ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভোট পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪৫০ জনের নামে গত ২৭ ডিসেম্বর রুহিয়া থানায় মামলা করেন প্রিজাইডিং অফিসার তৌকির আহম্মেদ। ফলে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে আসাননগরসহ ৬ গ্রাম।সোমবার পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।এদিকে সহিংসতার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে এলাকায় গ্রেপ্তার আতংক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। মঙ্গলবার গ্রাম ঘুরে দেখা যায় রাস্তা ঘাটে মানুষের  জনসমাগম নেই। ঘর বাড়িতে রয়েছে নারী ও শিশুরা। এলাকার পুরুষরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশের ভয়ে।বাড়িতে নারী ও শিশুরা অজানা আতংকে সময় পার করছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসাননগর কেন্দ্রটিতে ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়।ঘোষিত ফলে সদস্য পদে মাসুদ রানা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহ আলমের চেয়ে ১০২ ভোট বেশি পান। কিন্তু ওই ফল প্রত্যাখ্যান করেন শাহ আলমের কর্মী-সমর্থকরা। পরে তারা লাঠিসোটা নিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে ও কেন্দ্রে হামলা চালায়। পুলিশ তাদের ছত্র ভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠি চার্জ করে।তাতেও কাজ না হলে আত্মরক্ষা করতে পুলিশ ২০ রাউন্ড গুলি চালায়।পুলিশের ছোড়া গুলিতে হামিদুর রহমান(৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হন। আহত হন আবু কালাম(৩২) নামের আরেক ব্যক্তি।

আসাননগর গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা জানান, ভোটের দিন মারামারির ঘটনায় আমার বাবা সহ অনেকের নামে মামলা করেছে পুলিশ। ফলে গ্রামে আর কোন পুরুষ মানুষ নেই। শুধু মসজিদের ঈমাম, মুয়াজ্জিন ছাড়া গ্রামের সব পুরুষ আত্মগোপনে গিয়েছেন। বর্তমানে আমরা সবাই আতংকের মধ্যে আছি।

একই গ্রামের মরিয়ম বেগম জানান,মারামারির সময় আমার স্বামী বাড়িতেই ছিলনা। তারপরও আমার স্বামীর নামে মামলা হয়েছে। আজ দুই মাস যাবত আমার স্বামী বাড়িতে নেই ঘরে খাবারও নেই। ১০ মাসের ছেলেটাকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারিনা। অন্যের বাড়ি থেকে খাবার চেয়ে বাচ্চাটাকে খাওয়াচ্ছি।

স্কুল শিক্ষার্থী তৃষা বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর। সারাদিন কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরে।আমার নির্দোষ বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমরা তিন বোন পুলিশের পা ধরে বলেছি আমার বাবা নির্দোষ। কিন্তু পুলিশ আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। বাবা একদিন কাজ না করলে আমাদের চুলায় আগুন জ্বলেনা।আজ ১১ দিন খুব কষ্টে আছি বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে তৃষা।

রুহিয়া থানার ওসি তদন্ত শহিদুর রহমান বলেন,রাজাগাঁও ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র দক্ষিণ আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারি কাজে বাঁধা, প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং এবং পুলিশের উপর লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার তৌকির আহম্মেদ বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।দ্রুত বাকিদের ও গ্রেফতার করা হবে।

(এফআর/এসপি/মার্চ ০২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test