E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাঁদা না পেয়ে দাগনভূঞায় ড্রীম লাইন স্পেশাল বাস ও কাউন্টারে হামলা

২০২২ মার্চ ০৪ ১৮:৫০:২১
চাঁদা না পেয়ে দাগনভূঞায় ড্রীম লাইন স্পেশাল বাস ও কাউন্টারে হামলা

নূরুল আমিন খোকন, ফেনী : ফেনীর দাগনভূঞায় ঢাকা-বসুরহাট রুটে নতুন আঙ্গীকে উদ্বোধন হওয়া ঐতিহ্যবাহী ড্রীম লাইন স্পেশাল পরিবহনে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বিকালে দাগনভূঞার দুধমুখা বাজারের ড্রীম লাইন কাউন্টারে এ হামলার ঘটনায় বাস মালিক কর্তৃপক্ষ স্টারলাইন গ্রুপের পক্ষ থেকে দাগনভূঞা থানায় একটি এজহার জমা দিয়েছেন। এজহারে স্থানীয় সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলাম ও পারভেজসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১৫/২০ জন অজ্ঞাত নামাকে আসামী করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে ড্রীমলাইন স্পেশাল পরিবহনটি নতুন আঙ্গীকে চালু করে স্টারলাইন গ্রুপ। ওইদিন বসুরহাট, দুধমুখা বাজার ও দাগনভূঞা বাজারের কাউন্টারের ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্টারলাইন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আলাউদ্দিন। উদ্বোধনের দিন সকাল ১১টায় দুধমুখা বাজারের কাউন্টারে এসে ম্যানেজার মহিউদ্দিনের নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগিরা। দু’দিনের মধ্যে দাবীকৃত চাঁদা না পেলে ওই রুটে ড্রীম লাইন স্পেশাল পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ করে সব কাউন্টার পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ সাইফুলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী ড্রীম লাইন স্পেশাল পরিবহনের দুধমুখা কাউন্টারে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। এ সময় পিস্তল রাইফেল লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র থাকায় আশপাশের লোকজন দিগবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা কাউন্টারের সামনে থাকা ড্রীম লাইন পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করে। তাদের বাধা দিতে চাইলে বাসের চালক জাহাঙ্গীর, সুপারভাইজার মিলন বাবু ও হেলপার কাঞ্চনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে বসুরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।

দীর্ঘ ২ ঘন্টাব্যাপী এ তান্ডবের সময় সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। এতে বসুরহাট সড়কে তীব্র যানজটে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসান ইমাম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পার্থপালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয়রা জানায়, হামলাকারী সাইফুল দীর্ঘদিন মাদক, অস্ত্রব্যবসাসহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে দাগনভূঞার দক্ষিনাঞ্চলে নিজস্ব একটি বাহিনী তৈরী করেছে। ওই বাহিনীর মাধ্যমে সে চাঁদাবাসী ও সন্ত্রাসসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তার বাহিনীর ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। তার নেতৃত্বে দাগনভূঞা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল ইসলাম চৌধুরীকে হত্যা করে ডোবায় লাশ ঘুমের অপচেষ্টা করা হয়েছে। ওই মামলায় সাইফুলসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন পুলিশ। সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে দাগনভূঞা শহরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বড় ধরনের আইনশৃংখলার অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্টারলাইন গ্রুপের জনসংযোগ কর্মকর্তা জসিম মাহমুদ জানান, মঙ্গলবার ড্রীমলাইনের কাউন্টারগুলো চালু করার পর থেকেই ওই এলাকার ত্রাস সাইফুল ও তার সহযোগিরা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না পেয়ে তারা বৃহস্পতিবার আমাদের কাউন্টার ও বাস ভাংচুর করেছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পিটিয়ে আহত করেছে। এ বিষয়ে হামলাকারী সন্ত্রাসী সাইফুল, পারভেজ, লিংকন, ইসমাইল, জহির, মোক্তার, তোহিদসহ ১৫/২০ জনের নামে কোম্পানীর পক্ষ থেকে দাগনভূঞা থানায় আমরা একটি এজহার দাখিল করেছি।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম জানান, ড্রীম লাইন স্পেশাল পরিবহন ও কাউন্টারে হামলার ঘটনায় স্টারলাইন গ্রুপের জনসংযোগ কর্মকর্তা থানায় একটি এজহার জমা দিয়েছেন। দাখিলকৃত এজহারের আলোকে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

(এনএকে/এএস/মার্চ ০৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test