E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আতঙ্কে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা

শৈলকূপায় ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

২০২২ এপ্রিল ০২ ১৮:৫৪:৩২
শৈলকূপায় ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের শৈলকূপা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকে প্রায়ই খসে পড়ছে পলেস্তারা, বেরিয়ে পড়েছে রড। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে ভবনটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাঠদান কাজ অব্যাহত আছে।পাঠদানের সময় বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ের উপর পড়ে। অতীতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদানের সময় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারী শিক্ষা উন্নয়নে ১৯৬২ সালে উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে শীর্ষ ফলাফল ধরে রেখেছে এই বিদ্যালয়টি। এই বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনেই দীর্ঘ কয়েকযুগ ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। বর্তমান বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২০০ এর বেশী।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে এখন রড বের হয়ে আছে। ক্লাস রুমের ইট সরে গিয়ে দেয়াল ফাঁকা হয়ে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে এক রুম হতে অন্য রুমে ক্যামেরাবন্ধি। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুয়ে পড়ে ভবনের ভেতরে। এতে করে যেমন শষ্কায় দিন পার করছে শিক্ষার্থীরা তেমনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় স্কুলের গুদাম ঘর ও টিনশেটে ক্লাশ চলছে , শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত পাঠদান কক্ষ নেই। পাঠদান কক্ষে বাশের সাথে ফ্যান ঝুলানো রয়েছে।জরাজীর্ণ ভবনটির পাশের ভবনে রয়েছে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়, শিক্ষক মিলনায়তন, রয়েছে লাইব্রেরি, বিজ্ঞান ল্যাবসহ স্পোর্টস অফিস ও বিজ্ঞান বিভাগের পাঠদান কক্ষ রয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনে রয়েছে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর বিভিন্ন পাঠদান কক্ষ।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি নাজনীন নাহার বলেন, বেশ কিছু বছর ধরে ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। যে কোন সময় পুরো ভবনটি ধসে পড়তে পারে এমন ভয়ের মধ্যেই থাকতে হয়।সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে শংকায় থাকি এছাড়াও আবাসন সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে।

দশম শ্রেণীর ছাত্রী বলেন , ছাদ থেকে কংক্রিট পড়ায় ক্লাস করতে তাদের ভয় লাগে।কোন সময় বুঝি মাথার উপর পড়বে পলেস্তারা।আমরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করি।মাঝে মধ্যে ছাদ থেকে চুন সুড়কি পড়ে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে । প্রতিষ্ঠার পর একটি দোতলা ও আরেকটি একতলার উপর সিনসেট ভবন নির্মাণ করা হয়।১৯৯৪ সালে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ একটি একতলা ভবণ নির্মাণ করে।এছাড়া আজও কোন সরকারী ভবণ নির্মাণ হয়নি। বর্তমান ভবনগুলোর অবস্থা একেবারেই নাজুক।বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে।যে কোন সময় ছাদ ধসে পড়ে বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার শামীম আহাম্মেদ খান জানান,নারী শিক্ষার উন্নয়নে এই বিদ্যালয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। জীবনের ঝুকি সেইসাথে আবাসন সংকট নিয়ে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাই এই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন এখন সময়ের দাবী।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ইকু শিকদার জনান, শিক্ষার্থী বিবেচনায় উপজেলার সব থেকে বড় বিদ্যালয় এটি হলেও এযাবতকালে অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি । জরাজীর্ণ ভবনের কারণে খুবই ঝুকির মধ্যে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ করে থাকে তাই যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। বর্তমান অতি স্বত্তর একটি ভবণ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে।

(একে/এসপি/এপ্রিল ০২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test