E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে দুর্ভোগ বাড়ার শঙ্কা

২০২২ এপ্রিল ২২ ১৭:৩২:০২
ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে দুর্ভোগ বাড়ার শঙ্কা

এ কে আজাদ ও মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : দেশের অন্যতম নৌরুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যাতায়াত করে। চলতি রমজান মাসের শুরু থেকে প্রায় প্রতিদিনই নদীপারের অপেক্ষায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এতে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এই দুর্ভোগ আসন্ন ঈদে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে ধারণা করছেন অনেকে।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, নদী পারাপার হতে আসা যানবাহনের তুলনায় এ রুটে ফেরির সংখ্যা কমে গেছে। এতে সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। পদ্মা নদী পারি দিতে ফেরির নাগাল পেতে মহাসড়কে প্রতিদিনই পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাট এলাকায় আটকে থাকতে হচ্ছে। এতে যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথের ফেরি বহরে মোট ১৯টি ফেরি রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২টি ফেরি পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে রয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিতে যানবাহন লোড-আনলোডের জন্য মোট ৭টি ফেরিঘাট পন্টুন আছে।

এর মধ্যে ১ নম্বর ঘাট ও ২ নম্বর ঘাট দীর্ঘ দুই বছর ধরে ভাঙনে বিলীন হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৬ নম্বর ফেরি ঘাটটিও কিছুদিন ধরে বিকল হয়ে বন্ধ রয়েছে। সচল থাকা ৩ নম্বর ঘাট ও ৪ নম্বর ঘাটেরও সবগুলো পকেটে ফেরি ভেড়ার উপযোগিতা নেই। তাই একটি করে পকেটে ফেরি লোড-আনলোড করা হয়।

৫ নম্বর ঘাট ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট সস্পূর্ণ সচল থাকলেও একটু বৃষ্টি হলেই কাদায় লোড আনলোড হতে সময় লাগে অনেক। এতেও তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। যার ফলে গত বুধবার কালবৈশাখী ঝড়ে দৌলতদিয়া ঘাটে তৈরি হয় যানবাহনের দীর্ঘ ৬ কিলোমিটারের সারি।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চ ঘাটে ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করে। এই লঞ্চ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০হাজার মানুষ পারাপার হয়। বর্তমানের তুলনায় ঈদে এই যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।

গত বর্ষা মৌসুমে লঞ্চঘাটের যাত্রীদের ওঠানামা করা জন্য কাঠের দুটি ব্রিজ নদী ভাঙনে নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘ ৮ মাসেও তা সংস্কার করা হয়নি।

বিআইডব্লিউটিএ ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজের নিচে জিওব্যাগ ফেলে সরু পথ তৈরি করে আপাতত যাত্রীদের লঞ্চ ঘাটে ওঠা-নামার ব্যবস্থা করেছে।

যেহেতু ঈদের সময় যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়, সেহেতু ওই সরু পথ দিয়ে যাত্রী উঠা ও নামায় চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। আর ওই সময় যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে পিচ্ছিল হয়ে লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের যাওয়া আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ছাড়া রোববার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন নির্বিঘ্নে পারাপারের লক্ষ্যে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ঈদের তিন দিন আগে ও তিন দিন পর পর্যন্ত এই রুটে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা অঞ্চলের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো: শাহ আলম বলেন, ‘দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটটির যাত্রীদের ওঠানামা করার কাঠের ব্রিজটি গত বছর নদী ভাঙনে নষ্ট হয়ে যায়। জরুরি কিছু কাজ করে আপাতত যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থা করেছি। দৌলতদিয়া ঘাট আধুনিকায়নের বড় প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ওই প্রকল্প থেকে স্থায়ীভাবে এখানে কাজ করব।’

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিম জানান, ঈদে যানবাহন পারাপারে গতি আনতে ২ নম্বর ফেরিঘাটটি সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেরামতে থাকা ফেরিগুলো হতে আরও দুটি ফেরি বেশি আনা হবে। এতে এই নৌরুটে ঈদে ২১টি ফেরি চলাচল করবে। এতে ফেরির টিপ সংখ্যা বাড়বে। এতে কম সময়ে আরও বেশি যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হবে।

(একেএমজি/এসপি/এপ্রিল ২২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test