E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌ-রুটে ২১টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ

২০১৪ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৮:২০:২৭
কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌ-রুটে ২১টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ

মাদারীপুর প্রতিনিধি : বড় ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে দুই দফায় ২১টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিটিএ। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ফেরিও পদ্মায় চলাচলের উপযোগী লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে বিআউডব্লিউটিএর কাছে দাবি জানিয়েছেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা।

আবার আকস্মিক লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় কতিপয় লঞ্চ মালিকরা চরম ক্ষব্ধ। সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএর জারিকৃত লঞ্চ চলাচলের উপর থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে কতিপয় লঞ্চ মালিকরা লঞ্চ ধর্মঘটের হুমকি দেন।

বিআইডব্লিউটিএর কাওড়াকান্দি ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইনস্পকেটর মো. সোলেমান জানান, এই রুটে ২১ টি লঞ্চ আপাতত চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

বিআইডটিএ এর সূত্র মতে, ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদী অশান্ত থাকে। এসময় পদ্মায় চলাচলের অনুপোযোগী লঞ্চ চলাচলে উপর কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশে এম.এল সিয়াম-সিজান, এমএল বোরহান কবির, এমএল শ্রেষ্ঠ, এমএল শিবচর, এমএল জহীর, এম এল হানজালা, প্রিন্স অব-পদ্মা, এমএল রাকিব, এমএল শাহীন সোনিয়া-১, এমএল রাজিব এক্সপ্রেস-২, এমএল খান এক্সপ্রেস, এমএল বিউটি অব শিলিম পুর, এমএল দুর-দূরান্ত, এমএল ফহিম-তামিম, এমএল আমিন উদ্দিন ঢালী, এমএল প্রিন্স অব-বিক্রমপুর এবং ২৬ সেপ্টেম্বর যে চারটি লঞ্চের উপর স্থগিতাদেশ আসে। সেগুলো হলো এমএল তানভির-৪, এমএল জুবলি, এমএল তায়েব, এবং এম এল তুষার খন্দকার।

অপরদিকে গত ৪ আগস্ট পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর থেকেই সরকারের সিদ্ধান্ত মতে মালিক পক্ষ পদ্মায় চলাচলের অনুপোযোগী ১২টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। এই নিয়ে বর্তমানে চলাচলকারী ৮৬টি লঞ্চের মধ্যে ৩৩টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গোপালগঞ্জের যাত্রী আবদুর রহমান বলেন, কাওড়াকান্দি- মাওয়া নৌরুটে এখনো অনেক লঞ্চ আছে যা নীতিমালা মেনে চলাচল করে না। সন্ধ্যার পর যাত্রীরা থাকে অন্ধকারে। লঞ্চে নাই কোন আলো বাতির ব্যবস্থা। তাই আসন্ন ঈদকে সামনে করে পদ্মায় চলাচলের অযোগ্য যে লঞ্চগুলোকে সরকার বন্ধ করেছে তা অবশ্যই ভাল করেছে। মানুষের জান, মালের রক্ষা করা যেমন সরকারের দায়িত্ব। তেমনি ভাল এবং পদ্মায় চলাচলের উপযোগী লঞ্চ চাল করানোও সরকারের দায়িত্ব। এখানের লঞ্চ মালিক সিন্ডেকেট খুবই শক্ত। নতুন কোন ভাল লঞ্চ ঢুকতে গেলে মালিকরা একযোগে ধর্মঘট ডেকে যাত্রীদের জিম্মি করে রাখে। যাত্রীরা যাতে এ ধরণের হয়রানির শিকার না হয় সে সরকারে কাছে দাবি জানান।

বরিশাল থেকে আসা যাত্রী সুলতানা আক্তার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সরকার এই রুটে আরো ভাল ফেরির ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ ঈদের সময় যানবাহন ও যাত্রী চাপ বেড়ে যায়। আর পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর থেকে যাত্রীরা লঞ্চের পরিবর্তে এমনিতেই ফেরিতে বেশি পার হচ্ছে। আর যে সকল লঞ্চ এখনো মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে চলছে সেই সকল লঞ্চগুলো অবশ্যই পদ্মায় চলাচল উপযোগী থাকতে হবে।

এম.ভি নারিশা এক্সপ্রেস বাবুল বেপারী জানান, গত দুই দিনে বিআইডব্লিউটিএ বিনা কারনে ২১ টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। গতমাসে লঞ্চ পিনাক ডুবে যাওয়ার পর এ লঞ্চগুলো নিয়য় মতো চলছিল। কর্তৃপক্ষের সব চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া হয়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পরও বিআইডব্লিইটএ এ নতুন করে একবারে ১৭টি এবং পরের দিন আবার ৪টি লঞ্চ চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিআইডব্লিটিএ যদি তাদের জারিকৃত লঞ্চ চলাচলের উপর থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করে। তবে লঞ্চ মালিকরা অতি শিঘ্রই লঞ্চ ধর্মঘট করতে বাধ্য হবে বলে তিনি জানান।


অপরদিকে পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর থেকে কাওড়াকান্দি- মাওয়া নৌরুটে চলাচল বন্ধ থাকা লঞ্চ ‘মেদিনী মন্ডলে’র স্বত্তাধিকারী মো সেলিম মিয়া বলেন, এখন পদ্মা নদী মোটামুটি শান্ত। তাই তার মালিকানাধীন লঞ্চসহ বন্ধ করে দেয়া সকল লঞ্চগুলো যেন সরকার ঈদ ও পুজা উপলক্ষে চলতে দেয়।

তিনি বলেন, বসিয়ে বসিয়ে কর্মচারীদের বেতন গুনতে হচ্ছে। তবে সরকার যে লঞ্চের আকার ছোট হওয়ার নদীতে চলতে দিচ্ছে। সেগুলোর জন্য একটা সময় দেয়া উচিত। সরকার নির্ধারিত সময় বেঁধে দিলে মালিকরা লঞ্চ ডকে নিয়ে আবার বড় আকারের অর্থাৎ পদ্মায় চলাচলের উপযোগী লঞ্চ তৈরি করতে পারবে বলে তিনি দাবি করেন।


(এএসএ/এএস/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test