E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইব্রাহিম প্রিন্টে শ্রমিক নির্যাতন, ম্যানেজারে উপর ক্ষিপ্ত শ্রমিকেরা

২০২২ এপ্রিল ২৮ ১৮:০৮:১৯
ইব্রাহিম প্রিন্টে শ্রমিক নির্যাতন, ম্যানেজারে উপর ক্ষিপ্ত শ্রমিকেরা

মোঃ শান্ত, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম  সুনামধন্য একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নাম হলো ইব্রাহিম নীট কমপ্লেক্স। সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে প্রায় দেড় যুগের ও বেশি সময় ধরে রপ্তানি করে চলছে তারা। বেশ কয়েক মাস ধরেই ইব্রাহিম নীট কমপ্লেক্সের নামে বদনাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। যার মধ্যে গত বছর শ্রমিকদের বেতন বোনাস নিয়ে হয়েছিলো শ্রমিক আন্দোলন। কিন্তু এইবার বিষয়টি ঠিক তার উল্টো। ইব্রাহিম প্রিন্ট ইউনিট-২ এর শ্রমিকদের উপর চলছে দ্বায়িত্বে থাকা ম্যানেজার কুদ্দুসের অত্যাচার। আর এই অত্যাচারে অতিষ্ঠ শ্রমিক ও এলাকার বাসিন্দারা। এ অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় শ্রমিকরা। শ্রমিকরা বলছেন প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও সম্মানের কথা ভেবে আমরা থানায় কোন অভিযোগ করিনাই। শুধু মাত্র অফিসের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। 

গত ২৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) কাজে ভুল হওয়ার কারনে ম্যানেজার কুদ্দুস শ্রমিক আঃ রাজ্জাককে পাইপ দিয়ে এলো পাথারি মেরে আহত করে মার খেয়ে ইউনিট থেকে বের হয়ে যায় তিনি। তার পরে ২৭ এপ্রিল বুধবার বিকালে একজন প্রিন্টিং হেলপার নাম উকিল তার কাজ সঠিক ভাবে করার পরও অযথা গালাগালি করে বের করে দেয়। এর কিছু দিন আগে মেহেদী নামের এক শ্রমিকে প্রিন্টের ফ্রেম ছুড়ে মারে। এছাড়া প্রায় সময় আরো অন্যান্য শ্রমিকদের শারিরীক নির্যাতন ও মহিলাদের আজেবাজে ভাষায় গালাগালির সততা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ম্যানেজার কুদ্দুসের সাথে কথা বললে সে মারধরের কথা শিকার করে বলেন, হ্যা আমি মেরেছি। ওরা কাজ বুঝে-না তাই মেরেছি। রাজ্জাককে মেরেছি কারন ওর জন্য আমার প্রোডাকশন ২ ঘন্টা বন্ধ ছিলো। ওকে মারার কারন হলো ও আমার মাল নষ্ট করেছে। এবং আমাকে মারার জন্য তাক করে ছিলো। কিন্তু অন্যান্য শ্রমিকদের মারধর করার কথা অস্বীকার করেন।

কিন্তু শ্রমিকরা বলছে ২ ঘন্টা প্রোডাকশন বন্ধ থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। বরং ম্যানেজার কুদ্দুস যখন রাজ্জাককে মারছিলো তখন কাজ বন্ধ ছিলো এছাড়া লাইন এক মিনিটের জন্য বন্ধ থাকার প্রশ্নই আসে না। ম্যানেজার কুদ্দুস সবার সাথেই খুব খারাপ আচরণ করে ও অযথাই মারধর করে। শ্রমিকরা আরো জানান ম্যানেজার কুদ্দুস সারাক্ষণ মিথ্যা কথা বলে।

ভুক্তভোগী শ্রমিক আঃ রাজ্জাক বলেন, আমি প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় ধরে ইব্রাহিম প্রিন্টে কাজ করছি। কাজ করলে তো সমস্যা হবেই আর সমস্যা তো আমাদেরই সমাধান করতে হয়। যদি আমরা সমাধান করতে না পারি বা বড় কোন সমস্যা হলে ম্যানেজার সহ স্যারদের জানাই। এরকম ওই দিন প্রিন্টের ফ্রেমে সামান্য সমস্যা হয়েছিলে তা ঠিক করতাছিলাম আর ঠিক তখনই হটাৎ করে এসে আমাকে পাইপ দিয়ে অযথা মারধর করে ও গালাগালি করে তারপর আমি মার থেকে বাচার জন্য দৌড়ে চলে আসি।

ভুক্তভোগী মেহেদী জানান, আমাকে যে দিন মারধর করে সেই দিন ফ্রেমে সমস্যা হওয়ার কারনে ২ পিছ মাল সমস্যা হয় আর সে জন্য আমাকে ফ্রেম ছুড়ে মারে তা আমার হাত ও বুকে লাগে। আর ইনচার্জকে ডেকে এনে দেখায় আমি নাকি ৪০০ পিছ মাল নষ্ট করছি। তাই মার খাওনের ভয়ে আমি কিছু দিন দরে অফিসেই আসি না।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা বলছেন, কাজের ক্ষেত্রে তো ভুল হতেই পারে তাই বলে ম্যানেজার যেভাবে শ্রমিকদের মারধর করে এইভাবে কুত্তাকেও কেউ মারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ম্যানেজার কুদ্দুস মহিলা শ্রমিকদের মাঝে মাঝে হুমকি দিয়ে বলেন শুধু তোদের মারি না বলে আমাকে তোরা ভয় পাশ না। তারা আরো বলেন, আমাদের অফিসের মালিক পক্ষ খুবই ভালো ও শ্রমিক বান্ধব কিন্তু ম্যানেজার কুদ্দুসের মতো কর্মকর্তাদের জন্য এমন সুনামধন্য শিল্প-প্রতিষ্ঠানের বদনাম ছড়িয়ে পড়ে।

এবিষয়টি এলাকার মানুষ ও গণমাধ্যম কর্মীরা যেনে যাওয়ায় রাত ১২টা বাজে প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ম্যানেজার ও ভুক্তভোগী শ্রমিকদের অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে রাতের আধারেই মিমাংসা করে দেয়। কিন্তু এখন প্রশ্ন আর কত শ্রমিক এইরকম অত্যাচারের শিকার হবে আর উর্ধ্বতন কর্মকতারা আর কতো সমাধান করবে?

(এস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test