E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে বগুড়ায় আলোচনা সভা 

২০২২ মে ১৮ ১৫:৫৭:২৪
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে বগুড়ায় আলোচনা সভা 

এটিএম রাশেদুল ইসলাম, বগুড়া : একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে শহীদজননী জাহানারা ইমাম-এর ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে "বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও জাহানারা ইমামের আন্দোলন" শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকাল পাঁচটায় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে উদীচী কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষক সাজাহান শাকিদার।

প্রধান আলোচক তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামে শুধু একটি দেশ উপহার দেননি, সেইসঙ্গে দিয়েছিলেন বাহাত্তরের সংবিধানের মতো শ্রেষ্ঠ সংবিধান। যে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন স্পষ্ট। ১৯৭৫ পরবর্তি সময়ে সবকিছু উলোটপালোট করে দেশটাকে আবার পাকিস্তানি ধারায় ফেরানোর চেষ্টা হয়েছে। এখনো বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনকে মন থেকে ধারণ করতে দেখা যায় না, যা দেখা যায় তা ফায়দা হাসিল। বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করি আমরা, শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে হৃদয়ে ধারণ করি বলেই ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করিনা। জয়বাংলা শ্লোগানের প্রথম ব্যবহার করেছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং তা কাজী নজরুলের একটি লেখনী হতে। জয়বাংলা কথাটি বঙ্গবন্ধু কেন ব্যবহার করলেন তারও ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন চমৎকার। বর্তমানে যারা মুখে বঙ্গবন্ধুর কথা বলে তারা ইতিহাস জানার চেষ্টা করেনা। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ ও দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে তিনি সবসময় পদপ্রর্শক।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে জাহানারা ইমামের আন্দোলন একই ধারায় প্রবাহিত। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন এবং সেসময় দশ হাজার অধিক যুদ্ধাপরাধী কারাগারে ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া সরকার সকল যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দিয়েছিল এবং তথাকথিত বহুদলীয় রাজনীতির নামে যুদ্ধাপরাধীদের নিষিদ্ধ দল জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনেছিল। এসব কুকর্মের জন্য ইতিহাস জিয়াকে ক্ষমা করবে না। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনকে ধারণ করে শহীদজননী জাহারা ইমামের সাহসী নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে যে আন্দোলন কর্মসূচি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত। তাঁর আন্দোলন ও প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের ধারাবাহিক কর্মসূচির জন্য শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে। অন্যথায় কোন রাজনৈতিক সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঝুঁকি নিতো না। ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গণআদালতে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচার সাহসী নেতৃত্বের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।গণআদালতে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কারণে খালেদা জিয়া সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে অ-জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেন জাহানারা ইমাম সহ ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিরুদ্ধে। দেশের মানুষকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে একতাবদ্ধ করেছিলেন শহীদজননী জাহানারা ইমাম।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মির্জা আহসানুল হক দুলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য রাশেদ, এরপর বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক জোট বগুড়া জেলা সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না, নির্মূল কমিটির জেলা নেতা ও জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসের শিকার বেনজির আহমেদ, সাংস্কৃতিক জোট নেতা জিয়াউল হক বাবলা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বগুড়া জেলার সভাপতি মিল্লাত, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল খালেক। এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শহর ও আজিজুল হক কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দসহ বগুড়ার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।

(এআর/এসপি/মে ১৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test