E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি দেড় যুগেও

২০১৪ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৩:২৯:২৯
খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি দেড় যুগেও

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে নির্মাণাধীন খানজাহান আলী বিমানবন্দরের কাজ দেড় যুগেও শেষ হয়নি। দেখা যায় নাসরকারপ্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় বিমানবন্দরে নির্মাণ কাজের জন্য রাখা কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতিও রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে বাগেরহাট সফরকালে খানজাহান বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ আবার শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেন। ওই প্রতিশ্রুতির ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন কাজ এখনো শুরু হয়নি।

বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে একটি বিমানবন্দর নির্মাণের দাবি ছিল অর্ধশতাব্দী আগ থেকেই। আর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬১ সালে খুলনা শহরের অদূরে বিল ডাকাতিয়ায় বিমানবন্দর নির্মাণে জমি বরাদ্দ করা হয়। ১৯৬৮ সালে প্রকল্পটি বাতিল করে তেলিগাতিতে জমি অধিগ্রহণ করা হয়।

তাছাড়া ৮০র দশকে বিমানবন্দরের জন্য বাগেরহাট জেলার কাটাখালিতে পুনরায় স্থান নির্বাচন করা হয়। পূর্বের মতো এ প্রকল্পটিও রয়ে যায় অন্ধকারে। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএসএম মোস্তাফিজুর রহমানের একক প্রচেষ্টায় বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লায় মংলা-মাওয়া-ঢাকা মহাসড়কের পাশে হযরত খানজাহান আলীর (র:) নামে বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অধিগ্রহণ করা হয় ৯৪ একর জমি। বাগেরহাট খানজাহান বিমানবন্দরের অধিগ্রহণকৃত ৯৪ একর জমি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

১৯৯৭ সালে শুরু হয় বিমানবন্দরের মাটি ভরাটের কাজ। প্রায় ২৪ কোটি টাকায় আংশিক মাটি ভরাট করা ছাড়া তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খানজাহান বিমানবন্দর নির্মাণে আর কিছুই তখন করা হয়নি।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে আবার শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ। একপর্যায়ে অর্থ বরাদ্দের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮ বছরে আর কোনো কাজ হয়নি খানজাহান আলী বিমানবন্দর প্রকল্প এলাকায়।

এ অবস্থায় ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান রামপালের ফয়লায় বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন। তখন তিনি এ বিমানবন্দর নির্মাণের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশও দেন।

এরপর বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দলকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ দেয়। গত বছরের ২৬ নভেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে কুয়েট তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে বিমানবন্দর নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে দ্রুত বিমানবন্দর নির্মাণে প্রথম ধাপে ছোট বিমান ওঠানামার জন্য ২৫০ কোটি টাকা ও দ্বিতীয় ধাপে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাবনা দুটির ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি নেই বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের। চলতি অর্থবছরে বাজেটে বাগেরহাটে নির্মাণাধীন খানজাহান আলী বিমানবন্দর প্রকল্পের জন্য একটি টাকাও বরাদ্দ রাখা হয়নি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দেড় যুগ পেরিয়ে গেলেও অর্ধেক মাটি ভরাট ছাড়া রানওয়ে ও অবকাঠামো নির্মাণের কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দরের জন্য মাটি ভরাট করা সেই উঁচু জায়গা পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ফাঁকা মাঠে চরে বেড়াচ্ছে অবাধে গরু-ছাগল। বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে যাচ্ছে ভরাটকৃত জমির।

বাগেরহাটে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কোন অফিস না থাকায় কেউ খানজাহান আলী বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জানতে পারছেন না এলাকাবাসী। পিছিয়ে পড়া মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ কাজের সমাপ্তি দেখতে চায় দক্ষিণাঞ্চবাসী ।

(একে/এনডি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test