E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, বিল বকেয়া ১৭ লাখ

২০২২ মে ২৪ ২০:৫১:২৮
বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, বিল বকেয়া ১৭ লাখ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সোমবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড, বাগেরহাট। বাগেরহাট পৌরসভার ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৬ টাকা বকেয়া থাকায় সোমবার (২৩ মে) বিকেলে বাস টার্মিনালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বাস শ্রমিক, কর্মচারী ও যাত্রীরা।

২০১৬ সাল থেকে বাগেরহাট পৌরসভার মালিকানাধীন জেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বাস টার্মিনালের বিদ্যুৎবিল বকেয়া রয়েছে জানিয়েছেন ওজোপাডিকো। অন্যদিকে বাগেরহাট বাস মালিক সমিতি বলছেন বিদ্যুৎ বিল বাবদ নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছেন পৌরসভাকে। বাগেরহাট পৌরসভা বলছে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের জন্য চেষ্টা করা হবে।

বাগেরহাট ওজোপাডিকো জানায়, বাগেরহাট কেনদ্রীয় বাস টার্মিনালের পক্ষে মেয়র বাগেরহাট পৌরসভা নামের এই হিসেবে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৬ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। শুধু বাগেরহাট বাস টার্মিনাল নয়, বাগেরহাট পৌরভবন, স্টীট লাইটসহ বিভিন্ন ধরণের ১৮টি হিসেবে বাগেরহাট পৌরসভার কাছে আরও প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া টাকা আদায় না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন।

বাস শ্রমিক রানা শেখ বলেন, বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডে একদিন বাস রাখলে ঢাকার পরিবহনের জন্য ৮০ টাকা এবং লোকাল পরিবহনের জন্য ৫০ টাকা দিতে হয়। এখানের টয়েলেট গুলোও আমাদের টাকা দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। তাহলে কেন টাকার জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকবে। আসলে আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, আমাদের টাকার কোন দাম নেই।

শ্রমিক জামাল শেখ বলেন, রাত ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের বাস ছাড়ে বাগেরহাট স্ট্যান্ড থেকে। দুদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে, পুন সংযোগ স্থাপনের দাবি জানান তারা।

বাগেরহাট বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকি বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বিদ্যুৎ বিলের জন্য প্রতিমাসে পৌরসভার মার্কেটিং অফিসারের কাছে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হত। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে এই টাকা নিয়মিত দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় কয়েক হাজার বাস শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভোগান্তি লাঘবে অতিদ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

বাগেরহাট পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, বাগেরহাট বাস টার্মিনালে যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায় সে বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলোচনা করা হবে। এছাড়া বাস টার্মিনালে থেকে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল বাবদ টাকা দেয় বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য হিসেবে যে সাড়ে চার কোটি টাকা রয়েছে ওই টাকার বিপরীতে মাঝে মাঝে কিছু টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া জুন মাসের শেষে রাজস্ব খাতের হিসেব করে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানান তিনি।

ওজোপাডিকো, বাগেরহাটের সহকারি প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহকের কাছে ওজোপাডিকোর প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বাকি রয়েছে। বকেয়া গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অনেকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং কারও কারও বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের বকেয়ার পরিমান অনেক বেশি তাদের বিষয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কিমিটির সভায়ও বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় করতে পারি।

২০০২ সালের অক্টোবরে বাগেরহাট জেলা শহরের গোবরদিয়া মৌজায় বাস টার্মিনাল স্থাপন করে পৌরসভা। বাগেরহাট পৌরসভা প্রতিবছর বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দুটি পাবলিক টয়েলেট ইজারা দিয়ে বিপুল পরিমান টাকা আয় করেন। বাস টার্মিনাল সংলগ্ন অর্ধশতাধিক দোকান ভাড়া বাবদও টাকা পায় বাগেরহাট পৌরসভা।

(এসএকে/এএস/মে ২৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test