E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফুলবাড়ীতে চাল-আটা ও ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখি

২০২২ মে ৩০ ১৬:৪৪:৫৭
ফুলবাড়ীতে চাল-আটা ও ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখি

ফুলবাড়ী প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্যান্য নিত্যপণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে চাল কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা, আটা কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা এবং হালিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বৃদ্ধি যেয়েছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষের এসব নিত্যপণ্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

ব্যবসায়িরা বলছেন, বাজারে ধান ও গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাল ও আটার দামও বেড়েছে। একইভাবে পশুখাদ্য পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে খামারীরা উৎপাদিত ডিমের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে বাজারে এসব খাদ্যপণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফুলবাড়ী বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা শ্রীকান্ত রায় ও আকবর আলী বলেন, ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণ দেখিয়ে মিল মালিক ও পাইকার ব্যবসায়ীরা পাইকারী চালের দাম বেশি ধরার কারণে খুচরা বাজারেও কেজিতে দাম বেড়েছে প্রকার ভেদে ৩ থেকে ৫ টাকা।

ধান ব্যবসায়ী লিটন প্রসাদ বলেন, বর্তমানে প্রতিমণ মিনিকেট ধান বেচাকেনা হচ্ছে দুই হাজার ৪৮০ টাকা দরে। যা গত এক সপ্তাহ আগেও একই ধানের দাম ছিল দুই হাজার ৩২০ টাকা। মোটা হাইব্রিড ৭৫০ টাকা, চিকন (সরু) ব্রি-২৮ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা মণদরে। প্রত্যেকটি ধানের মূল্য মণ প্রতি দেড় থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

সরেজমিনে ফুলবাড়ী উপজেলার হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকার ভেদে সকল প্রকার চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা। নি¤œআয়ের মানুষের পছন্দের গুটি স্বর্ণা লোকাল হিসেবে পরিচিত চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা এবং অটো চাল ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৫৬ থেকে বেড়ে ৬০-৬২ টাকা, বিআর-২৮ জাতের চাল ৪৩ থেকে বেড়ে ৪৭-৪৮ টাকা, স্বর্ণা-৫ ৩৭ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা এবং নাজিরশাল চা কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে।

একইভাবে খোলা আটা ৩৩ থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা এবং বিভিন্ন কোম্পানীর এক কেজি ওজনের আটা ৩৬ টাকা থেকে বেড়ে ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম পাইকারী ও খুচরা বাজারে বেড়েছে হালিতে (৪টির দাম) ৮ থেকে ১০ টাকা। পাইকারী এক সপ্তাহ আগে ফার্মের মুরগির লাল ডিম ৩০টির এক পাতা বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা দরে। সাদা ২১০ এবং দেশি হাঁস ও মুরগির ডিম ৪৫০ টাকা দরে। একই ডিম সপ্তাহের ব্যবধানে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে মুরগির লাল ডিম ৩০০ টাকা, সাদা ২৫৫ টাকা এবং দেশি হাঁস ও মুরগির ৫১০ টাকা দরে। তবে খুচরা বাজারে একই ডিম এলাকা ভেদে ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দরে বেচাবিক্রি হচ্ছে।

ফুলবাড়ী বাজারের পাইকারী ডিম ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন ও সুমন সাহা বলেন, হাঁস ও মুরগির খাদ্যের দাম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খামারীরা বাধ্য হয়ে তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ কারণে বেশি দামে কেনার কারণে পাইকারী ও খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

স্থানীয় পোল্ট্রি খামারী শাহীনুর ইসলাম বলেন, বাজারে পোল্ট্রি ফিডের দাম যেভাবে বেড়ে গেছে তাতে করে পোল্ট্রি খামার টিকে রাখা দায় হয়ে পড়েছে। অনেকেই খামার উঠে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ফুলবাড়ীতে পোল্ট্রি খামারের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।

কাঁটাবাড়ী গ্রামের রাহাত গাজী বলেন, বাজার করতে গেলেই বাজারে নিত্যদিন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। এতে করে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতা বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্য। জীবন ধারণ করা দায় হয়ে পড়ছে।

উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বোরো ধানের চাষাবাদ কম হয়েছে। ঝড়োবৃষ্টিসহ বন্যায় ধান নষ্ট হয়েছে। আবার অটোরাইস মিল মালিকরা তাদের মিল পরিচালনার জন্য ধান মজুত করেছেন। সব মিলিয়ে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মুরগি খামারীদের টিকিয়ে রাখতে সরকার নানামুখি প্রকল্প নিচ্ছে। যেগুলো খামারীদের কল্যাণে আসবে।

(এম/এসপি/মে ৩০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test