E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

কর্ণফুলী উপজেলা আ.লীগ ‘তৃণমূল চায় ডায়নামিক নেতা’

২০২২ জুন ২৬ ১৬:৪০:১০
কর্ণফুলী উপজেলা আ.লীগ ‘তৃণমূল চায় ডায়নামিক নেতা’

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : দক্ষিণ চট্টগ্রামে রাজনীতি সচেতন একটি উপজেলার নাম ‘কর্ণফুলী’। এখানে দিনের শুরু আর রাত গভীরেও চলে রাজনীতির আলাপচারিতা। তৃণমূলের নেতারা আগামী সম্মেলনে এ উপজেলায় গ্রহণযোগ্য কাউকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক পদে হিসেবে দেখতে চান। সব মিলিয়ে পরীক্ষিত ডায়নামিক কাউকে চাইছে ।

ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতাকর্মীরা জানান, উপজেলার বাঘা বাঘা বিএনপি নেতাদের মোকাবিলা করে আগামী রাজনীতিতে টিকিয়ে থাকতে হলে এবং ভেঙ্গে পড়া সাংগঠনিক কাঠামোকে দাঁড় করাতে চাইলে তৃণমূল পর্যায় থেকে ওঠে আসা নেতাদের কোন বিকল্প নেই। কারণ জনতার আদালতে নানাভাবে পরীক্ষিত নেতারাই দলের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ায়। আর হাইব্রিড কিংবা অনুপ্রবেশকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকেন। সে প্রমাণও এ উপজেলায় ভুরিভুরি। কিন্তু কেন কী কারণে ঘুরে ফিরে কর্ণফুলীতে এবার নতুন কাউকে সভাপতি-সম্পাদক হিসেবে দেখতে চায় তৃণমূল? এর কারণও নাকি অনেক। তৃণমূলের ভাবনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাঁরা গতি ফেরাতে চান দলে।

তাঁদের টার্গেট আগামীতে বিএনপি নেতাদের সাথে কি করে লড়াই করে রাজপথে টিকে থাকতে হবে। কেননা দলের দুর্দিনে সুদিনের মাছিরা রাজপথে নামতে চান না। শুধু একাধিক দলীয় পদ-পদবী নিয়ে বিভোর থাকেন। যদিও কর্ণফুলীতে রাজপথের বহু লড়াকু সৈনিক রয়েছে। যারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ থেকে রাজনীতি করতে করতে আওয়ামী লীগে আসীন। কিন্তু টপসিটে এখনো বসতে পারেননি। এসব ত্যাগী নেতাকর্মীরাই মূলত দলের প্রাণ। কর্ণফুলী তৃণমূল এসব নেতাদের স্যালুট জানাতে চায় এই বৈশিষ্টের কারণেই। কারণ ওরাই দলকে টেনে তুলবেন।

জুলাই মাসে হতে পারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ইতিমধ্যে তৃণমূল নেতাদের ভাবনায় যাদের নাম পুরো উপজেলায় আলোচনায় আসছে, তাঁরা হলেন-কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি, দক্ষিণ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ দিদারুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির আহমদ ও ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন হায়দারও। তবে নেতাদের অতি কৌশলী মনোভাবের কারণে কে সভাপতি পদে আর কে সম্পাদক পদে লড়তে চান তা এখনই বলা মুশকিল। তবে ঘুরে ফিরে এদের মধ্যে থেকে সভাপতি-সম্পাদক পদে চমক আসতে পারে।

তবে বিছিন্ন ভাবনায় তৃণমূল ভাবছেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কে সভাপতি করলে তৃণমূল প্রাণ পাবে। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ কে দেখতে চেয়েছেন অনেকেই। যেহেতু বিদ্রোহীদের দলের সভাপতি বা মূল পদে বসানোর সুযোগ নেই। আবার অনেকেই বলছেন, ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ কে সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দিদারুল আলমকে সম্পাদক করা হলে দু’গ্রুপের সমন্বয় ঘটবে। পাঁচ ইউনিয়নের তৃণমূলের ভাবনা মূলত কয়েকজনকে নিয়ে। একটা গ্রুপ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির আহমদ কে নিয়ে চিন্তা করলেও অন্যান্য ইউনিয়নে তাঁর নিজস্ব বলয় না থাকায় তেমন অবস্থান নেই। তবে তাঁকে সাঃ সম্পাদক করা হলে তৃণমূলের আপত্তিও থাকবে না। কারণ নিজস্ব বলয় না থাকলেও তৃণমূলের কাছে তিনি ক্লীন ইমেজদার। এর চেয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। কারণ তাঁর বিচক্ষণতা তৃণমূলকে মুগ্ধ করেছে বারবার। দীর্ঘদিন ধরে অনেক নেতা আবার মূল পদে আসীন থাকলেও সুপার ফ্লপ বলা যায়। কারণ তাঁদের বাকশক্তি নেই। সাদাকে সাদা আর কালো কে কালো বলার সাহস দেখতে পায়নি তৃণমূল। তাই তাঁদের নিয়ে চিন্তা করছে না তৃণমূল। অনেকে পরিষদ চালানোতে দক্ষ হলেও দলের জন্য ফিট নয়। এদের নিয়ে আগামীতে জাতীয় নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়া কিংবা নৌকাকে বিজয় করা কঠিন হয়ে পড়বে। উপজেলা আ.লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘বর্তমান কমিটি তৃণমূলে কোন কমিটি দিতে পারেনি। কর্মী সৃষ্টি করতে পারেনি। এজন্য নতুন কাউকে নিয়ে চিন্তা করছে তৃণমূল।’

বড়উঠান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মন্নান খাঁন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ওয়ার্ড ভিত্তিক ৩/৪টি মতবিনিময় সভা করেছি। তাঁতে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে ওঠে আসা কেউ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক হউক। আমরা হাইব্রিড কাউকে চাই না। দলের জন্য অতীতে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এমন কাউকে দরকার।’

উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ দিদারুল আলম বলেন, ‘আমি কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ছাড়াও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের তৃণমূল নেতা-কর্মীর কাছে অনেক ঋণি। তাদের ভালোবাসায় আজ আমি এত দুর আসতে পেরেছি। রাজনীতি করতে হলে নেতাকর্মীদের ভালোবাসতে হবে, সৎ থাকতে হবে, ব্যক্তি স্বার্থ ভুলে সাধারণ মানুষকে ভালোবাসতে হবে, তবেই ভালোবাসা বা সফলতা আসবে। উপজেলার সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য আমার দরজা সর্বদাই খোলা রেখেছি এবং যতদিন বেঁচে থাকবো আমার দরজা খোলা থাকবে (ইনশাল্লাহ)।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি-সম্পাদক কোন ধরনের মন্তব্য করতে নারাজ হলেও জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘তৃণমূল থেকে উঠে আসাদের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব আসলে দলের জন্য কল্যাণ হবে বলে মনে করি। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও তৃণমূল থেকে উঠে আসা দলের প্রতি শতভাগ আস্থাশীলদের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব আশা করেন।’

(জেজে/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test